হযরত আবু বকর শিবলী (রঃ) – পর্ব ৪

হযরত আবু বকর শিবলী (রঃ) – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

একদিন হাতে মশাল নিয়ে চেঁচাতে লাগলেন, আমি মক্কা গিয়ে কাবা ঘরে আগুন লাগিয়ে দেব। কাবা ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেলে কাবা ঘরের বদলে তার মালিক আল্লাহ্‌র প্রতি অনুরক্ত হবে। আর একদিন একখণ্ড কাঠের ডগায় আগুন ধরিয়ে নিয়ে বলতে লাগলেন, জান্নাত-জাহান্নাম পোড়াতে চলেছি। তাহলে মানুষ জান্নাতের লোভে বা জাহান্নামের ভয়ে উপাসনা করা থেকে বিরত হয়ে নিঃস্বার্থভাবে উপাসনা করবে।

একবার এক ঘুঘু পাখির সঙ্গে তাঁর গভীর সংযোগ সৃষ্টি হয়। গাছের ডালে বসে পাখিটি কু কু বলে ডাকছিল। ঐ ডাক শুনে, ভাবাবেগে তিনিও হু হু শব্দ করে ডাকতে শুরু করেন। এক সঙ্গে মানুষ আর পাখির একতান চলে বেশ কয়েকটি দিন ও রাত। যতদিন তিনি গাছের তলায় ছিলেন, পাখিটিও ততদিন গাছের ডালে ছিল। হযরত শিবলী (রঃ) যতক্ষণ না ডাকাডাকি বন্ধ করতেন, পাখিটিও তার ডাক বন্ধ করত না।

কয়েকটি ছেলে পাথর ছুড়ে তাঁর পায়ের রক্ত বের করে দেয়। ঐ রক্তের ফোটায় মাটির ওপর এক একটি আল্লাহ্‌ শব্দ অঙ্কিত হয়।

এক ঈদের দিনে তাঁর পরনে কালো পোশাক দেখে লোকে কারণ জিজ্ঞেস করে। তিনি বলেন, সমগ্র সৃষ্টি আজ আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে। ডেকে আনছে ধ্বংস। তাই সৃষ্টির প্রতি এটি শোক প্রকাশের প্রতীক।

প্রথম প্রথম তিনি কালো পোশাকই পড়তেন। কিন্তু তওবা করার পর অন্য রঙের পোশাক পড়তে শুরু করেন। একদিন কালো পোশাক পরে পোশাককে সম্বোধন করে বলেন, তোমার এই কালো রং আমাকে অন্ধকারের এমন গুহায় পৌঁছে দিয়েছে যে, আমি তার মধ্যে আত্ম-সমাহিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি।

শোনা যায়, যিকিরের প্রথম পর্যায়ে তিনি চোখে লবন ছিটিয়ে দিতেন যাতে ঘুম না আসে। এভাবে সাত সের লবন খরচ হয়। তিনি বলতেন, আল্লাহ্‌ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন, যে ব্যক্তি নিদ্রা যায়, সে অলস এবং পর্দার আড়ালে পড়ে থাকে।

সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া

হযরত আবু বকর শিবলী (রঃ) – পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।