হযরত আবু বকর (রাঃ) যুদ্ধে অংশগ্রহণ – বদর যুদ্ধ
বদর যুদ্ধ মুসলমান এবং কাফিরদের মাঝে প্রথম সংঘটিত হয় হিজরী দ্বিতীয় সনের রমযান মাসে। এ যুদ্ধে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) মাত্র ৩১৩ জন সাহাবীকে নয়ে অংশগ্রহণ করলেন।
ইসলামের প্রথম সিদ্ধান্তকারী লড়াই অনুষ্ঠিত হয় বদরের প্রান্তরে। আল্লাহর নবী একটি ছায়া-শীতল স্থানে তাঁর স্বল্পসংখ্যক অনুচরসহ উপস্থিত থেকে এ যুদ্ধ পরিচালনা করেন। আবু বকর (রাঃ) অত্যন্ত বীরত্ব সহকারে তরবারি হাতে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কাফির-মুশরিকেরা বারবার চারদিক থেকে ঘিরে রাসূলুল্লাহর দিকে এগিয়ে আসছিল। কিন্তু হযরত আবু বকর (রাঃ) প্রতিবারই তাঁদের পেছনে হটিয়ে দেন।
হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কাফিরদের বিপুল জনসংখ্যা দেখে চিন্তিত হলেন এবং দোয়া করলেন, “হে আল্লাহ্! আমাকে অসহায় ও মিত্রহীন অবস্থায় পরিত্যাগ কর না! তোমার প্রতিজ্ঞা পূরণ কর। মালিক তুমি কি তোমার বন্দেগী বন্ধ হয়ে যাওয়া পছন্দ কর?”
হযরত রাসূলে কারীম (সাঃ) এর দুর্ভাবনা ও মনোকষ্টের সময় তাঁরই চিরসাথী ও সুখ-দুখের অংশীদার হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) তরবারি হাতে পাহারা দিতেন এবং তাঁর পবিত্র মুখ থেকে সান্ত্বনা ও আশার বাণী উচ্চারিত হত।
ভীষণ যুদ্ধের সময়ও হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সেবা-যত্নের কোন ত্রুটি করেননি। একবার হুজুর (সাঃ) – এর পবিত্র কাঁধ থেকে চাদর পড়ে গেলে হযরত আবু বকর (রাঃ) হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে চাদরটি উঠিয়ে দিলেন এবং দ্রুত গতিতে যোদ্ধাদের সারিতে পুনরায় শামিল হয়ে গেলেন। আর এ ধরনের নিষ্ঠা, উৎসাহ এবং রাসূল (সাঃ) এর প্রতি প্রাণঢালা মহব্বতের কারণেই অল্পসংখ্যক মুসলমান বিপুল সংখ্যক কাফিরদের উপর বিজয়ী হন।
এ যুদ্ধে গনীমতের সম্পদ ছাড়াও সত্তর জন কাফির যুদ্ধবন্দী হিসেবে ধরা পড়ে। হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) বিশিষ্ট সাহাবাগণের সাথে যুদ্ধবন্দীদের সম্পর্কে পরামর্শ করেন। হযরত ওমর (রাঃ) তাদের সকলকে হত্যা করার পক্ষে মতামত প্রকাশ করেন। হযরত আবু বকর (রাঃ) বলেন, “এরা আমাদের ভাই, তাদের প্রতি দয়া করাই উত্তম। এজন্য মুক্তিপণ নিয়ে এদের ছেড়ে দেয়াই সঙ্গত মনে করি।” হুজুর (সাঃ), হযরত আবু বকর (রাঃ) – এর অভিমতই পছন্দ করেন।