হযরত আবু আবদুল্লাহ জাল্লা (রঃ) – পর্ব ১
একদিন একটি ছেলে তাঁর মা-বাবাকে বললেন, আমাকে আল্লাহর হাতে সঁপে দিন। আমি প্রাণভরে তাঁর এবাদত করি। তাঁরা সানন্দে সম্মতি দিলেন। তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ হোক এ আশীর্বাদও করলেন। ছেলেটি আল্লাহর পথে গৃহত্যাগী হলেন। আর জ্ঞানের পিপাসা নিয়ে ঘুরে বেড়ালেন সে যুগের সাধক-দরবেশগণের দরবারে। আল্লাহর রহমতে তাঁর জ্ঞানের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হল।
তারপর একদিন হঠাৎ মা-বাবার কথা মনে হতে তিনি ফিরে এলেন মাতৃভূমিতে। পৌঁছালেন বাড়ীর দরজায়। দরজা বন্ধ। তিনি ডাক দিলেন। দিলেন আপন পরিচয়। কিন্তু দরজা খুলল না। মা-বাবা বলে দিলেন। যাকে আমরা আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছি। তাকে তো আর ফিরিয়ে নিতে পারি না। তুমি তাঁর কাছেই ফিরে যাও।
তো তিনি ফিরে এলেন অপার্থিব আলোকিত জীবনে। এই মহাত্যাগী তরুণ তাপসই পরবর্তীকালের বিখ্যাত অধ্যাত্মজ্ঞানী হযরত আবু আবদুল্লাহ জাল্লা (রঃ) নামে খ্যাত হন। সুযোগ্য পিতামাতার সুযোগ্য সন্তান ক্রমশঃ যুগপুরুষ হয়ে উঠলেন। হযরত আবু তরাব (রঃ), হযরত যুননুন মিসরী (রঃ), হযরত জুনায়েদ বাগদাদী (রঃ), হযরত আবুর হাসান নূরী (রঃ) প্রমুখ সাধক চূড়ামণির সাক্ষাৎ, সাহচর্য ও সান্নিধ্য লাভ করে হযরত আবু আবদুল্লাহ উচ্চন্তরের দরবেশে পরিণত হন। তিনি তুরস্কের অধিবাসী ছিলেন।
তাঁর প্রথম জীবনের ঘটনাটি তিনি নিজেই বর্ণনা করেছিলেন হযরত আমীর দামেস্কী (রঃ)-এর কাছে।
সর্বপ্রথম তিনি মারেফাত তত্ত্বে দীক্ষা গ্রহণ করেন হযরত জুনায়েদ বাগদাদী (রঃ)-এর দরবারে।
একবার তিনি ইহুদী রমণীর ভুবন ভোলানো রূপারাশি দেখে অতিশয় মুগ্ধ হন। আল্লাহর সৃষ্টি ক্ষমতার অপূর্ব নিদর্শন হিসেবে তিনি তাকে প্রত্যক্ষ করেন। আর তখন সেখানে এসে পড়েন হযরত জুনায়েদ (রঃ)। আবদুল্লাহ (রঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, এমন অনিন্দ্য রূপও কি জাহান্নামের আগুন পুড়বে? বাগদাদী (রঃ) বললেন, এসবের দিকে দৃষ্টিপাত করা রিপুর ইচ্ছা ছাড়া কিছু নয়। আল্লাহর সৃষ্টি কৌশলের অপূর্ব দৃশ্য থেকে উপদেশ লাভ করতে হলে পৃথিবীতে আরও নানা রকমের বস্তু আছে।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত আবু আবদুল্লাহ জাল্লা (রঃ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন