হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ) – শেষ পর্ব
হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ) – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ)-এর উপদেশবাণীসমূহঃ
১. ফেরেশতা জ্বিন ও মানুষ সৃষ্টি করে আল্লাহ তাদের সামনে তিনটি জিনিস রেখে প্রত্যেককে এক একটি জিনিস পছন্দমত বেছে নিতে বললেন। আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তারা তা করলও।
জিনিস তিনটি প্রত্যেকটি আলাদা। একটির সঙ্গে অন্যটির মিল নেই। সেদিন থেকে ফেরেশতা, জ্বিন ও মানুষের প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যের মধ্যেও কোন সামজঞ্জ্য নেই।
২. এক সময় সুফী মানুষ জ্বীনদের ওপরে ক্ষমাশালী ছিলেন। কিন্তু এখন অবস্থাটা এর বিপরীত।
৩. সুফীদের প্রকৃত পরিচয় হল, মন পরিষ্কার হবে। বাইরের পশমী পবিত্র পোশাক তারই লক্ষণ প্রকাশ করবে। আর সংসারবিরোধী হয়ে প্রবৃত্তিকে সংযত রাখবে।
৪. ভিতরের এবং বাইরের পবিত্রতাসহ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়া কল্যাণ ও শান্তির লক্ষণ।
৫. আল্লাহর দানসমূহের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং ধৈর্যের সঙ্গে বিপদ-আপদের মোকাবিলা করাই হল তাসাউফের এক নাম।
৬. অদৃশ্য বস্তু উদ্ভাসিত হয়ে যাওয়ার নামই হল ঈমান।
৭. প্রকৃত মিলন আল্লাহর সঙ্গে মিলন, যার পরে তিনি ছাড়া আর কোন কিছুর কথাই স্মরণ থাকে না।
৮. রিপু, দুনিয়া ও শয়তান থেকে দূরে থাকার নামই হল তাকওয়া।
৯. এবাদতের মাধ্যমে রিপু দমন করাকে বলে রিয়াজত।
১০. যা পাওয়া গেছে তাতে তৃপ্ত থেকে, যা পাওয়া যায়নি তার প্রতি লোভ-লাসসা না করার নামই হল কানায়াত।
১১. ধন-সম্পদ ও স্বর্ণ-রৌপ্যের দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়াকেই বলে যোহদ।
১২. মিলনাকাঙ্কা জনিত আনন্দের নাম রেজা।
১৩. আল্লাহর ওপর সব কিছু সঁপে দিয়ে বিপদে ধৈর্যধারণ করাই হল প্রকৃত দাসত্ব।
১৪. নিজের দারিদ্র্য প্রকাশ করা অপরাধ।
১৫. যখন যা পাওয়া যায় তাই খেয়ে আল্লাহর এবাদতে রত হও। যদি কিছু পাওয়া না যায়, আপত্তি নেই। কিন্তু আল্লাহর এবাদতে বিরত না হয়ে ধৈর্য রক্ষা কর।
মৃত্যুর পূর্বে হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ) তাঁর ভৃত্যকে বলে যান মৃত্যুর পর তুমি আমার দুহাতে দড়ি ও গলায় শিকল বেঁধে দেবে। তা হলে হতে পারে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন। তিনি মারা গেল ভৃত্য প্রভুর অসিয়ত অনুযায়ী কাজ করতে উদ্যত হল। তখন হঠাৎ অদৃশ্য বাণী শোনা গেল, আমার প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে তুমি কি বেআদবী করতে যাচ্ছ? হাতে ও গলায় দড়ি বাঁধতে যাচ্ছ কেন? আওয়াজ শুনে ভৃত্য থেমে গেল।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া