হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ) – পর্ব ২
হযরত আবদুল্লাহ খাফীফ (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হজ্জ সম্পন্ন করে ফেরার পথে বাগদাদে তিনি দেখা করলেন হযরত জুনায়েদ (রঃ)-এর সঙ্গে। তিনি বললেন, আপনি যদি সম্পূর্ণ ধৈর্য ধারণ করতে পারতেন, তা হলে দেখতেন পানি ছুটে এসেছে আপনার পায়ের কাছে।
একবার তিনি মিশরের এক সিদ্ধ পুরুষের কথা শুনতে পেয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার জন্য খুব আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেখানে গিয়ে দেখেন, সাধক ধ্যানমগ্ন। তিনি সালাম জানালেন। কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া গেল না। তাঁর ধ্যান ভাঙল না। আবার সালাম জানালেন কিন্তু তাও উত্তর পাওয়া গেল না। তারপরও তৃতীয়বার সালাম জানিয়ে তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, আপনি আমার সালামের জবাব দিন। এবার তাঁর ধ্যান ভঙ্গ হল। আর সালামের জবাব দিয়ে বললেন। সময় বড় সঙ্কীর্ণ। এ সময়ের মধ্যে যত বেশী সম্ভব অর্জন করুন। মনে হচ্ছে সময়ের সঙ্কীর্ণতা সম্বন্ধে আপনি উদাসীন। এ জন্যই আপনি আমার সালাম লাভের জন্য এখানে উপস্থিত হয়েছেন। কথাটা বলেই তিনি আবার ধ্যানে ডুবে গেলেন।
মিসরীয় সাধকের অমূল্য বাণী তাঁর মনে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। ক্ষুধা-তৃষ্ণা ভুলে গেলেন তিনি। আর তাঁর সঙ্গেই যোহর ও আসরের নামাজ পড়লেন। তারপর তাঁর কাছে উপদেশ প্রার্থনা করলে তিনি বললেন, আমি নিজেই নানা বিপদের মধ্যে আছি। অতএব, উপদেশ প্রার্থনা দেয়ার মতো নিজেকে উপযুক্ত মনে করতে পারছি না। বরং অন্যের উপদেশ শুনতে আমি আগ্রহী। যাই হোক, অনেক পীড়াপীড়ার পর তিনি বললেন, আপনি এমন লোকের সাহচর্য অবলম্বন করুন, যে আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেবে আর আপনাকে প্রকৃত আমলকারীরূপে গড়ে তুলবে।
তিনি একবার স্বপ্নে দেখলেন, রোজ কিয়ামত উপস্থিত। সমস্ত মানুষ এদিকে ওদিকে ছোটছুটি করছে। হঠাৎ দেখলেন, একদিক থেকে একটি ছেলে ছুটে এসে তার পিতার হাত ধরে পুলসিরাতের ওপর টেনে তুলে তাঁকে পুল পার করে জান্নাতে পৌঁছে দিল।
এ স্বপ্ন দেখার পর তিনি বিবাহ করেন। এই স্ত্রীর গর্ভে তাঁর একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু মারা যায়। অতঃপর তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, আমি উদ্দেশ্যে তোমাকে বিবাহ করেছিলাম তা পূর্ণ হয়েছে। এখন ইচ্ছা করলে তুমি তালাক নিতে পার।
তিনি মোট চারশ বিবাহ করেন। তাঁর মধ্যে এমন কিছু ছিল যাতে প্রতিটি নারী তাঁর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করতেন। আর তাদের মনোবাঞ্ছা পূরণের জন্যই তিনি এত অধিক সংখ্যক বিবাহ করেন। তিনি কখনও শরীয়ত বিরোধী হয়, এমন সংখ্যক স্ত্রী রাখেননি। ঘটনাক্রমে বিবাহিত পত্নীদের মধ্যে তাঁদের নিয়ে আলোচনা হয়, তিনি কখনও কারও ঘটেনি।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া