হযরত আদি ইবনে হাতেম (রাঃ) কে দাওয়াত প্রদান – পর্ব ২

হযরত আদি ইবনে হাতেম (রাঃ) কে দাওয়াত প্রদান – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

হযরত আদি ইবনে হাতেম (রাঃ) এই ঘটনা শুনাইবার পর বলিলেন, দেখ, এই সেই পর্দানশীন মেয়েলোক হীরা হইতে সঙ্গীহীন অবস্থায় আসিয়া আল্লাহর ঘর তওয়াফ করিতেছে। আর কিসরার ধনভাণ্ডার যাহারা অধিকার করিয়াছিলেন আমি ও তাহাদের মধ্যেকার একজন ছিলাম। সেই পাক

যাতের কসম, যাঁহার কুদরতি হাতে আমার প্রাণ, তৃতীয়টিও (অর্থাৎ মাল-দৌলতের প্রাচুর্য্য) অবশ্যই ঘটিবে। কারণ রাসূল (সাঃ) তাহা এরশাদ করিয়াছেন। (বিদায়াহ)

অপর রেওয়াতে আছে, হযরত আদি হাতেম (রাঃ) বলেন, আমি আকবার নামক স্থানে ছিলাম, এমতাবস্থায় রাসূল (সাঃ)-এর ঘোড়সওয়ার দল আসিয়া আমার ফুফুসহ কিছুলোককে গ্রেফতার করিয়া লইয়া গেল এবং রাসূল (সাঃ)-এর সম্মুখে হাজির করিল। গ্রেফতারকৃত সকলকে যখন কাতার করিয়া তাহার সম্মুখে দাঁড় করানো হইল, তখন আমার ফুফু বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমার সাহায্যকারী প্রতিনিধি দূরে সরিয়া গিয়াছে, সন্তান সম্ভাবনা শেষ হইয়া গিয়াছে এবং আমি বৃদ্ধাবস্থায় উপনীত হইয়াছি, খেদমত করার মত শক্তিও আমার নাই।

সুতরাং আমার উপর দয়া করুন আল্লাহ আপনার উপর দয়া করিবেন। রাসূল (সাঃ) জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার সাহায্যকারী প্রতিনিধি কে? তিনি বলিলেন, আদি ইবনে হাতেম। রাসূল (সাঃ) বলিলেন, সেই ব্যক্তি যে আল্লাহ ও তাঁহার প্রতি দয়া করিলেন। তারপর যখন রাসূল (সাঃ) ফিরিয়া যাইতে লাগিলেন, তখন তাঁহার পার্শ্ববর্তী এক ব্যক্তি আমাদের ধারণামতে তিনি হযরত আলী (রাঃ) ছিলেন, তিনি আমার ফুফুকে বলিলেন, রাসূল (সাঃ)-এর নিকট আরোহণের জন্য বাহন চাহিয়া লও। আমার ফুফু চাহিলে তিনি তাহাকে বাহন দিবার আদেশ করিলেন।

হযরত আদি (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমার ফুফু আমার নিকট আসিয়া বলিলেন, তুমি এমন কাজ করিয়াছ, তোমার পিতা থাকিলে কখনও এমন করিতেন না। (অর্থাৎ তোমার ন্যায় আমাকে একা ফেলিয়া পালাইয়া যাইতেন না।) তারপর বলিলেন, ইচ্ছায় হউক বা তাঁহার ভয়ের দরুন অনিচ্ছায় হউক, তুমি অবশ্যই তাঁহার নিকট যাও। কারণ অমুক অমুক তাঁহার নিকট গিয়াছে তাঁহার দয়া লাভ করিয়াছে। অমুক গিয়াছে তো সেও তাঁহার দয়া লাভ করিয়াছে।

হযরত আদি (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (সাঃ)-এর খেদমতে হাজির হইলাম। সেখানে তাঁহার নিকট একজন মেয়েলোক ও দুইটি শিশু অথবা বলিয়াছেন, একটি শিশু দেখিতে পাইলাম। তারপর তিনি তাঁহার সহিত তাহাদের ঘনিষ্ঠ হইয়া বসার বর্ণনা দিলেন। তিনি বলেন, আমি বুঝিতে পারিলাম যে, ইহা কিসরা ও কায়সারের দরবারে নহে। রাসূল (সাঃ) তাহাকে বলিলেন, হে আদি ইবনে হাতেম, তুমি কি কারণে পালাইয়া বেড়াইতেছ? তুমি কি এইজন্য পালাইতেছ যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলিতে হইবে? তবে কি আল্লাহ ব্যতিত আর কোন মাবুদ আছে? তুমি কি এইজন্য পালাইতেছ যে, আল্লাহু আকবার বলিতে হইবে? তবে কি আল্লাহ আযযা ওয়াজাল্লা অপেক্ষা বড় আর কোন জিনিস আছে? হযরত আদি (রাঃ) বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করিলাম এবং দেখিলাম যে, রাসূল (সাঃ)-এর চেহারা মুবারক খুশীতে উজ্জ্বল হইয়া উঠিল। তিনি বলিলেন, যাহাদের উপর আল্লাহ তায়ালার গযব নাজিল হইয়াছে, তাহারা হইল ইহুদীগণ, আর যাহারা পথভ্রষ্ট হইয়াছে, তাহারা হইল খৃষ্টানগণ।

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

হযরত আদি ইবনে হাতেম (রাঃ) কে দাওয়াত প্রদান – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।