হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ৩

হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

ইউসুফ মারইয়ামের কথা শুনে একটু ভীত হল। তখন সে বলল, বোন! আমি তোমার পর নই।  তুমি যা বলেছ তা সত্যি হয় তবে আমি তোমার সাহায্য করব। তোমার অপরাধীকে সমুচিত শাস্তি দিব। কিন্তু তাঁর পূর্বে তোমার সত্যবাদিতার পরিপূর্ণ প্রমাণ আমাকে দিতে হবে। হযরত মাইরয়াম ইউছুপ কে বললেন, এ জন্য তুমি আর কিছু দিন অপেক্ষা কর। তখন তুমি নিশ্চিতভাবে আমার সত্যবাদিতার প্রমাণ দেখতে পাবে। 

একথা বলে হযরত মারইয়াম নিজ কক্ষে গিয়ে পুনঃ পুনঃ ধ্যান মগ্ন হলেন। তিনি আল্লাহ তায়ালার নিকট করুন সুরে আবেদন জানালেন, হে দয়ার সাগর! তুমি সমুদ্র কে পাহাড় আর পাহাড় কে সমুদ্র করতে পার।  তুমি ফকির কে বাদশ আর বাদশা কে ফকির করতে পার। অতএব আমার এ মহাদুর্দিনে আমার অপমান কারীদের দমন করে দাও। আমি অপরাধের তিব্র আঘাত সহ্য করতে পারছি না। এমন সময় জিব্রাইল (আঃ) মারইয়ামের কক্ষে এসে বললেন, হে সতীসাধ্বী মারইয়াম। তুমি নিরাশ হইও না। তোমার প্রতি আল্লাহ তায়ালা মেহেরবান রয়েছেন। বিদ্রুপকারীদের সাময়িক দোষারোপের সমুচিত জবাব দিবেন। 

তুমি সমালোচকদের জবাব দিতে গিয়ে অধিক সময় নষ্ট কর না। সর্বদা মহান আল্লাহর এবাদাঁত বন্দিগিতে লিপ্ত থাক। তিনি সর্ব অবস্থায় তোমার হেফাজত করবেন। মারইয়ামের ঘটনা নিয়ে  ইহুদীদের মধ্যে একটা সমালোচনার ঝড় উঠল। ঘরে বাইরে রাস্তা ঘাটে একেউ আলোচনা। কেউ কেউ মারইয়ামের  কথায় বিশ্বাস  করে তাকে নির্দোষ বলছে। আবার কতক লোক তাকে চরিত্র হীনা ভ্রষ্টা বলে তাঁকে উত্যক্ত করতে আরম্ভ করে। মারইয়াম শেষ দিকে সবাইকে বলতে আরম্ভ করল, আমি যদি ভ্রষ্টা হই তবে আমি ধ্বংস হব, আর যদি আমি সত্যবাদী হই তবে অচিরেই তোমার উপযুক্ত নিদর্শন দেখতে পাবে। মানুষেরা মারইয়ামের কঠিন উক্তি শুনে কিছু টা দমে গেল। তবে হযরত জাকারিয়া (আঃ) কে তারা আক্রমণ করতে ছাড়ল না। হযরত জাকারিয়া (আঃ) ইতোপূর্বে হযরত মারইয়ামের গর্ভ সম্বন্ধে আল্লাহ তায়ালার নিকট থেকে   তথ্য অবগত হলেন। মানুষ তাই তাঁর কাছে গিয়ে বেশ সুবিধা করে উঠতে পারল না। 

হযরত জাকারিয়া সবাইকে বলতেন, যার যেমন কর্ম তাঁর তেমন ফল, মারইয়াম যদি অবৈধ অন্যায় কাজে প্রবৃত্ত হয়ে থাকে তবে শীঘ্রই শাস্তি পাবে। আর যদি সে সতি হয় তবে তাঁর ভবিষ্যৎ হবে সম্মানজনক।  অতএব, এ বিষয় সঠিক প্রামানের পূর্বে কোন মন্তব্য করা উচিৎ নয়। তিনি নিয়মিত মাইরয়ামের তদারকি করতেন। মারইয়াম লজ্জায় তাঁর খালুর নিকট কোন কথা বলতেন না। শুধু দিবারাত্র কেঁদে কাটাতেন।  হযরত জাকারিয়া (আঃ) তাঁকে বলতেন মা! কেঁদ না, ভাল-মন্দ যা আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তাঁর উপর রাজি থাকাই মোমেনের চিহ্ন। ইহুদীদের প্রচারণার সম্মুখে তুমি ধৈয ধারন কর। 

হজরত ঈসা (আঃ)- এর আর্বিভাব-পর্ব ৪ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।