শেষ ইচ্ছে!

দুই মেয়ের পর যখন কালামের এক ছেলে হলো বেশ আনন্দে ভরপুর ছিলো তাদের পরিবারটি।কালামের স্ত্রী রহিমাও বেশ সুখী ছিলো।এভাবেই তাদের তাদের দিনগুলো কাটছিলো।একদিন তাদের প্রথম মেয়ের বিয়ে ঠিক হলো।বেশ ভাল ঘরেই তাদের প্রথম মেয়ের বিয়ে হলো। এর দুই বছর পর তার দ্বিতীয় মেয়েও শ্বশুর বাড়ি চলে গেল।এদিকে কালামও তার জমি জমা বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন।পাঁচ বছর পর ছেলে বেশ টাকা পয়সা নিয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসে এবং একটি বিয়েও করে ফেলেন।এদিকে ছেলের বিয়ের এক সপ্তাহ পরই কালাম সাহেব পরলোক গমন করেন।তখন বাড়িতে দুঃখের সময় থাকলেও তার ছেলের বৌয়ের জন্য তেমন একটা দুঃখের ছিলো না।এদিকে ছেলের বৌ নানা রকম ভাবে তার শাশুড়ির নামে কুকথা বলতে থাকে আর ছেলেও তা সহজে বিশ্বাস করতে থাকে অন্ধভাবে।যার ফলে ছেলেও তার মাকে বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিতে থাকে।কিন্তু এতো কষ্ট পেয়েও কখনো কারও কাছে রহিমা এসব কথা বলেননি।শুধু মুখ বুজে সব সহ্য করে গেছেন।একদিন রহিমা প্রচন্ড অসুখ হলো।রহিমা বুঝতে পেয়েছিলেন যে তিনি এবার আর বাঁচবে না। তাই তিনি এক সময় তার প্রতিবেশী খাদিজাকে ডেকে তার তার সকল কষ্ট ভাগ করে নিলেন এবং তার শেষ ইচ্ছাটা তাকে বলে গেলেন।পরদিন সকালে বাড়িতে এক বিশাল কান্নার রোল পরে গেল।সবাই এসে দেখলেন রহিমা আর নেই।সে চলে গেছে না ফেরার দেশে।রহিমার দুই মেয়ে এবং আদরের ছেলে প্রচন্ড কান্নায় ভেঙে পরেছে।এদিকে রহিমাকে গোসল দিতে হবে।তাই তার ছেলে কাফনে কাপড় যখন আনতে যাচ্ছিলো তখন সেই প্রতিবেশী খাদিজা এসে রহিমার শেষ ইচ্ছেটা সবাইকে জানালেন। সবাই রহিমার শেষ ইচ্ছেটি শুনে বেশ অবাকই হলো।কারণ রহিমার শেষ ইচ্ছেটি ছিলো :: তার কাফনের কাপড়টি যেন তার কোন ছেলে মেয়ের টাকায় না কেনা হয়। কথাটি শুনে রহিমার ছেলে আরো কান্নায় ভেঙে পড়ল এবং আফসোস করতে লাগল॥ . . কিন্তু তখন আর আফসোস করে লাভ কী? কারণ মানুষটি তো আর বেঁচে নে!! –সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

রসিক গোপালের চালাকি

একবার গোপাল পাড়ার এক দোকান থেকে বাকি খেয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেল দেনা সে শোধ করে…

নবাবের অষ্টাদশ পর্ব মহাভারত কথা –গোপাল ভাঁড়ের গল্প

একবার মুর্শিদাবাদের নবাবের খেয়াল হল, হিন্দুদের মত আমাকে নিয়ে মহাভারত রচিত হোক। যেমনি ভারা তেমনি…

টোল

যখন রমনা পার্কে পৌছালাম তখন তিনটার মত বাজে ! সাড়ে তিনটার সময় নিশির সাথে দেখা…

শেষ ইচ্ছে!

দুই মেয়ের পর যখন কালামের এক ছেলে হলো বেশ আনন্দে ভরপুর ছিলো তাদের পরিবারটি।কালামের স্ত্রী রহিমাও বেশ সুখী ছিলো।এভাবেই তাদের তাদের দিনগুলো কাটছিলো।একদিন তাদের প্রথম মেয়ের বিয়ে ঠিক হলো।বেশ ভাল ঘরেই তাদের প্রথম মেয়ের বিয়ে হলো। এর দুই বছর পর তার দ্বিতীয় মেয়েও শ্বশুর বাড়ি চলে গেল।এদিকে কালামও তার জমি জমা বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়ে দেন।পাঁচ বছর পর ছেলে বেশ টাকা পয়সা নিয়ে বিদেশ থেকে ফেরত আসে এবং একটি বিয়েও করে ফেলেন।এদিকে ছেলের বিয়ের এক সপ্তাহ পরই কালাম সাহেব পরলোক গমন করেন।তখন বাড়িতে দুঃখের সময় থাকলেও তার ছেলের বৌয়ের জন্য তেমন একটা দুঃখের ছিলো না।এদিকে ছেলের বৌ নানা রকম ভাবে তার শাশুড়ির নামে কুকথা বলতে থাকে আর ছেলেও তা সহজে বিশ্বাস করতে থাকে অন্ধভাবে।যার ফলে ছেলেও তার মাকে বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিতে থাকে।কিন্তু এতো কষ্ট পেয়েও কখনো কারও কাছে রহিমা এসব কথা বলেননি।শুধু মুখ বুজে সব সহ্য করে গেছেন।একদিন রহিমা প্রচন্ড অসুখ হলো।রহিমা বুঝতে পেয়েছিলেন যে তিনি এবার আর বাঁচবে না। তাই তিনি এক সময় তার প্রতিবেশী খাদিজাকে ডেকে তার তার সকল কষ্ট ভাগ করে নিলেন এবং তার শেষ ইচ্ছাটা তাকে বলে গেলেন।পরদিন সকালে বাড়িতে এক বিশাল কান্নার রোল পরে গেল।সবাই এসে দেখলেন রহিমা আর নেই।সে চলে গেছে না ফেরার দেশে।রহিমার দুই মেয়ে এবং আদরের ছেলে প্রচন্ড কান্নায় ভেঙে পরেছে।এদিকে রহিমাকে গোসল দিতে হবে।তাই তার ছেলে কাফনে কাপড় যখন আনতে যাচ্ছিলো তখন সেই প্রতিবেশী খাদিজা এসে রহিমার শেষ ইচ্ছেটা সবাইকে জানালেন। সবাই রহিমার শেষ ইচ্ছেটি শুনে বেশ অবাকই হলো।কারণ রহিমার শেষ ইচ্ছেটি ছিলো :: তার কাফনের কাপড়টি যেন তার কোন ছেলে মেয়ের টাকায় না কেনা হয়। কথাটি শুনে রহিমার ছেলে আরো কান্নায় ভেঙে পড়ল এবং আফসোস করতে লাগল॥ . . কিন্তু তখন আর আফসোস করে লাভ কী? কারণ মানুষটি তো আর বেঁচে নে!! –সংগৃহীত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

শেয়াল ও মুরগি

এক বাগানের একটি খাঁচায় একপাল মুরগিছানা থাকত ওদের মায়ের সঙ্গে। ওরা ছিল বেশ শান্ত-সুবোধ। কেউ…

ছাগল ও সিংহ

ক্লাসে কিছু ছাত্র থাকে যারা- যেমন বুদ্ধিমান তেমনি জ্ঞানী। আবার কিছু ছাত্র আছে যাদের স্মৃতি…

সততার মূল্য

‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’—এ প্রবাদটি আমরা সবাই জানি। কেবল প্রবাদে নয়, পবিত্র কোরআন ও হাদিসেও সততার…