আপনি এইদিকে আসেন -না না আপনি এইদিকে আসেন -ধুর ওনার কাছে কি আমার কাছে আসেন…. এই বলিয়া টানাটানি শুরু করিয়া দিলো আমাকে তিন ডাঃ বাবু….আর আমি মাধখানে আমসত্ব হইয়া গেলাম…আপনি কিছু একটা করেন রাজামশায়… রাজামশায় ভাবলেন আসলেই তো এই নিয়া ছয় ছয় বার নালিশ এসেছে তাদের বিরুদ্ধে,কিছু একটা করা দরকার…। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে সেখানে এসে হাজির সেনাপতি…। *সেনাপতি শুনেছো কি সমস্যা রাজ্যে…. **হুমম রাজামশায় ওই তিন ডাঃকে নিয়ে সমস্যাতো??? *হুমম দেখোতো খোজ নিয়ে..নাহয় যে আমাকেই যেতে হয়…। **রাজামশায় যদি নির্ভয় দেন তো বলি আপনিই দেখেন গিয়ে কি হলো….।বুঝতে সুবিধে হবে আপনার,বিচারও হবে সহজ…।
*ঠিক বলেছো তুমি সেনাপতি…আমিই যাবো…। রাজামশায় পরের দিন ছদ্মবেশে গেলেন সেই ডাক্তারদের এলাকায়,কিছু বলতে না বলতেই ডাক্তাররা তাকে ধরে টানাটানি… -আপনি এইদিকে আসেন -না না আপনি এইদিকে আসেন -ধুর ওনার কাছে কি আমার কাছে আসেন…. রাজা বললেন,দাড়াও বাছা আমি বৃদ্ধ মানুষ,আমাকে পাঠিয়েছেন রাজা মশায়,তার চিকিৎসা দরকার,কিন্তু তোমরা হোমিওপ্যাথিক,অ্যালোপ্যাথিক আর কবিরাজ তিন জনতো আর একসাথে চিকিৎসা করতে পারবে না,তাই যেকোনো একজন করবে..আর সেই ভাগ্যবান শুধুমাত্র এ রাজ্যে থাকতে পারবে…আমাকে যে আগে জানতে হয় তোমরা কে কমন ডাক্তার,তারপরে না চিকিৎসা…। তোমরা এক কাজ করো তোমরা কাল সকাল সকাল রাজার দরবারে চলে আসো….রাজামশায় তোমাদের কৃতিত্তের কথা আগে শুনবে তারপরে না সিদ্ধান্ত…। এবার তিন জনই রাতে ঘুমাতে গেলো নিশ্চিন্তে,কারন তারা প্রত্যেকেই ভেবেই নিলো আমি থাকবো আর ওরা বাদ পরবে…। এবার পরের দিন রাজা তার দরবারে একে একে তিন জনের কাছেই শুনতে চায় তাদের কৃতিত্তের কথা… হোমিওপ্যাথিকের ডাক্তারঃ আমার কথা কি বলবো রাজামশায়,আমি একবার এমন একজন রোগী পেয়েছিলাম যে কি না যায় যায় অবস্থা…তো তার বাড়ির লোক আমাকে এসে নিয়ে যায়..।কি করবো ভাবতে ভাবতে তাকে একটু ব্যাস্ততার মাঝে তিন ফোঁটা ওষুধ খাইয়েছিলাম…হাতে নাড়া লেগে তার এক ফোটা ওষুধ লোকটার বিছানার কাঠে গিয়ে পরে….খাট ছিলো কাঁঠাল গাছের কাঠের..কি বলবো আপনাকে রাজামশায় সেই খাটে ওই ওষুধের গুনে গাছ জন্মায়,আজ থেকে আরো ১০/১১ বছর আগের কথা…।সেই গাছে এখন কাঁঠাল জন্মে,এইত্তো কয়েকদিন আগেও ওরা আমাকে একটা কাঁঠাল দিয়ে গেলো…সে কি মিস্টি,জিভে জল চলে আসে…। *আর রোগীর কি হলো??? আর রোগী….সেতো এই সেদিনও দেখলাম পাড়ার ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলছে…. 😀 বয়স তার ১০৮…। রাজা শুনে একটু মাথা চুলকে ভাবলেন আসলেইতো এই ডাক্তারেরই আছে এই রাজ্যে থাকার অধিকার…। অ্যালোপ্যাথিক ডাক্তারঃ কি আর বলি রাজা মশায় ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন…একবার চেম্বারে যাচ্ছি,হঠাৎ দেখি রেলস্টেশনের ওই দিক থেকে চিৎকার চেচামেচি…দেখি….
একজন মানুষ কাটা পড়েছে রেলে…তার কোমরের নিচের অংশ নেই বললেই চলে,আমি তাকে বাঁচাবো বলে চেম্বারে নিয়ে যাচ্ছি এর মধ্যে দেখি আর একজায়গায় চেচামেচি,ভাবছি কি হলো..এর মধ্যে এক ছোকরা আমাকে দেখেই দৌড়ে এলো,এসে বলে কিনা ডাক্তার বাবু আমাদের মন্টুকে বাঁচান ও রেলে কাটা পড়েছে…আমি ভাবলাম আবার কোন মানুষটা কাটা পড়লো কে জানে??? *তারপর তারপর??? তারপর আর কি যেয়ে দেখি মন্টু মানুষ না একটা গরু,তার আবার উপরের অংশ থেতলে টেতলে শেষ…কি করা যায় আমি তো আবার দয়ার মানুষ…গরুটাকেও নিয়ে নিলাম সাথে,এবার মানুষটার উপরের অংশ আর গরুটার নিচের অংশ সেলাই দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলাম… *ওরে বাবা এরপর কি হলো কি আবার হবে বলুন,সেই গোমানুষটা প্রতিদিন অফিসে যায় আর মাস শেষে ৩০ হাজার পায় বেতন আর প্রতিদিন ৪ লিটার করে দেয় দুধ…।
এবার রাজা পড়লেন বিপদে আরে কি হবে,এখন এও যে কম যায় না…।আচ্ছা দেখি কি বলে কবিরাজ। কবিরাজঃ রাজামশায় আমি ক্ষুদ্র মানুষ কি আর করেছি জীবনে তাও বলি দেখি…আমি একবার গেলাম শিকারে…হাটতে হাটতে অনেক পথ,গেলাম ঘুমিয়ে…যখন জেগে গেছি দেখি আমার বন্দুক নেই…কে যেনো নিয়ে গেছে,মনটা একটু খারাপ হয়ে গেলো,ফিরে আসবো ভাবছি এমন সময় বাঘের গর্জন শুনে পেছন ফিরে দেখি বাঘমামা দাড়ানো…এখন কি করি ভাবতে ভাবতে মনে পড়ে গেলো আরে আমার ব্যাগে তো আমার ওষুধ আছে…ওমনি একটা গোলা বের করে দিলাম বাঘমামার মুখে ছুড়ে…মিনিট খানেক যেতে না যেতেই দেখি সেখানে মামার খালি লেজটা পড়ে আছে… *
কি করে কি করে??? রাজামশায় বাঘমামা আমার গোলা ওষুধে হজম হয়ে গেছিলো…. রাজামশায়ের মাথা আবারো চুলকানো শুরু করলো আর ভাবলো কাকে বাদ দিয়ে কাকে রাখি সবাইতো ভালো কাজ করে….।রাজা এবার তিন জনকেই অনুমতি দিলেন থাকার জন্য তার রাজ্যে…।এর পরদিন থেকে আবার ওই এলাকায় গেলেই শোনা যেতো… -আপনি এইদিকে আসেন -না না আপনি এইদিকে আসেন -ধুর ওনার কাছে কি আমার কাছে আসেন….