শংকরের চা বানানো দেখছিল বাবলু। পুরনো নারকেল তেলের টিন কেটে বানানো ছাঁকনির জাল দিয়ে কাঁচের গ্লাসে লালচে তরল গড়িয়ে পড়ছে। সেই ভোর থেকে শুরু করেছে, এখন শেষ বিকেল। একটু আগে দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। মাটি আলতো ভিজে, সোঁদা গন্ধ উঠছে। রাস্তার ঝুলে-পড়া বৈদুতিক তারে জমে থাকা জলের ফোঁটাগুলো ব্যালকনিতে দাঁড়ানো ইস্কুল ছাত্রের মত নীচের দিকে চেয়ে আছে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে তপু সিগারেট খাচ্ছে। বাবলু এগিয়ে গেল। বলল, “কাউন্টারটা দিস।”
তপু জোরে একটা টান দিল সিগারেটে। তারপর সেটা এগিয়ে দিল বাবলুর দিকে। বাবলু সিগারেটটা নিয়ে মৃদু মৃদু টানতে লাগল। “একবার যাবি নাকি?” একটা হাই তুলে তপু জিজ্ঞ্যেস করল। বাবলু তাকাল ওর দিকে, “কোথায় যাব?” “গতকাল রাতে পুলিশ রেইড করেছে। একবার কাকু-কাকিমার সাথে দেখা করলে হয় না? মানে, জাস্ট কার্টসি আর কি…” তপু খানিকটা দ্বিধামিশ্রিত স্বরে বলল। “তুই কি পাগল? এই মুহূর্তে ওর বাড়িতে ঢোকা কি প্রচন্ড রিস্কি জানিস? এখন দেখা করতে গেলে কিসের মধ্যে জড়িয়ে যাব সে খেয়াল আছে তোর?” কথাগুলো বলে সিগারেটটা মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পিষে দিল বাবলু। এগিয়ে এসে তপুর কাঁধে হাত রেখে বলল, “দেখ ভাই, বাবার ব্যবসা অলমোস্ট লাটে উঠেছে।
আমার ওপরেই এখন সব আশা-ভরসা। ওর মত বিপ্লব নামক লাক্সারির কোনও সুযোগ নেই আমার।” তপু কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল; কানে এল শংকরের গলা, “চা তো ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। এর পর আবার বলবে ফুটিয়ে দিতে! তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও তো।” গল্পের পঞ্চম পরিচ্ছেদ পড়তে এখানে ক্লিক করুন