মুজিযা সৌরজগৎ সম্পর্কে
হিজরতের পূর্বে মক্কায় আবু জাহেল, ওলীদ ইবনে মুগীরাহ এবং আস ইবনে ওয়ায়েল প্রমুখ কাফেররা রাসূল (সাঃ) কে বলল, তুমি নবী হও তবে আকাশের চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত করে দেখাও। রাসূলে পাক (সাঃ) তাদেরকে পাল্টা জিজ্ঞেস করলেন, আমি যদি এরূপ করে দেখাও পারি, তবে কি তোমরা পারি, তবে কি তোমরা ঈমান আনবে? উত্তরে তারা হ্যাঁ সূচক জবাব দিল।
রাসূল (সাঃ) আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করলেন যেন চাঁদ দুটুকরো হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বন্ধুর দোয়া কবুল করলেন। যথা সময় তিনি চাঁদের দিকে ইশারা করতেই তা দুটুকরো হয়ে গেল। এবার তিনি কাফেরদের এক এক জনের নাম নিয়ে ডেকে ডেকে বললেন, হে অমুক, সাক্ষী থেকো। সকল কাফেররা চাঁদের দ্বিখণ্ডিত রূপ ভালভাবে দেখতে পাচ্ছিল। চাঁদের খণ্ড দুটি পরস্পর হতে এত দূরে সরে গিয়েছিল যে, তার মধ্যপথে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু কাফেররা এ ঘটনার বাস্তবতাকে অস্বীকার করে এটাকে নিছক যাদুক্রিয়া বলে মন্তব্য করল।
আবু জাহেল তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলল, বিষয়টির সভ্যতার উপর আরো তদন্ত করা হবে। যদি এটা নিছক যাদু হয়ে থাকে, তবে উপস্থিত আমাদের উপরই তার প্রভাব পড়বে। যারা এখানে উপস্থিত নেই বা দূরবর্তী শহরও জনপদে অবস্থানরত মানুষের উপর এ যাদুক্রিয়া করা সম্ভব নয়। সুতরাং ভিনদেশ থেকে আগত লোকদের মাধ্যমে এ ঘটনা তদন্ত করা হবে।
পরবর্তীতে দেখা গেল যে, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল অ দেশ হতে আগত লোকদের সকলেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছে যে, আমরাও অমুক দেশ থেকে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হতে দেখেছি।
এ মুজিযাটি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
اقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ وَانشَقَّ الْقَمَرُ
وَإِن يَرَوْا آيَةً يُعْرِضُوا وَيَقُولُوا سِحْرٌ مُّسْتَمِرٌّ
وَكَذَّبُوا وَاتَّبَعُوا أَهْوَاءَهُمْ ۚ وَكُلُّ أَمْرٍ مُّسْتَقِرٌّ
অনুবাদঃ কিয়ামত নিকটবর্তী এবং চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। আর যদি তারা কোন মুজিযা দেখে, তবে টাল বাহানা করে এবং বলে, এটোতো যাদু এখনই এর অবসান ঘটবে। (সূরা ক্বাসাসঃ ১-৩)
অর্থাৎ ঘটনার সত্যতা সন্দেহতীতভাবে সত্য প্রমাণিত হবার পরও তারা বলতে লাগল, এটি সম্ভব নয়। মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধি বিবেচনায় প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে যাদু বলে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার মুজিযাটি শুধু যে আরবের লোকেরাই প্রত্যক্ষ করেছে এমন নয়, বরং সমগ্র পৃথিবীর মানুষ স্বীয় এলাকা থেকে তা প্রত্যক্ষ করেছে। (ছিয়াসিত্তাহ)