মনে আল্লাহ তায়ালার ভয় – শেষ পর্ব
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বললেন- মানুষের অন্তরে যখন আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হয় তখন তার হতে হিজাব ও পর্দা উঠিয়ে দেয়া হয়। অতঃপর সে অন্তরে সৃষ্ট নূরের সাহায্যে আল্লাহ পাকের আজমত ও উচ্চ মর্যাদার অবলোকন করতে থাকে। সে ফেরেশতাদের দল্ভুক্ত হয়ে তাদের সকল ক্রিয়াকর্ম স্বচক্ষে দেখে। ঐ সময় সে নিজের সর্বশক্তি নিয়োগ করে আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত হয়। অথচ ঐ ইবাদতের বিনিময়ে সে জান্নাত ও কামনা করে না আর তার অন্তরে জাহান্নামের ভয়ও সৃষ্টি হয় না। বুজুর্গের এ জবাব শুনে যুবক বিকট শব্দে এক চিৎকার দিয়ে সাথে সাথে প্রাণ হারাল। বুজুর্গ যুবককে চুম্বন করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, এটাই খোদাভীতি ও আল্লাহর মুহাব্বতের আলামত।
অপর এক ঘটনার উল্লেখ করে হযরত জুন্নুন মিশরী (রহঃ) বলেন, একদা আমি সিরিয়ার একটি সবুজ শ্যামল বাগানে বিচরণ করছিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম একটি সেব বৃক্ষের নীচে এক যুবক নামায পড়ছে। আমি এগিয়ে তাকে সালাম করলাম। কিন্তু সে আমার সালামের কোন জবাব দিল না। আমি দ্বিতীয়বার তাকে সালাম করলে সে নামায শেষ করে মাটির উপর আঙ্গুল দ্বারা নিম্নোক্ত বয়াতটি লিখল-
অনুবাদঃ জনাবকে কথা বলতে এ জন্য নিষেধ করা হয়েছে যে, জবানই মানুষকে বিবিধ বালা মুসীবতের দিকে আকর্ষন করে। সুতরাং তুমি যখন কিছু বলবে তখন আল্লাহর কথা বলবে। আল্লাহকে কখনো ভুলবে না এবং সকল সময় তার প্রশংসা বা হামদ করবে।
হযরত জুন্নুন মিশরী (রহঃ) বলেন, যুবকের এ বয়াত পাঠ করলে আমি স্তব্দ হয়ে গেলাম। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আমার দু চোখ ভরে অজস্র ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগল। পরে আমিও এর জবাবে আঙ্গুল দ্বারা নিন্মোক্ত বয়াতটি লিখলাম-
অনুবাদঃ হযরত জুন্নুন মিশরী (রহঃ) বলেন, যুবক আমার লেখা পাঠ করার সাথে সাথে বিকট শব্দে এক চিৎকার দিয়ে সাথে সাথে প্রাণ ত্যাগ করল। পরে আমি তার গোসল ও কাফন দাফনের আয়োজন করতে ছিলাম। এমন সময় গায়েব হতে আওয়াজ এল, হে জন্নুন! তুমি তাকে ছেড়ে দাও। আল্লাহ পাক তাঁর কাফন-দাফন সম্পন্ন করাবেন। হযরত জুন্নুন (রহঃ) বলেন, আমি আওয়াজ শুনার পর সরে এসে সেই বৃক্ষের নীচে নামায পড়তে আরম্ভ করলাম। কয়েক রাকায়াত পড়ার পর দেখলাম সেখানে সেই যুবকের লাশের কোন চিহ্নমাত্র নেই।