মদিনার পথে
এক বুজুর্গ বলেন, আমি জেয়ারতের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রওজা মোবারকে হাজির হলাম। সেখানে এক আজমী ব্যক্তি উপস্থিত ছিল। আমার আগমনের পর সে বের হয়ে গেল। কি মনে করে আমি তাঁর পেছন পেছন চললাম। সে জুলহোলায়ফা মসজিদের নিকট এসে দরুদ পাঠের পর হঠাৎ লাব্বায়েক বলে উঠল। আমিও তাঁর অনুসরণ করলাম। সে আমার দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করল, তুমি কি চাও? আমি বললাম, আমি তোমার সাথে থাকতে চাই।
কিন্তু সে আমাকে সাথে নিতে অস্বীকার করল। আমি বার বার অনুরোধ করলে সে বলল, তুমি আমার পেছন পেছন আস। অতঃপর সে সাধারণ চলার পথ ত্যাগ করে এক ভিন্ন পথে সামনের দিকে এগুতে লাগল। আমি তাকে অনুসরণ করলাম। রাতের কিছু অংশ অতিক্রমের পর আমরা সামনে একটি বাতির আলো দেখতে পেলাম। আজমী ব্যক্তিটি সেদিকে ইশারা করে আমাকে বলল, এটা হযরত আয়েশা (রাঃ) মসজিদ। তুমি আগে প্রবেশ করবে নাকি না আমি আগে প্রবেশ করব বল?
আমি বললাম তোমার ইচ্ছা। এবার সে সামনে এগিয়ে গেল আর আমি সেখানেই ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম হতে উঠে চারদিকে তাকিয়ে দেখালাম, এটা মক্কা শরিফ। অতঃপর তাওয়াফ ও সাঈ সম্পন্ন করে আমি হযরত শেখ আবু বকর কাতানীর খেদমতে উপস্থিত হলাম। সেখানে অনেক বুজুর্গানেদ্বীন উপস্থিত ছিলেন। আমি সবাইকে সালাম করালাম। শায়েখ আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কবে এসেছ? আমি বললাম, এই মাত্র এসেছি।
তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন-
তুমি কোথা হতে এসেছ?
*মদীনা মোনাওয়ারা হতে
*কবে রওয়ানা হয়েছ?
*গত রাতে। আমার এ কথা শুনে উপস্থিত সকলে অবাক হয়ে পরষ্পরের মুখ দেখতে লাগল। হযরত শায়েখ কাতানী আমাকে জিজ্ঞেস করলেন-
* তুমি কার সাথে এখানে এসেছ? আমি বললাম, এক আজমী ব্যক্তির সাথে। অতঃপর তাঁর সাথে দেখা হওয়ার পর হতে এ পর্যন্ত যা যা ঘটেছে আমি তাঁর পূর্ণ বিবরণ দিলাম। হযরত শায়েখ বলেন, তোমার সাথে হযরত জাফর দামগানী ছিলেন। অতঃপর তিনি সকলে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা সন্ধান করে দেখ, হযরত জাফরকে পাওয়া যায় কি না?
আমাকে বললেন, বেটা! আমি জানি যে, এক রাতে মদীনা হতে মক্কায় পৌছবার অলৌকিকশক্তি তোমার নেই? এটা হযরত জাফর বদৌলতে সম্ভব হয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, রাস্তা অতিক্রমের সময় তোমার পায়ের নিচে জমীনকে কিরুপ পেয়েছ? আমি বললাম, কোন দ্রুতগামী নৌকা যেমন পানির উপর দিয়ে অবলীলাক্রমে এগুতে থাকে ঐ পথ অতিক্রমের সময় আমার ঐরুপ মনে হচ্ছিল।