বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ৪
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ছেলে বেলার একটি কাহিনীঃ ইতিহাস পাঠে জানা যায়, শাবান মাসের শেষ দিন। সন্ধ্যাবেলা আকাশে পবিত্র মাহে রমজানের চাঁদ উঠবে চাঁদ দেখার জন্য সবাই ভীড় জমালেন। চাঁদ দেখে সকলে রোযা রাখবে, কিন্তু পরিতাপের বিষয় হল সেদিনের আকাশ ছিল মেঘলা। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হওয়ার কারণে জিলানী অধিবাসীরা কেহই চাঁদ দেখতে পারল না। যাই হোক পরের দিন রোযা রাখতে হবে কিনা এ নিয়ে জিলানী অধিবাসীরা তার পিতা যিনি হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) সাহেবের বাবা ছিলেন সেকালে মশহুর আলেম, জিলান অধিবাসীরা সমস্যা সমাধান নিরসন কল্পে হযরত আবদুল কাদের জিলানী সাহেবের (রঃ) সনামধন্য পিতার কাছে এলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল-এ সময় তিনি বাড়ী ছিলেন না। যাই হোক জিলান অধিবাসীদের সব কথাগুলো হযরত সাইয়্যেদা ফাতেমা শুনলেন। তাদের কথা শুনে কিছুক্ষণ পরই সাইয়্যেদা ফাতেমাকে প্রশ্ন করলেন আপনি কিভাবে অনুধাবন করলেন যে আজ পয়লা রমজান। তিনি কিছু সময় ভাববার পর বললেন, আজ আমার শিশু সন্তান-সেহরীর পর হতে আর দুধ পান করেনি। সত্যি শুনলে আপনাদের অবাক লাগবে, মুখে কিছু দিলেও সে খাচ্ছে না তাই আমার মনে হয় সে রোযা রেখেছে। তার আচরণ থেকে বুঝা যায় আজই প্রথম রোযা। সত্যি সাইয়্যেদা ফাতেমার পবিত্র মুখের কথাগুলো শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলেন বরং কেউ কোন প্রতিবাদ করল না। ইতিহাস বেত্তারা বলেন পরদিনই অনেকেই মাহে রমজানের রোযা রাখলেন। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে এ কথাও জানা যায় যে হযরত সাইয়্যেদা ফাতেমার কথাই ঠিক। গতকালই ছিল মাহে রমজানের প্রথম দিন। একথা দিবালোকের ন্যায় সমুজ্জ্বল সে কুতুবে রাব্বানী পীরে দাস্তেগীর হযরত শাহ মুহিউদ্দীন সাইয়্যেদ আবু মোহাম্মাদ আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) ছোটবেলা হতেই একটু ভিন্ন প্রকৃতির ছিলেন। বর্তমান যুগের ছেলেদের মত হৈ হুল্লার মধ্যে দিয়ে তিনি কাটাতেন না। তাকে দেখা যেত চুপচাপ বসে কি যেন ভাবতেন।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তিনি নিরিবিলি থাকা পছন্দ করতেন। পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে, রূহানী জগতের খাঁটি প্রজ্ঞাদাতা হযরত আবদুল কাদের জিলানী সাহেবের (রঃ) মাতা খুবই পরহেজগার ছিলেন। তার মাতা সর্বদা কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন। এমন দেখা গেছে একটু সময় পেলেই তিনি কোরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন তখন সত্যের সৈনিক আওলীয়াকুলের শিরমণি হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) পাশে বসে শুনতেন। প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ শুনলে অবাক হবেন, হ্যাঁ অবাক হবার কাথাও।
মায়ের কোরআন তিলাওয়াত শুনেই তিনি পাঁচ বছর বয়েসের সময়ই মহাগ্রন্থ আল কোরআনের আঠারো পারা মুখস্ত করে ফেলেন। একথা বাস্তব সত্য কথা যে হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) যে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হবেন, জগত মাঝে যে তাঁর সুনাম সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে ইতিহাসের পাতায় যে তাঁর নাম সোনালী অক্ষরে লেখা থাকবে এইসব আলামত তাঁর শিশু জীবন হতেই প্রকাশ পেয়েছিল। প্রিয় পাঠক-পাঠিকাগণ! একটু চিন্তা করে দেখুন আওলিয়া জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) যে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হবেন তা উক্ত কাহিনীতেই সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছিল।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রঃ) – পর্ব ৫ পড়তে এখানে ক্লিক করুন