বুড়ো হুজুর

এখন যে ঘটনাটি আমি আপনাদের কাছে শেয়ার করছি সেটি আমাদের নিজ গ্রামের ঘটনা। গভীর রাত। চারপাশে শুধু সুনসান নিরবতা। কোথাও কোন জন-মানুষের সাড়া শব্দ নেই। আর ঠিক সে সময় শোনা গেল ঘোড়া খুরের সেই টগবগ টগবগ আওয়াজ। গ্রামের মানুষ বুঝতে পারে ঘোড়ায় চড়ে কেউ একজন গ্রামে এসেছে। কিন্তু এতো রাতে কে আসে কেউ তা বুঝতে পারতো না। কিন্তু এক সময় গ্রামের কিছু মানুষ তাকে দেখতে পায়। দেখে লম্বা জুব্বা পড়া মাথায় কালো পাগড়ি বাঁধা আর মুখে লম্বা দাড়িওয়ালা তিনজন লোক।

আসে ধূসর রঙ্গের একটি ঘোড়ায় চরে। তখন মানুষের মাঝে পশ্ন জাগে কে তিনি আর কেনই বা এই গভীর রাতে এই গ্রামে আসে। তাকে দেখা যেতো প্রতি বৃহস্পতি বার গভীর রাতে। এবং তাকে দেখেছে এমন লোকের সংখ্যা আমাদের গ্রামে ৫০ এর উপরে হবে। এর মধ্যে আমার কয়েকজন নিকট আত্মীয় ও আছে। আর এমন দুজন অত্মীয়র মুখ থেকে শুনা কথা আপনাদের কাছে শেয়ার করছি। প্রথম:- আজ থেকে ১৫ বছর আগের কথা। আমার এক বড় ভাই ছিল নাম তার কাশেম। আমাদের বাড়ির সামনে রাস্তার পাশের ছিলো ছোট্ট একটি কাছারি ঘর। আর সেই ঘরে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে থাকতো কাশেম ভাই। একদিন গভীর রাতে তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাহিরে গেলেন।
রাস্তার ধারে থাকা একটি নারিকেল গাছের পাশে বসে তিনি প্রসাব করতে লাগেন। ঠিক এমন সময় তিনি খেয়াল করেন দূর থেকে ঘোড়ার টগবগ টগবগ আওয়াজ তার কানে ভেসে আসছে। তিনি তখন রাস্তার উপর দাড়িয়ে সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। এমন সময় লক্ষ্য করলেন ঘোড়ায় চড়ে কেউ একজন এদিকে আসছে। তিনি তখন আবার চুপ করে নারিকেল গাছের পাশে গিয়ে বসে থাকলেন। এক সময় লোকটি ঘোড়ায় চড়ে তার সামনে দিয়ে চলে গেল। পরে তিনি দ্রুত ঘরে চলে আসলেন।সেদিন রাতে তিনি স্বপ্ন দেখেন কেউ একজন তাকে বলছে এই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য।কিন্তু পরদিন সকালে এই ঘটনা তিনি সবাইকে বলেন।

দ্বিতীয়:- ২০০৬ সালের ঘটনা। আমাদের গ্রামের এক ছেলে নাম সাহিদ। প্রায় সময় সে গ্রামের দোকানে ক্যারাম খেলে রাত করে বাড়িতে ফিরতো। একদিন চাঁদনী প্রসর গভীর রাতে দোকান থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে সে লক্ষ্য করে মসজিদের পাশে থাকা বৈদ্যুতিক খাম্বাটির মধ্যে একটি ঘোড়া বাঁধা আছে। এতো রাতে এখানে ঘোড়াটিকে বাঁধা দেখে সে কিছুটা অবাক হলেন। মসজিদের একপাশে একটি জানালা খোলা ছিলো। সে তখন সাহস করে মসজিদের ভেতর কি আছে দেখতে চাইলো। দেখে মসজিদের ভেতর সাদা জুব্বা পড়া একজন লোক নামাজ পড়ছে। ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মাঝে ও তাকে স্পর্শ দেখা যাচ্ছে। আর চারদিকটা যেন আলোয় ভরে আছে। যা দেখে সে ভয় পেয়ে গেলো। সে তখন কোন শব্দ না করে জানালার পাশ থেকে এসে বাড়ির দিকে রওনা হল। কিছু দূর যাওয়ার পরে সে পিছনের দিকে তাকালেন। দেখে তার থেকে একটু দূরে জুব্বা পড়া সে লোকটি দাঁড়িয়ে আছে। সে তখন ভয়ে দৌড় দিয়ে বাড়িতে চলে আসে। তাকে ও রাতে স্বপ্ন দেখালো এই ঘটনা কাউকে না বলতে। কিন্তু সকালে এই ঘটনা সে সবাইকে বলে দেয়। তবে অবশ্যই গত পাঁচ বছর ধরে কেউ তাকে দেখেছে এমন কথা শুনা যায়নি।

[বি:দ্র:-আজ থেক বহু বছর আগে আমাদের গ্রামে বুড় হুজুর নামের একজন বুজুর্গ আলেম ছিলো। গ্রামে সবাই তাকে খুব ভক্তি শ্রদ্ধা করতো। আর লোকের মুখে শুনা যায় বুড় হুজুরের সাথে ছিল নুরুল ইসলাম নামের এক জ্বীন। বুড় হুজুর যেদিন মারা যায় সেদিন ছিলো বৃহস্পতি বার দিবাগত রাতে আর তাকে দাপন করা হয় মসজিদের পাশে। এখন তার কবরের উপর উঠেছে মস্ত বড় এক আম গাছ। কেউ ঐ আম গাছের উপর উঠেনা। গ্রামের মানুষের ধারনা ঘোড়ায় চড়ে আসা লোকটি বুড় হুজুর হবে। তবে ভিন্ন মত ও আছে কারো মতে উনি হল বুড় হুজুরের সে জ্বীনটি। যে কিনা আজো বেঁচে আছে পৃথিবীর মাঝে।]

★ কোথায় গেল মেয়েটি? ★

অতিথি সেবা বা মেহমানদারি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *