বিয়ে একটা মজার জিনিষ
শরীয়তের বিধানগুলো এত সহজ এবং পরিচ্ছন্ন যে ওহী নাযিল নাও হতো তবু একজন স্বচ্ছ অন্তরের অধিকারী এ বিধানগুলো চিনতে পারতো যে এগুলোই আল্লাহর আইন। যারা এ বিধানগুলো চিনতে পারে না তাদের জীবন বিপর্যয় আসে।
এক হাফেজ সাহেব তার ছাত্রদেরকে খুব মার-ধর করতেন। ছাত্ররা ভাবলো এ হাফেজ সাহেবের বিয়ে করানো উচিৎ। সবাই এক জোট হয়ে হাফেজ সাহেবের সামনে বলাবলি করতে লাগলো, বিয়ে খুব মজার জিনিষ।
বিয়ে খুব মজার জিনিস হওয়ার জন্যে ছাত্রদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোরা যে বলিস বিয়ে খুব মজার জিনিস – সত্যি কি তাই?
ছাত্ররা সবাই একযোগে বলে উঠলো, হ্যাঁ, হুযুর, বিয়ে খুব মজার জিনিষ।
হাফেজ সাহেব অনেক চেষ্টা করে একটা মেয়েকে বিয়ে করলেন।
রাত্রে যখন মেয়েটি তাতে বাসর ঘরে আগমন করলো তখন তিনি মেয়ের গাঁয়ে রুটি ছুয়ায়ে খেতে লাগলেন। কিন্তু তাতে কোন মজা পেলেন না।
হাফেজ সাহেব পরদিন ছাত্রদের কাছে গিয়ে বললেন, তোরা বললি, বিয়ে খুব মজার জিনিস- আমি রুটি ছুয়ে খেয়ে দেখলাম। কোন মজা পেলাম না।
ছাত্ররা বলল, মারত হয় হুযুর, মারতে হয়। মারলে মজা পাওয়া যায়।
পরদিন রাত্রে হাফেজ সাহেব মেয়েটিকে খুব মারলেন। এতে মারলেন যে, পাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। লোকজন ছুটে এসে হাফেজ সাহেবকে খুব লাগালাগি করলো। হাফেজ সাহেব বিপদে পড়ে গেলেন। মজা কিছুই পেলেন না।
শুধু গালাগালি আর অপমানে তার গা কাঁপতে লাগলো, অতঃপর তিনি সব আশা ছেড়ে দিয়ে মুখ ভার করে বসে ভাবতে লাগলেন।
এ অবস্থা দেখে এক ব্যক্তির দয়া হলো। সে তাকে সাহায্য করলো। হাফেজ সাহেবের কাছে গিয়ে তার কানে কানে বিয়ের মজার বিষয়টি বুঝিয়ে দিল।
পরের রাত্রে হাফেজ সাহেব স্ত্রীর কাছে গেলেন। আজ তিনি বিবাহের অনুযায়ী আমল করলেন। দেখলেন সত্যি খুব মজার! দেহ যেন আনন্দের ঢেউ খেলে গেছে।
এ ঐশ্বরিক বিধান দেখানোর জন্য ওহী এসে মানুষকে সাহায্য করেছে, কারণ সব মানুষের অন্তর এত পরিষ্কার নয় যে সে নিজে সঠিক বিষয় বুঝে নিতে পারবে। মানুষ তার জীবনের প্রতিটি কাজে এ ওহীর অনুসরণ করে এক বেহেশতী স্বাদ উপভোগ করতে পারে। যা রাসূল (সাঃ) এর সুন্নত পালনের মাধ্যমে সম্ভব হয়।
(আল-এফাযাতুল য়্যাওমিয়্যাহ, খণ্ড-২ পৃষ্ঠা-২৭৩)