বনু কায়নুকার ঘটনা – শেষ পর্ব

বনু কায়নুকার ঘটনা – ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আপনি বলিয়া দিন, আমি কি তোমাদিগকে সেই পন্থা বলিয়া দিব, যাহা প্রতিদান প্রপ্তি হিসাবে উহা হইতেই যাহাকে তোমরা মন্দ বলিয়া জান আল্লাহর নিকট অধিক নিকৃষ্ট! তাহা ঐ সমস্ত লোকদের পন্থা, যাহাদের প্রতি আল্লাহ অভিসস্পাত করিয়াছেন এবং যাহাদের প্রতি ক্রোধান্বিত হইয়াছেন এবং যাহাদের কতককে তিনি বানর ও শূকরে রুপান্তরিত করিয়া দিয়াছেন এবং তাহারা শয়তানের আরাধনা করিয়াছে, তাহারাই মর্যাদার দিক দিয়া নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ হইতেও বহুদূরে।

যখন তাহারা তোমাদের নিকট আগমন করে, তখন বলে, আমরা ঈমান আনিয়াছি, অথচ তাহারা কুফরই লইয়া আসিয়াছিল এবং কুফরই লইয়া চলিয়া গিয়াছে, এবং আল্লাহ তো খুবই জানেন, যাহা ইহারা গোপন করিত। আর আপনি তাহাদের মধ্যে এমন অনেক লোক দেখিতেছেন, যাহারা দৌড়াইয়া দৌড়াইয়া পাপ এবং যুলুম এবং হারাম ভক্ষণে নিপতিত হইতেছে, বাস্তবিকই তাহাদের এই কার্য মন্দ। তাহাদিগকে আল্লাহওয়ালাগণ এবং আলেমগণ পাপের কথা হইতে এবং হারাম মাল ভক্ষণ করা হইতে কেন নিষেধ করিতেছে না? বাস্তবিকই তাহাদের এই অভ্যাস নিন্দনীয়।

আর ইহুদীরা বলিল, আল্লাহর হাত বন্ধ হইয়া গিয়াছে, তাহাদেরই হাত বন্ধ এবং তাহাদের এই উক্তির দরুন তাহারা রহমত হইতে বিদূরিত হইয়াছে। বরং তাঁহার আল্লাহর ত উভয় হাত উন্মুক্ত, যেরুপে ইচ্ছা ব্যয় করেন, আপনার পালনকর্তার পক্ষ হইতে আপনার প্রতি যে কালাম অবতীর্ণ হইয়াছে, উহার দরুন তাহাদের মধ্যে অনেকের নাফরমানী ও কুফুর বৃদ্ধি পাইবে এবং আমি তাহাদের পরষ্পর মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঢালিয়া দিয়াছি, তাহারা যখনই মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাগ্নি প্রজ্জ্বলিত করে আল্লাহ তাহা নির্বাপিত করিয়া দেন। এবং তাহারা ভূপৃষ্টে অশান্তি ছড়াইয়া বেড়ায়, আর আল্লাহ তায়ালা অশান্তি বিস্তারকারীদিগকে ভালবাসেন না।

আর এই আহলে কিতাব ইহুদী-নাসারা গণ যদি ঈমান আনিত এবং তাকওয়া অবলম্বন করিত তবে আমি অবশ্যই তাহাদের সমস্ত অন্যায় ক্ষমা করিয়া দিতাম এবং অবশ্যই তাহাদিগকে শান্তির উদ্যানসমূহে দাখিল করিতাম। আর যদি ইহারা তাওরাত ও ইঞ্জীলের এবং যে কিতাব অর্থাৎ কোরআন তাহাদের রব্বের পক্ষ হইতে তাহাদের প্রতি নাযিল করা হইয়াছে, উহার উপর যথারীতি আমলকারী হইত তবে তাহার উপর অর্থাৎ আসমান হইতে অর্থাৎ জমিন হইতে ভক্ষন করিত।

ইহাদের একদল কার্যকলাপ অতি জঘন্য। হে রাসূল, যাহা কিছু আপনার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে আপনার প্রতি নাযিল করা হইয়াছে, আপনি মানুষকে সব কিছু পৌছিয়া দিন, আর যদি এইরুপ না করেন, তবে যেন আপনি আল্লাহর একটি পয়গাম পৌছান নাই। আর আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মানুষ অর্থাৎ কাফের হইতে রক্ষা করিবেন।

হযরত ওবায়দাহ ইবনে সামেত (রাঃ) বলেন, বনু কায়নুক’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সহিত যুদ্ধ আরম্ভ করিলে মুনাফিক আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুল তাহাদের পক্ষ অবলম্বন করিল এবং তাহাদের সাহায্যে জন্য দাঁড়াইয়া গেল।

বনু আওফ গোত্রের হযরত ওবায়দাহ ইবনে সামেত (রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এর ন্যায় বনু কায়নুকা এর মিত্র ছিলেন, তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ) এর খেদমতে উপস্থিত হইয়া বনু কায়নুকা এর সহিত তাঁহার মিত্রতা বর্জন ও আল্লাহ ও তাঁহার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালামের সহিত মিত্র স্থাপনের কথা প্রকাশ করিয়া বলিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমি আল্লাহ ও তাঁহার রাসূল ও মুসলমানদিগকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করিলাম এবং এই সকল কাফেরদের বন্ধুত্ব ও তাহাদের সহিত সম্পর্কে ছিন্ন করিলাম। অতএব হযরত ওবায়দাহ (রাঃ) ও আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের প্রসঙ্গে সূরা মায়েদার পূর্বোল্লিখিত আয়াতসমূহ নাযিল হইয়াছে।

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

বনু কায়নুকার ঘটনা – প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।