ফেরাউনের পরাজয়ের পর – শেষ পর্ব
ফেরাউনের পরাজয়ের পর – পর্ব ৬ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অনন্তর ফেরাউন সম্প্রদায়ের লোকেরা এ পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়ে বনী ইসরাইলীদের সাথে একত্রে বসে আহার করতে চাইল। তারা এতেও বাধা দিল না বরং তাদের সাথে বসে আহার করতে অনুমতি দিল। কিন্তু আহারের সময় বনী ইসরাইলীরা যে লোকমা মুখে দিত তা কোন পরিবর্তন হত না। কিন্তু ফেরাউনের লোকেরা যখন লোকমা মুখে দিত তা কোন পরিবর্তন হয়ে যেত। আবার উভয় সম্প্রদায়ের লোকেরা যখন একই গ্লাসে পানি পান করতে গিয়ে বনী ইসরাইলীরা যে পানি টুকু পান করত তা অতি সহজে পান করতে পারত। পানিতে কোন পরিবর্তন আসত না। আর ফেরাউনের লোকেরা একই গ্লাসে হতে পানি মুখে দিত তখন তা রক্তে পরিণত হয়ে গলায় আটকিয়ে যেত। এভাবে সাত দিন পর্যন্ত ক্রমাগত এ আযাব চলতে থাকল।
অবশেষে তারা চিৎকার করে হযরত মূসা (আ) এর কাছে উপস্থিত হল। তারা হযরত মূসা (আ)-এর সামনে জোড়হাত করে দাঁড়িয়ে অনুনয় বিনয় সহকারে বলল এবার আমরা পাকাপোক্ত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আযাব হতে মুক্তি পেলে অবশ্যই ঈমান আনব। এতে সামান্য ব্যতিক্রম হবে না। হযরত মূসা (আ) আবার দোয়া করলেন। দোয়ার বরকতে তারা আযাব মুক্ত হল। কিন্তু তারা ঈমান তো আনলই না বরং পূর্বের ন্যায় ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে চলল।
কুরআনে কারীমে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে-
“তারা ঔদ্ধত্য ও অহংকার প্রদর্শন করেছে। তারা ছিল অপরাধী সম্প্রদায়।”
এবারও আল্লাহ্ পাক একমাস পর্যন্ত তাদের সুযোগ দিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কোন পরিবর্তন আসল না। একমাস পরে আল্লাহ্ পাক তাদেরকে অন্য একটি আযাবে লিপ্ত করলেন। তা ছিল শারীরিক রোগ সংক্রান্ত আযাব। প্লেগ ও বসন্ত প্রভৃতি রোগ সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ল। এক বর্ননায় আছে যে, এসব মহামারীতে ফেরাউন সম্প্রদায়ের প্রায় সত্তর হাজার লোক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। ব্যাপক হারে জনসাধারণের মৃত্যু দেখে সম্প্রদায়ের বড় বড় নেতারা আতঙ্কিত হয়ে উঠল। তারা হযরত মূসা (আ) পুনরায় দোয়ার আবেদন করল। হযরত মূসা (আ) দোয়া না করে থাকতে পারলেন না। তারা যদি মরে যায় তবে দাওয়াত দেবেন কাকে? এসব কিছু ভেবে তিনি দোয়া করলেন। আল্লাহ্ পাক এবারও তার দোয়া কবূল করলেন এবং আযাব উঠিয়ে নিলেন। কিন্তু তারা ঈমান আনল না বরং মূসা (আ)-এর শত্রুতায় লিপ্ত হয়ে পড়ল।