পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- শেষ পর্ব
পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- ৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
হযরত ছোলায়মান (আঃ) একথা শুনে দাড়ালেন। তখন পিঁপড়ে রাজ তাঁর লস্করদের নাস্তা দেওয়ার জন্য হুকুম দিল। অমনি তারা একখানা ভাজী ফড়িং এর ঠ্যাং নিয়ে আসল। হযরত ছোলায়মান (আঃ) তা দেখে একটু হাসলেন। পিপীলিকা রাজ তখন বলল, হুজুর! আপনি হাসছেন কেন? ক্ষুদ্র খাদ্য দ্রব্য অনেক সময় বরকতে পূর্ণ হয়ে অনেক মানুষকে পরিতৃপ্তি দান করতে পারে। আর বিশাল খাদ্য স্তূপ অনেক সময় শুধু একটি মাছের খাদ্য হিসাবে যথেষ্ট হয় না। এগুলো সবই আল্লাহ তায়ালার নিয়ন্ত্রাণাধীন বিষয়। অতএব আপনি আপনার লোক-লস্করসহ বিসমিল্লাহ বলে মুখে দিন। আল্লাহ এতেই বরকত দান করবে। হযরত ছোলায়মান (আঃ) ফড়িং এর ঠ্যাং এর থেকে একটু সামান্য অংশ নিয়ে মুখে দিলেন।
তিনি অনুভব করলেন এ বিচ্ছন্ন অংশটি অনেক বড় হয়ে তাঁর হাতে উঠেছে। মুখে নিলে আরও বড় আকার ধারন করেছে। যখন তিনি গিলে ফেললেন তখন তাঁর পেট পরিপূর্ণ হয়ে গেল। তখন তিনি তাঁর সঙ্গীয় সৈন্য, লোক-লস্কর ও আমির – ওমারাহণকে একটু অংশ নিয়ে খেতে বললেন, সকলেই এক চিমটি কাবাব খেয়ে পরিতৃপ্ত হলে। দ্বিতীয় বার আর কেউ সামান্য খেতে উদ্দত হল না। কয়েক হাজার মানুষ এভাবে খাবার কাজ সমাধা করল তাতে দেখা গেল ফড়িং এর ঠ্যাং এর এক-চতুর্থাংশ মাত্র শেষ হয়েছে। হযরত ছোলায়মান (আঃ) পিপীলিকা রাজার সাথে আলাপ করা এবং আতিথেয়তা গ্রহণ ইত্যাদি সব কিছুই আল্লাহ তায়ালার এক অপূর্ব পরীক্ষা বলে মনে করলেন। পিপীলিকা রাজের সাথে সাক্ষাৎকারের পর তিনি বাকি জীবনে কোন দিন আর হাসি-খুশি ও আনন্দ ফুর্তির মধ্যে মুহূর্তকাল সময় কাটান নি।
রাজ্যের অধিকাংশ কার্যাদী বন্টন করে দিয়ে নিজে এবাদাত খানায় সেজদায় পড়ে কেঁদে কাটাতেন এবং দিনের নির্দিষ্ট একটি সময় মানুষকে দিনের তালিম দিতেন। তাবলীগ ও হেদায়াতের উদ্দেশ্যে সপ্তাহে দুবার সিংহাসনে ভ্রমণে বের হতেন। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর মন্ত্রী ছিলেন একজন জীন। তাঁর নাম ছিল আসফ। হযরত ছোলায়মান (আঃ) এর বিশেষ অনুগত ছিলেন। বুদ্ধি, জ্ঞান ও বিদ্যায় ছিলেন দরবারের সকলের চেয়ে উপরে। তাই হযরত ছোলায়মান (আঃ) তাকেই প্রধানমন্ত্রী পদ দান করেন।