পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- ৩য় পর্ব

পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

হযরত ছোলায়মান (আঃ) পিপীলিকা রাজার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তাঁর বাক শক্তি বোধ হয়ে গেল।  তিনি এ সমস্ত কথার কোন জবাব দিতে পারলেন না। শুধু এতটুকু বললেন, ভাই পিপীলিকা রাজ ! তোমার দৃষ্টিতে আমার কি ক্রুটি-বিচ্যুতি আছে তা আমাকে বলে দাও। পিপীলিকা রাজ বলল, আমার কথায় আপনি বেজার হয়ে গেছেন বটে। তবে আপনাকে উচিত কথা বলার ওয়াদা দিয়েছি। তাই আপনাকে নির্দ্বিধায় কথাগুলো বলতে হবে। আপনাকে আল্লাহ তায়ালা যে বেহেস্ত আংটি দান করেছেন, তাঁর বরকতে আপনি পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত সমগ্র পৃথিবীর উপর রাজত্ব করে যাচ্ছেন। জীন-পরী, মানব-দানব, পক্ষী ও আগুন বাতাসের উপর প্রভুত্বয়ের অধিকার লাভ করেছেন। সর্বোপরি বিশাল রাজত্ব ও নবুয়তী দুটি সর্বশ্রেষ্ট সম্মানের অধিকারি হয়েছেন। এগুলো আংটির দৌলতে আপনি লাভ করেছেন। আপনার ব্যক্তিগত কোন যোগ্যতায় এ সমস্ত আপনি লাভ করেন নি। সবই আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত সে আংটির বরকতে লাভ করেছেন। যদি এই আংটি আপনার হাত থেকে নিয়ে নেওয়া হয় তখন আপনার এ প্রভুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব কিছুই থাকবে না। অতএব সে সময়ের কথা স্মরণ করে আল্লাহর দরবারে যে পরিমাণ শোকর –গুজারি কর উচিৎ, তা সম্পর্ন হচ্ছে না। 

এরপরে বাতাসকে আল্লাহ তায়ালার আপনার অধিন করে দেয়ার তাৎপর্য হল বাতাস দেখা যায় না। ধরা যায় না শুধু তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করা যায় মাত্র। এভাবে এক আকৃতি বিহীণ শক্তিকে আপনার অধিক করে দেয়ার মাধ্যমে আপনাকে এ শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে যে, সমস্ত শক্তি, দম্ভিকতা ও জৌলুসের বড়াই ভিত্তিহীন। সব কিছুর মূল্য অনুসন্ধান করে দেখা যাবে সব কিছু আকৃতি বিহীন, বাতাস সতুল্য। মৃত্যুর পর পার্থিক সব কিছুকে বাতাসের ন্যায় মনে হবে। 

কিছু দেখা যাবে না। স্পর্শ কর যাবে না শুধু অনুভব করা যাবে মাত্র। এ সমস্ত কথা শুনে হযরত ছোলায়মান (আঃ) পিপীলিকা রাজকে মাটিতে রেখে নিজ পথ চলতে আরম্ভ করলেন। তখন পিপীলিকা রাজ বলল, হে আল্লাহর খলিফা! আপনি গরীবদের দ্বারে এসে খালি মুখে যাবেন, তা হয় না। আপনি দয়া করে কিছু মুখে দিয়ে যান।   

পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

বুল ডগের ছানা !

লজ্জা – ঘৃণা – ভয় এই তিন থাকতে নয় ।। আব্বুর এই কথাগুলো শুনে মনে…

প্রকৃত বন্ধু–সৈয়দ হোসেন মাহমুদ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছে। হঠাৎ এক পশলা গুলি ছুটে এল শত্রুপক্ষের দিক থেকে। এক সৈন্য কোন…

নির্বোধ

ভোর থেকে ধরণীর প্রাণ খোলা বুকে সাজ সাজ ভাব। সূর্য ঊঠেছে সকালের স্নিগ্ধতার সাথে। সমুদ্রের…

পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- ৩য় পর্ব

পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- ২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

হযরত ছোলায়মান (আঃ) পিপীলিকা রাজার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলেন। তাঁর বাক শক্তি বোধ হয়ে গেল।  তিনি এ সমস্ত কথার কোন জবাব দিতে পারলেন না। শুধু এতটুকু বললেন, ভাই পিপীলিকা রাজ ! তোমার দৃষ্টিতে আমার কি ক্রুটি-বিচ্যুতি আছে তা আমাকে বলে দাও। পিপীলিকা রাজ বলল, আমার কথায় আপনি বেজার হয়ে গেছেন বটে। তবে আপনাকে উচিত কথা বলার ওয়াদা দিয়েছি। তাই আপনাকে নির্দ্বিধায় কথাগুলো বলতে হবে। আপনাকে আল্লাহ তায়ালা যে বেহেস্ত আংটি দান করেছেন, তাঁর বরকতে আপনি পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রান্ত সমগ্র পৃথিবীর উপর রাজত্ব করে যাচ্ছেন। জীন-পরী, মানব-দানব, পক্ষী ও আগুন বাতাসের উপর প্রভুত্বয়ের অধিকার লাভ করেছেন। সর্বোপরি বিশাল রাজত্ব ও নবুয়তী দুটি সর্বশ্রেষ্ট সম্মানের অধিকারি হয়েছেন। এগুলো আংটির দৌলতে আপনি লাভ করেছেন। আপনার ব্যক্তিগত কোন যোগ্যতায় এ সমস্ত আপনি লাভ করেন নি। সবই আল্লাহ তায়ালার প্রদত্ত সে আংটির বরকতে লাভ করেছেন। যদি এই আংটি আপনার হাত থেকে নিয়ে নেওয়া হয় তখন আপনার এ প্রভুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব কিছুই থাকবে না। অতএব সে সময়ের কথা স্মরণ করে আল্লাহর দরবারে যে পরিমাণ শোকর –গুজারি কর উচিৎ, তা সম্পর্ন হচ্ছে না। 

এরপরে বাতাসকে আল্লাহ তায়ালার আপনার অধিন করে দেয়ার তাৎপর্য হল বাতাস দেখা যায় না। ধরা যায় না শুধু তাঁর অস্তিত্ব অনুভব করা যায় মাত্র। এভাবে এক আকৃতি বিহীণ শক্তিকে আপনার অধিক করে দেয়ার মাধ্যমে আপনাকে এ শিক্ষা প্রদান করা হয়েছে যে, সমস্ত শক্তি, দম্ভিকতা ও জৌলুসের বড়াই ভিত্তিহীন। সব কিছুর মূল্য অনুসন্ধান করে দেখা যাবে সব কিছু আকৃতি বিহীন, বাতাস সতুল্য। মৃত্যুর পর পার্থিক সব কিছুকে বাতাসের ন্যায় মনে হবে। 

কিছু দেখা যাবে না। স্পর্শ কর যাবে না শুধু অনুভব করা যাবে মাত্র। এ সমস্ত কথা শুনে হযরত ছোলায়মান (আঃ) পিপীলিকা রাজকে মাটিতে রেখে নিজ পথ চলতে আরম্ভ করলেন। তখন পিপীলিকা রাজ বলল, হে আল্লাহর খলিফা! আপনি গরীবদের দ্বারে এসে খালি মুখে যাবেন, তা হয় না। আপনি দয়া করে কিছু মুখে দিয়ে যান।   

পিপীলিকার রাজার সাথে আলোচনা- শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Written By

More From Author

You May Also Like

মুগীরা ইবন শু’বা (রা)

নাম আবু আবদিল্লাহ মুগীরা, পিতা শু’বা ইবন আবী আমের। আবু আবদিল্লাহ ছাড়াও আবু মুহাম্মাদ ও…

সাপের তওবা

একটি সাপের ঘটনা বর্ণনা করছি। আমার কাছে যারা তালীম গ্রহন করতে আসে প্রথমেই আমি কাউকে…

আবদুল্লাহ ইবন হুজাফাহ আস-সাহমী-(রা)

আবু হুজাফাহ আবদুল্লাহ নাম। পিতার নাম হুজাফাহ। কুরাইশ গোত্রের বনী সাহম শাখার সন্তান। ইসলামী দাওয়াতের…