পিতা ও পুত্রের মিলন (হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনী)-২য় পর্ব
পিতা ও পুত্রের মিলন (হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনী)-১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন
স্তৃপকৃত যে সমস্ত মিথ্যা কথা এ যাবত বলেছি আল্লাহ্ তা’য়ালা যদি মাফ না করেন তবে নিকৃষ্ট পাপীদের অন্তর্ভূক্ত হব। অতএব আপনি আমাদের কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহ্র দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। ইউসুফ (আঃ)- সম্বন্ধে বিস্তারিত সংবাদ বলার সময় এখন নাই। প্রথমে মিশর চলুন পরে সব কিছু জানতে পারবেন।
হযরত ইয়াকুব (আঃ) আর বাক্য ব্যয় না করে তিনি নিজ ঘরে গিয়ে সজোরে বললেন, তোমরা সকলে অতি সত্বর প্রস্তুর হও। এখনই মিশর গিয়ে ইউসুফকে প্রাণ ভরে একবার দেখব। এমন সময় পুত্রবধূ বলে উঠল আব্বা, আপনি যে অন্ধ, ইউসুফকে কিভাবে দেখবেন? পুত্র বধূর কথা শুনে হযরত ইয়াকুব (আঃ)-চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠলেন। এমন সময় ছিলজাস এসে বলল, পিতা! আপনি চিন্তা করবেন না। ইউসুফ আমাকে একটি জামা দিয়েছে, সে ওটা আপনার চোখে লাগাতে বলেছে। তাতে নাকি আপনার অন্ধত্ব দূর হয়ে যাবে।
হযরত ইয়াকুব (আঃ)- ছিলজাসের নিকট থেকে তাড়াতাড়ি জামাটা নিলেন এবং একাধারে চোখে মুখে লাগাতে আরম্ভ করলেন। রহমতের খেলা, অল্প সময়ের মধ্যে হযরত ইয়াকুব (আঃ)-এর চোখে আবরণ দূরীভূত হয়ে গেল তিনি দীর্ঘ ত্রিশবছর পরে পুনরায় সবুজ, শ্যামল ধরণীর বিচিত্রময় দৃশ্য অবলোকন করে তন্ময় হতে রইলেন। দেশের আপন পর সব ধারণের লোক এসে ভীড় জমিয়ে ফেলল। হযরত ইয়াকুব (আঃ)- সকলকে দেখলেন এবং আনন্দের আতিশর্যে চিৎকার দিয়ে বলেন, তোমরা সবাই আমার ইউসুফ কে দেখতে চল । ইউসুফ আজ আর সেই বালক নয় সে আজ বিশাল মিশর রাজ্যের অধিনায়ক। তোমরা সকলে তৈরি হয়ে এস।
হযরত ইয়াকুব (আঃ) ইউসুফের প্রেরিত জামাটি শুধু চোখে লাগালেন না। বরং সারা শরীরে জামাটি ভাল করে রগড়াতে আরম্ভ করলেন। ফলে তাঁর শুধু চোখ নয় সারা শরীরের এবং বার্ধক্য জনিত দুর্বলতা ও সকল মলিনতার ছাপ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সম্পূন্য দূরীভূত হয়ে গেল। অনেক লোক এসে প্রথমে তাঁকে চিনতেই পারেনি।
সূত্রঃ কুর আনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী
পিতা ও পুত্রের মিলন (হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কাহিনী)-৩য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন