পতিতালয়ে এক বুজুর্গের পদার্পন
আমি এক বিখ্যাত বুজুর্গের মুখে শুনেছি, এক বুজুর্গ একদিন এক পতিতার সাক্ষাত পেয়ে তাকে বললেন, আজ এশার নামাজের পর আমি তোমার ঘরে যাব। বুজুর্গের প্রস্তাব শুনে সে বেশ প্রীত হল, এত বড় বুজুর্গ তার ‘খদ্দের’ হয়ে তার ঘরে আসবেন এটা কল্পনা করে তার খুশীর আর সীমা রইল না। ঘটনা যে শুনল সে অবাক হল।
সন্ধার পর সাজ-গোজ করে বুজুর্গের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। তিনি যথাসময়ে পতিতার গৃহে পদার্পন করলেন, এবং সাথে সাথে দু’রাকাত নামায পড়ে ফিরে যেতে উদ্যত হলেন। মহিলা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি চলে যাচ্ছেন? বুজুর্গ মহিলার প্রতি তাওয়াজ্জুহ প্রদানপূর্বক বললেন, হ্যাঁ! আমার উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। সুতরাং আমি চলে যাচ্ছি। বুজুর্গের রুহানী তাওয়াজ্জু ঐ মহিলার উপর ক্রিয়া করল। সাথে সাথে সে তওবা করে নিজ উপার্জিত সমস্ত সম্পদ ত্যাগ করল। বুজুর্গ এক দরবেশের সাথে তার বিয়ে পড়িয়ে দিলেন এবং বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বুজুর্গ ওলীমার আয়োজন করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, ওলীমা হিসাবে শুধু রুটি তৈরী কর, তরকারীর কোন প্রয়োজন নেই।
শহরের এক ধনাঢ্য ব্যক্তি মহিলার নিয়মিত খদ্দের ছিল। তাকে কেউ গিয়ে খবর দিল যে, তোমার সে মহিলাটি তওবা করে ফেলেছে এবং এক দরবেশের সাথে তার বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর এখানে শুধু শুস্ক রুটি দ্বারা ওলীমার আয়োজন চলছে।
বিস্তারিত ঘটনা শুনে সে বুজুর্গকে অপমান করার উদ্দেশ্যে সংবাদ দাতার হাতে দু’বোতল মদ দিয়ে বলল, শায়েখকে আমার সালাম দিয়ে বলবে, ঘটনা শুনে আমি অত্যন্ত খুশী হয়েছি এবং এটাও জানতে পেরেছি যে, বিয়ের ওলীমায় শুধু রুটি প্রস্তুত করা হয়েছে। সুতরাং আমি দু’বোতল মদ পাঠিয়ে দিলাম। এটাকেই যেন তরকারী হিসেবে গ্রহণ করা হয়। কিন্তু শায়েখ কিছুমাত্র বিরক্ত না হয়ে বোতল দু’টি গ্রহণ করে সংবাদ দাতাকে বললেন- তুমি খুব দেরী করে ফেলেছ, এই বলে বোতল দুটি ভালো করে ঝাকিয়ে একটি পাত্রে ঢেলে খেতে লাগলেন।
সংবাদ দাতা বলেন, শায়েখ যখন বোতল থেকে মদ ঢালতে লাগলেন তখন আমি স্পষ্ট দেখলাম যে, বোতল হতে ঘি বের হচ্ছে এবং তার চমৎকার গন্ধে চারদিক মোহিত হচ্ছে। বুজির্গ আমাকেও আহারে শরীক করলেন।
জীবনে কখনো আমি এত সুস্বাদু ঘি দেখিনি। পড়ে সে এ ঘটনা ঐ ধনাঢ্য ব্যক্তির নিকট বর্ণনা করলে সে বিস্মিত হল এবং বুজুর্গের দরবারে এসে তওবা করে আল্লহ পাকের নাফরমাণী ত্যাগ করল।