নবী কারিম (সাঃ ) ও তাঁহার আহলে বাইত এবং হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রাঃ ) এর ক্ষুধা (সহ্য করা ) – ২য় পর্ব

নবী কারিম (সাঃ ) ও তাঁহার আহলে বাইত এবং হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রাঃ ) এর ক্ষুধা (সহ্য করা ) – ১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

অতঃপর হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) জবাইকৃত বকরীর অর্ধেক গোশত রান্না করিলেন এবং বাকি অর্ধেক ভুনিয়া লইলেন। খাবার তৈয়ার হইয়া গেলে হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) তাহা রাসূল (সাঃ) ও তাঁহার সঙ্গীদের সামনে রাখিলেন। নবী কারীম (সাঃ) সামান্য গোশত একটি রুটির উপর রাখিয়া বলিলেন, হে আবু আইয়ুব, ইহা ফাতেমাকে দিয়া আস। কারণ দীর্ঘদিন যাবত সে এরূপ খাবার পায় নাই। হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) তাহা হযরত ফাতেমা (রাঃ)কে দিয়া আসিলেন।

খাওয়া শেষ করিয়া পরিতৃপ্ত হওয়ার পর নবী কারীম (সাঃ) বলিলেন, রুটি গোশত, শুকনা, তাজা ও আধপাকা খেজুর এই পর্যন্ত বলিতেই নবী কারীম (সাঃ)-এর চক্ষুদ্বয় অশ্রুপূর্ণ হইয়া উঠিল। তারপর বলিলেন, সেই পাক যাতের কসম, যাঁহার হাতে আমার প্রাণ, এই সেই নিয়ামতরাজি যাহার সম্পর্কে কিয়ামতের দিন তোমাদিগকে জিজ্ঞাসা করা হইবে। সাহাবা (রাঃ)দের নিকট ইহা অত্যন্ত কঠিন মনে হইল।

রাসূল (সাঃ) বলিলেন, তবে তোমরা যখন এরূপ খাবার পাও তখন খাবারের প্রতি হাত বাড়াইবার সময় বিসমিল্লাহর বলিবে এবং তারপর যখন পরিতৃপ্ত হও তখন এই দোয়া পড়িবে- الحمد لله الذي هو أشبعنا وأنعم علينا فافضل অর্থঃ সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য যিনি আমাদিগকে পরিতৃপ্ত করিয়াছেন এবং আমাদিগকে নিয়ামত দান করিয়াছেন তো অনেক উত্তম দিয়াছেন।

এই দোয়া খাওয়ার সমপরিমাণ বদলা হইয়া যাইবে। অতএব কিয়ামতের দিন উহা সম্পর্কে আর জিজ্ঞাসাবাদ হইবে না।

তারপর নবী কারীম (সাঃ) সেখান হইতে উঠিবার সময় আবু আইয়ুব (রাঃ)কে বলিলেন, আগামীকাল সকালে আমার নিকট আসিও। নবী কারীম (সাঃ)-এর অভ্যাস মোবারক ছিল যে, কেহ তাঁহার প্রতি অনুগ্রহ করিলে তিনি তাহাকে উহার প্রতিদান দিতে পছন্দ করিতেন। হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) নবী কারীম (সাঃ)-এর কথা শুনিতে পান নাই। সুতরাং হযরত ওমর (রাঃ) তাহাকে বলিলেন, নবী কারীম (সাঃ) তোমাকে আগামীকাল তাঁহার নিকট আসিতে বলিতেছিলেন।

পরদিন হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) আসিলে নবী কারীম (সাঃ) তাহাকে নিজের বাদী দিয়া দিলেন এবং বলিলেন, হে আবু আইয়ুব, ইহার সহিত সদ্ব্যবহার করিও, কারণ আমাদের নিকট থাকাকালীন আমরা তাহাকে ভাল দেখিয়াছি।

হযরত আবু আইয়ুব (রাঃ) রাসূল (সাঃ)-এর নিকট হইতে উক্ত বাদীকে লইয়া আসিয়া ভাবিলেন, তাহাকে মুক্তিদান করাই রাসূল (সাঃ)-এর আদেশ পালনের উত্তম উপায় হইবে। অতএব তিনি তাহাকে মুক্ত করিয়া দিলেন। (তারগীব)

সূত্রঃ হায়াতুস সাহাবা

নবী কারিম (সাঃ ) ও তাঁহার আহলে বাইত এবং হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রাঃ ) এর ক্ষুধা (সহ্য করা ) – শেষ পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।