দ্বীনের পথে সংগ্রামী এক বোনের গল্প
একজন বোন। বিয়ের মাত্র এক বছর পর ডিভোর্স হয়ে যায়। আমাদের সমাজে একজন মেয়ের ডিভোর্স হয়ে যাওয়া মানে তো তাকে জীবিত অবস্থায় মৃত ঘোষনা করে দেয়া। চারিদিকের খোঁচা আর তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিই তাকে তিলে তিলে মেরে ফেলে।
কিন্তু আমার বন্ধুর এই বড় বোন ছিলেন একদমই ব্যতিক্রম। বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়াটাই তার দ্বীনের পথে আসার কারন হলো। মডার্ন লাইফ লিড করা এই আপু নিকাব ছাড়া আর বের হতেন না। শুরু করলেন কুরআন শুদ্ধকরন, এরপর হিফয করা।
বয়স হয়ে যাওয়ার পর কুরআন হিফয করা সোজা কথা নয়। এক লাইন মুখস্থ হলে দুই লাইন ভুলে যায়। কিন্তু হাল ছাড়েন নি তিনি। প্রায় ছয় বছরে শেষ হয় তার হিফয।
পুনরায় বিয়ের প্রস্তাব আসতো। কিন্তু কথাবার্তা পাকাপোক্ত হওয়ার আগেই ভেঙে যেত। বারবার এভাবে হতে হতে না হওয়া একটা মেয়ের জন্য কতটা কষ্টের এটা একজন ভুক্তোভুগি ছাড়া আর কারো বোঝার কথা না। কিন্তু এই বোন ছিলেন এ ব্যপারেও ব্যতিক্রম। প্রতিবারই তার মনে হত নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তার জন্য আরও উত্তম কাউকে রেখেছেন।
যেদিন তার হিফয শেষ হয়, সেদিন বা তার দু এক দিন পর তার জন্য একটি প্রস্তাব আসে। মদিনাতে থাকে ছেলে। হাফিয আলিম। অবিবাহিত হওয়া সত্বেও কোন একটি কারনে সে বিধবা বা ডিভোর্সি মেয়ে খুজছিলো। (কারনটা আমার ঠিক মনে নেই)
আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘ ছয় সাত বছরের এই একাকিত্বের কষ্ট অবশেষে শেষ হয়। বিয়ে হয় তার এই মদীনাবাসি বাঙালীর সাথে। দম আটকে আসা পরিবেশ থেকে তিনি উঠে আসেন এক জান্নাতী পরিবেশে। আজ তিনি তিন সন্তানের মা। এক মেয়ে, দুই ছেলে। গতকাল তার বড় মেয়ে হিফয শেষ করলো। হাফিযার মেয়ে হাফিযা।