দুনিয়ার সম্পর্ক

মোহাম্মদ বিন রাফে বলেন, একবার আমি সিরিয়ার রাজধানীর এক গলিতে এক যুবকের সাক্ষাৎ পেলাম, একটি লম্বা জুব্বা পরিহিত ঐ যুবকের হাতে ছিল একটি লাঠি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় যাচ্ছ? সে জবাব দিল, জানি না। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, কোথা থেকে এসেছ? সে বলল, আমার জানা নেই। যুবকের কথা শুনে আমার মনে হল, সে একটা বদ্ধ পাগল। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, তোমাকে কে সৃষ্টি করেছে? এ কথা শুনার সাথে সাথে তার দেহের রং পরিবর্তন হয়ে গেল। মনে হল যেন কেউ তার দেহে জাফরান ঢেলে দিয়েছে। সে বলল, এ মুহূর্তে যে আমার দেহের রং পরিবর্তন করেছেন তিনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি তাকে সান্তনা দিয়ে বললাম, তুমি ভয় পেয়োনা আমি কোন অপরিচিত ব্যক্তি নই। আমাকে তোমার ভাই মনে করতে পার। আমি তোমাকে বিরক্ত করব না। সে বলল আল্লাহর শপথ! যদি আমাকে লোকালয় হতে পৃথক হয়ে নির্জন বাসের অনুমতি দেয়া হত! তবে আমি এমন এক পাহাড়ের চুড়ায় চলে যেতাম, যেখানে আরোহণ করা মানুষের দুঃসাধ্য। অথবা কোন গুহায় আশ্রয় নিয়ে দুনিয়া হতে মুক্তি লাভ করতাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুনিয়ার প্রতি তুমি এত বিরক্ত কেন? সে বলল, প্রথম কারণ হল দুনিয়া আমাদেরকে একেবারে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু আমরা তা দেখতে পাই না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই দেখতে না পাওয়ার কোন চিকিৎসা আছে কি? সে বলল, ওটার চিকিৎসা বড় কঠিন।

একবার আমি বললাম, আমার ভেতর দুনিয়ার ভালবাসা এর ব্যাধি আছে, তার চিকিৎসা বল, সে হেসে বলল, তার চিকিৎসা তার চিকিৎসা খুব বড় কঠিন নয়। টাকাটা তরল বিষ পান কর এবং পরম ধৈর্যের সাথে যাবতীয় বালামুসীবত সহ্য কর। আমি আরজ করলাম, আমাকে এমন একটি আমল বলে দাও, যা দ্বারা আমি যেন আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে পারি, সে বলল, ভাই! আমি সকল ধরণের ইবাদতই করেছি। মানুষের সংশ্রব হতে পৃথক হয়ে নির্জন বাসই আমার নিকট বেশী উপকারী বলে মনে হয়। ক্বলবের যদি দশটি অংশ হয়, তবে এর নয়টি অংশ মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখে। আএ একটি অংশের সম্পর্ক হল দুনিয়ার সাথে সুতরাং যেই ব্যক্তি মানুষের সংশ্রব ত্যাগ করতে সক্ষম হল, সে যেন তার ক্বলবের দশ ভাগের নয় ভাগকেই নিয়ন্ত্রিত করতে পারল। একথা বলেই সে অদৃশ্য হয়ে গেল।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।