দাওয়াত
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আল্লাহর হাবীব (সাঃ) এশার নামাজের পর আমার হাত ধরে মক্কার কংকরময় মাঠের দিকে নিয়ে গেলেন। আমাকে এক স্থানে বসিয়ে আমার চতুর্দিকে একটি বৃত্ত অঙ্কন করে বললেন, তুমি এ বৃত্তের ভিতরেই অবস্থান করবে। কিছু লোক তোমার নিকটে আসবে, তাদের স্থানে কথা বলোনা। এ কথা বলে তিনি সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন। আমি বৃত্তের ভিতর থেকেই দেখতে পেলাম, কিছু লোক আনা-গোনা করছে। তারা দীর্ঘদেহী এবং চুল জট পাকানো। চুলের কারণে তাদের দেহের বর্ণ দেখা যাচ্ছে না। তারা আমার নিকটে এলেও বৃত্তের ভিতর প্রবেশ করতে পারত না। পরে তারা রাসূলে পাক (সাঃ) এর দিকে চলে গেল। রাতের শেষ ভাগে তিনি ফিরে এলেন। আমি তখনো ঐ বৃত্তের ভিতরেই বসা ছিলাম। প্রথমেই তিনি এসে বললেন, আজ রাতে আমি একটুও ঘুমায়নি। অতঃপর তিনি বৃত্তের ভিতর প্রবেশ করে আমার উরুর উপর পবিত্র মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। নিদ্রায় তার নাক ডাকার অভ্যাস ছিল।
রাসূল (সাঃ) আমার উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন, আমি আগের মতই বসে আছি। হঠাৎ তথায় সাদা পোশাক পরিহিত কিছু লোক দেখা গেল। তাদের দৈহিক সৌন্দর্য কত অধিক ছিল তা আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন। তারা বিভক্ত হয়ে রাসূলে কারীম (সাঃ) এর শিয়রে ও পায়ের দিকে উপবেশন করে বলল, আমরা এমন কোন লোক দেখিনি, যে এ নবীর মত গুণাবলীর অধিকারী হয়েছে। বিস্ময়কর ব্যাপার হল তাঁর চক্ষু নিদ্রিত দেখা যায় কিন্তু যায় তার অন্তর জাগ্রত থাকে। আমি বললাম তার একটি দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর। দৃষ্টান্ত, এক সরদার একটি প্রাসাদ নির্মাণ-পূর্বক এতে খানা পিনার আয়োজন করে লোকজনকে দাওয়াত দিল। যে ব্যক্তি দাওয়াত গ্রহণ করল সে পানাহার করল। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দাওয়াত প্রত্যখ্যান করল সে শাস্তি যোগ্য হল।
উক্ত আলোচনার পর আগন্তুকরা চলে গেলে রাসূল (সাঃ) ঘুম থেকে জেগে উঠে বলেন, তুমি জান তারা কে? এবং তারা কি বলল, আমি আরজ করলাম আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) ভাল জানেন, তারা ছিল ফেরেশতা এ উত্তর দানের পর তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন, তাদের বর্ণিত দৃষ্টান্তটি বুঝালে? আমি উত্তর দিলাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, সরদার হলেন রহমান। তিনি বেহেশত তৈরি করে তাতে মানুষকে দাওয়াত করেছেন। এখন যে ব্যক্তি ঐ দাওয়াত গ্রহণ করবে, সে জান্নাতে যাবে আর যে ব্যক্তি প্রত্যাখ্যান করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে শাস্তি দেবেন। (তিরমিজি শরীফ)