জ্বীনের বাদশা

আমার গল্প সব সাধারণ টাইপের। কঠিন ভয়ের কোন ভূতের অভিজ্ঞতা আমার নেই। তাই পাঠকদের প্রতি অনুরোধ কঠিন ভয় পেতে চাইলে দয়া করে অন্য গল্প পড়ুন ; )।
তবে একটা গ্যারান্টী দিতে পারি যে এই গল্পের প্রতিটি বর্ণনা ১০০% সত্যি। আপনারা আমার আগের গল্পটি পড়ে থাকলে অবশ্যই ভূত বিষয়ে আমার অতি আগ্রহ বা অতি ভয়ের বিষয়ে কিছুটা জানেন।
ছোট বেলা থেকেই আমার বই পড়ার অভ্যাস। ক্লাসের বই ছাড়া পৃথিবীর যে কোন বই পেলেই মোটামুটি হুমড়ি খেয়ে পড়ি। শেষ না হওয়া পর্যন্ত শান্তি নেই।
কোন কোন সময় দিনে ২টি বইও শেষ করে ফেলতাম। আর যদি সেটা হত রহস্য, গোয়েন্দা বা ভৌতিক কাহিনী তাহলে তো কথাই নেই! আমরা তিন বোন ছিলাম।
ভূত বিষয়ে আমাদের তিন বোনেরই নানারকমের জল্পনা কল্পনা চলত। বাসায় থাকত ভূতের বই। “ভিরানা”, “পুরানি হাওয়ালি”‌ “তাহখানা”, “বিশ সাল বাদ” এসব সিনেমা দেখতে দেখতে মুখস্ত।
ছোটবেলার অনেক অভ্যাসের মত ভূত বিষয়ে আমার ফ্যান্টাসি কেন যেন এখনও যায়নি।
তবে সুবিধা হল ছোটবেলায় অনেক ইচ্ছে পূরণ করা সম্ভব না হলেও এখন কোন ইচ্ছেপূরণে আর বাঁধা নেই।
গল্পের প্রয়োজনেই হয়ত আমাকে আমার বা আমার পরিবারের পরিচয় দিতে হবে, তবে স্থানটির উল্লেখ করছিনা। কেউ কেউ অনুমান করতে পারেন ; )।
২০০৮ সালের দিকের ঘটনা। আমি কোন একটা জেলায় ডিসি অফিসে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে কাজ করি। আমার বর একই জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
আমার বর আমার সিনিয়র হওয়াতে তার সুযোগ সুবিধা বেশী থাকায় আমার জন্য নির্দিষ্ট কোয়ার্টারে না থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কোয়ার্টারে থাকি।
চাকুরীতে যোগদানের পর ৪ বছর আলাদা আলাদা জায়গায় কাজ করার পর এই প্রথম একই জায়গায় ২ জনের পোষ্টিং।
পুরো পরিবারের মহানন্দে দিন কাটছে। ঢাকা থেকে ৪ ঘন্টার দূরত্ব হওয়ায় সহকর্মীরা ছাড়া অন্য কেউ তেমন একটা আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেনা।
একদিন আমার বাবার এক বন্ধু যিনি জেলা সদরেই থাকেন আমাদের বাসায় বেড়াতে এলেন।
মুনীর চাচাকে ছোটবেলা থেকেই চিনতাম, বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। তাই বিভিন্ন বিষয়ে গল্প চলছে।
কথায় কথায় চাচা বলছিলেন ব্যবসা ভালো যাচ্ছেনা, বিভিন্ন সময়ে লস হয়েছে। একটু পরই বললেন জেলা সদরের কাছাকাছি একটা উপজেলায় মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
আমি চোখ বড় করে বললাম, “আড়াই লক্ষ টাকা!!! আপনার না ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে!” তখন তিনি বললেন এক জ্বীনের বাদশার কথা! বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিপদে যার কাছে গিয়ে উনি হাতে হাতে ফল পেয়েছেন।
তার জন্যই এত চাঁদা। ততক্ষণে আমার মোটামুটি হার্ট এটাকের মত অবস্থা!! বলে কি!! জ্বীনের বাদশা!! সারাজীবন যা খুঁজেছি সে এখানেই আছে! এই জেলায়!! সাথে সাথে ধরে বসলাম “জ্বীন দেখব”।
চাচা হেসে জানালেন, জ্বীন অবশ্যই দেখাবেন, তবে সেই উপজেলায় তার বাড়ীতে যেতে হবে।
তিনি কখনো বাইরে যাননা। আমিও বেঁকে বসলাম। বললাম, আপনি সেই হুজুরকে আমাদের সালাম দেবেন আর বলবেন আমরা তাকে আমাদের বাসায় আসার জন্য অনুরোধ করেছি।
আমার পীড়াপীড়িতে চাচা তখনি জ্বীনের বাদশার মোবাইলে ফোন দিলেন।
আমাদের পরিচয় পাওয়ার পর কিছুক্ষন না না করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি জেলা সদরে আমদের বাসায় আসতে রাজী হলেন। সময় দিলেন শুক্রবার।
মাগরিবের আযানের আগেই তিনি চলে আসবেন। প্রস্তুতি হিসেবে ২ হালি কলা আর মিষ্টি জাতীয় খাবার রাখতে বললেন।
এরপর চাচা বিভিন্ন সময়ে জ্বীনের কাছে থেকে কি কি উপকার পেয়েছেন তা গল্প করতে লাগলেন। আর চলে যাওয়ার সময় বলে গেলেন কলা, মিষ্টি তিনিই নিয়ে আসবেন।
আরও বলে দিয়ে গেলেন যে ঘরটিতে জ্বীন আনা হবে সে ঘরটি কিভাবে প্রস্তুত রাখতে হবে।
আমি সীমাহীন কৌতুহল নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। সময় যেন আর কাটেনা। ঢাকায় বোনদের ফোন করে জানালাম শুক্রবারে কি হতে যাচ্ছে।
মেজ বোনের বাচ্চার পরীক্ষা সামনে, সে না আসলেও বড় বোন চলে এলো। আস্তে আস্তে সেই দিন চলে এলো।
আমি জ্বীন দেখতে চাইলেও কিছুতেই আমার রুম বা আমার ছেলের রুমে আসর বসানোর আয়োজন করতে চাইলামনা ; )। প্রায়ই বিভিন্ন কাজে আমার বরকে বাইরে থাকতে হয়।
তখন যদি একা একা ভয় পাই! বেছে নিলাম একদম কর্ণারের ছোট রুমটি যেটাতে শান্ত (আমার ছেলের ফুফাতো ভাই) থাকে।
বিছানায় জায়নামাজ বিছানো হল। বিছানা মোটামুটি অনেক বড়। ওটাতেই সবার জায়গা হয়ে যাবে।
শুধু একটা বাড়তি চেয়ার বিছানার পাশে জায়নামাজ দিয়ে ঢেকে রেডী রাখা হলো যেটাতে জ্বীন বসবে। সারাঘরে এয়ার ফ্রেশনার ছড়িয়ে দেয়া হলো।
মাগরিবের আযানের ১৫/২০ মিনিট আগেই মুনীর চাচা জ্বীনের বাদশাকে নিয়ে চলে এলেন।
চাচার হাতে কলা, মিষ্টি। আমার আর আমার বরের সাথে হুজুরকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। ভদ্রলোককে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলাম।
অতি সাধারণ দেখতে মাঝারি উচ্চতার একজন ভদ্রলোক। মুখে বুক পর্যন্ত লম্বা কাঁচা-পাকা দাঁড়ি। বয়স সত্তুরের কাছাকাছি হবে।
পরণে হুজুরদের মত লম্বা সাদা পাঞ্জাবী। মুখে পান। বাবা-মা বা অতি মুরুব্বীজন ছাড়া কাউকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা আমার স্বভাববিরুদ্ধ।
হুজুরকে মুখে সালাম দিতেই চাচা চোখ ইশারা করতে লাগলেন, পায়ে হাত দিয়ে সালাম করার জন্য। অনিচ্ছাসত্ত্বেও তাই করতে হলো।
আমার বড় বোনকে দেখলাম পায়ে হাত দিয়ে সালামের ভয়ে পিছন থেকে কেটে পড়ছে! আমি সাথে সাথে ওকে পরিচয় করিয়ে দিলাম, সেও আমার মত পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে বাধ্য হলো আর আমার দিকে কটমট চোখে তাকাতে লাগলো ; )।
তাদের সাথে আর কারো আসার কথা না থাকলেও দেখি বাচ্চা একটা মেয়ে এসেছে। মেয়েটির বয়স ১৩/১৪ বছরের বেশী হবেনা।
আপাদমস্তক ঢাকা, শুধু মুখ দেখা যাচ্ছে। মেয়েটি কে জিজ্ঞাসা করতেই হুজুর বললেন তার এক আত্নীয়া, ২/৩ দিনের জন্য বেড়াতে এসেছে।
বাসায় কেউ ছিলোনা তাই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন। তবে অসুবিধা নেই, এই মেয়ে আসরে বসবেনা বা ওই রুমে ঢুকবেনা।
মাগরিবের নামাজ শেষ হলে জ্বীন ডাকার সময় হল। সবাইকে অযু করতে হবে। ভয়ে ভয়ে অযু করছি, কারণ চাচা বলেছে অযু শুদ্ধ না হলে জ্বীন চড়-থাপ্পর মারতে পারে।
হায় হায় বলে কি! এরকম হলে তো কেলেংকারী হয়ে যাবে! আমার বর কেটে পড়তে চাইছে মনে হলে করুন চোখে তাকে থাকতে অনুরোধ করলাম।
কারণ ততক্ষণে আমার ভয় লাগা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের ধর্মে জ্ব্বীনের অস্তিত্ব রয়েছে বলে জানি।
কিন্তু কেউ একজনের অনেকগুলো পোষা জ্বীন রয়েছে যারা বিভিন্ন দেশ থেকে ফল বা বিভিন্ন রোগের ঔষধ এনে দেয় তা বিশ্বাস করতে মন চাচ্ছেনা।
এদিকে জ্বীন ডাকার ঘটনা গোপন ছিলোনা। ইতিমধ্যে আমাদের বাংলোর হাউজ গার্ড, ড্রাইভার, বডিগার্ডসহ অন্যান্য লোকজন সবাই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে, সবারই জ্বীন দেখার ইচ্ছা।
হুজুর সবার ইচ্ছায় পানি ঢেলে বাসার চারপাশ থেকে সবাইকে চলে যেতে বললেন, কেউ থাকলে ঘরের ভিতরে থাকবে, নাহলে দূরে সরে যেতে হবে।
আর পুরো বাড়ীর সব লাইটও বন্ধ করে অন্ধকার করে ফেলতে বললেন।
বাসা অন্ধকার করার ফাঁকে একজন বডিগার্ডকে আস্তে করে বললাম তারা যেন বাংলোর আশে পাশেই লুকিয়ে থাকে, যেকোন অস্বাভাবিক জিনিষ লক্ষ্য করে।
তারা মাথা নেড়ে চলে গেলো। আমার বরের বোন কথা বলতে পারেনা বা কানে শুনতে পায়না।
তাকে হুজুরের সাথে আসা মেয়েটিকে ড্রয়িং রুমে পাহারা দিতে বলে আমরা পাশের নির্ধারিত রুমে ঢুকলাম।
বিছানায় এমনভাবে বসলাম যাতে হুজুর মধ্যে থাকে, আর জ্বীনের জন্য নির্ধারিত চেয়ারের উল্টোদিকে থাকে। আমার বোন, এক খালা, হুজুর, আমি, আমার বর, সবশেষে মুনীর চাচা।
এই রুমের মোট ৪টা দরজা। সবগুলোই ভেতর থেকে বন্ধ, শুধু মনে করতে পারছিনা ড্রয়িং রুমের সাথের লাগানো দরজাটির ছিটকিনি বন্ধ করা হয়েছিল কিনা।
তবে ধাক্কা দিয়ে ভালোভাবে লাগানো ছিলো এটা শিওর। যাই হোক সবাই বসার পর হুজুর লাইট অফ করতে বললেন।
ছোট টর্চ জ্বালিয়ে, সব লাইট বন্ধ করে তারপর টর্চও অফ করে দিলাম। হুজুর কঠিন ভাবে নিষেধ করে দিলেন যাতে কোনভাবেই মাঝখানে লাইট অন করা না হয় তিনি না বলা পর্যন্ত।
তাহলে যে করবে তার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। লাইট অফ হওয়ার সাথে সাথে হুজুর আমাদের মনে মনে দোয়া পড়তে বললেন এবং নিজেও জোরে জোরে দোয়া পড়তে শুরু করলেন।
তিনি মাঝে মাঝে বাংলায়ও আঞ্চলিক ভাষায় মন্ত্রের মত কবিতা উচ্চারণ করছিলেন, জ্বীনকে আসার জন্য অনুরোধ করছিলেন।
কিছুক্ষন এরকম চলার পর হঠাৎ দরজায় জোরে একটা শব্দ হল। আমাদের বাংলোটা পুরাতন আমলের হওয়ায় দরজা খুললে ক্যাঁচক্যাঁচ শব্দ হয়।
এই শব্দটা ওরকম ছিলনা, কোন জিনিষ দিয়ে আঘাত দিলে যেরকম হয় অনেকটা সেরকম। সাথে সাথে একটা পুরুষ কন্ঠস্বর বলে উঠলো “আসসালামু আলাইকুম”।
নাকি গলায় কেউ খুব দ্রুত কথা বলছে, এছাড়া মুখ গোল করে প্রতিটি শব্দের সাথে জিভ বের করে উচ্চারণ করলে যেমন হয় তেমন শোনাচ্ছে শব্দগুলো।
জ্বীনটি সম্পর্কে আমাদের আগেই বলা হয়েছিলো। তার বয়স ৩০০ বছর। আসবে কোহকাফ নগরী থেকে। তার নামটা যদিও এই মূহুর্তে মনে পড়ছেনা।
জ্বীন এসেই মুনীর চাচাকে জিজ্ঞাসা করলো “মুনীর, কেমন আছ?” তিনিও মহা বিগলিত স্বরে উত্তর দিলেন “আল্লাহর রহমতে আপনাদের দোয়ায় ভাল।” তারপর আগে কোন একটা সমস্যায় সমাধান বলেছিলেন সেটি কাজ করেছিলো কিনা জিজ্ঞেস করলেন।
চাচাও হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলেন। এরপর কার কি সমস্যা জিজ্ঞাসা করা হল।
আমি আর আমার বোন ভয়ে কোন কথা বলিনি!!! পুরোটা সময় আমি কথার উৎস লক্ষ্য করছিলাম।
হুজুর আমার এক পাশে কথা বলছেন, চাচা আরেক পাশে কথা বলছেন। জ্বীনের কথাও বিপরীত দিক থেকে আসছে।
কথার গতি যা ছিল তাতে জায়গা অদল বদল করে এক ব্যক্তির দুজন হিসেবে কথা বলা সম্ভব না। এছাড়া অন্ধকারে জায়গা বদল করলে শব্দ হবেই যা আমাদের টের পাওয়ার কথা ছিলো।
টেপ রেকর্ডারে পূর্বে ধারণকৃত কথা বাজানোও সম্ভব না, কারণ আমাদের খালা ২/১ টি প্রশ্ন করেছিলেন (যা এখন মনে পড়ছেনা), যার উত্তর পূর্ব নির্ধারিত রেকর্ড বাজিয়ে দেয়া সম্ভব না।
কিন্তু উত্তর তো সে দিয়েছিলো। তাই আমি নিশ্চিত ঘরে তৃতীয় কোন ব্যক্তি বা জ্বীনের উপস্থিতি ছিল।
মাঝখানে সে কলা ফুঁ দিয়ে সকলের দিকে একটি করে কলা ছুঁড়ে দেয়। পরে খেয়ে ফেলতে বলে।
তারপর আরো কিছুক্ষন কথা চালিয়ে গেলেন চাচা, আমাদের জিজ্ঞাসা করতে বললেন কিছু জানতে চাই কিনা! কিন্তু আমি আস্তে করে না বলাতে রাগ করেই কিনা বুঝলামনা সাথে সাথেই সালাম দিয়ে জ্বীন চলে গেল।
কিন্তু এবার শব্দ হল বাইরের দিকে দরজায়। আর শব্দটা কপাটের যে দিকে আমরা বসা সেদিকে ছিলোনা, পরিস্কার বোঝা গিয়েছিলো বাইরের দিকে হয়েছে।
সাথে সাথে বাইরে একটা ডাল ভাঙ্গার শব্দ পেলাম। সাথে সাথে টর্চ জ্বালালাম। আমরা ৫ জন ছাড়া কেউ নেই ঘরে! যে যেখানে বসা ছিলাম সেখানেই আছি।
দৌড়ে বাইরে গিয়ে ড্রাইভার-বডিগার্ডকে কিছু দেখেছে কিনা জিজ্ঞাসা করতেই তারা আম গাছের একটা ভাঙ্গা ডাল নিয়ে এল।
বলল তারা এতক্ষন এখানেই দাড়িয়েছিল, যেই দরজায় শব্দ হয়েছিল সেটার পাশে।
শব্দটা তারাও শুনেছে, তাদের সামনেই ডালটি ভেঙ্গে পড়েছে গাছ থেকে! তারা ছাড়া আর কোন মানুষ ছিলোনা সেখানে! তবে আমার সর্বশেষ সন্দেহ ছিল সেই মেয়েটির দিকে।
কিন্তু সে যদি অন্ধকারে ওই রুম থেকে এই রুমে আসে তাহলে শব্দ পাওয়া যাওয়ার কথা।
দরজা যদি ছিটকিনি নাও দেয়া থাকে তাহলেও শব্দহীনভাবে অন্ধকারে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দরজা আবার আটকানো মোটামুটি অসম্ভব।
তার উপর মেয়েটি এই বাড়ীতে কখনো আসেনি, যে রুমে বসেছিলাম, সেই রুমেও কখনো ঢোকেনি, তাই শব্দহীনভাবে সে ঢুকেছিলো এটাও যদি আমি ধরে নেই, অন্ধকারে তার চেয়ার খুঁজে পাওয়ার কথা না।
সব বিচারে এই সম্ভাবনাও বাদ দেয়া যায়। আমাদের বাড়ীতে বাইরে থেকে লুকিয়ে কোন লোক ঢুকবে এটাও অসম্ভব, সারাক্ষন হাউজগার্ড থাকে।
তাছাড়া আমাদের বাসায় এসে প্রতারণার জন্যও অনেক সাহস দরকার। তাহলে? কি ঘটেছিলো সেদিন?? যাই হোক এই দিনের ঘটনাটি খুব ভালোভাবে শেষ হয়নি সেদিন।
আমার বর- যে খুবই ধার্মিক, সে ভালো মানুষ তো দূরের কথা চোর-ডাকাতকেও কোনদিন ধমক দিয়ে কথা বলেনা, কেন যেন হুজুরের উপর একটু রেগে যায়, আর কিছু কড়া কথা বলে।
হুজুরটি খুব মন খারাপ করে চলে গিয়েছিলেন। কারণটা মনে পড়ছেনা। তিনি এখন জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাইরের একটা দেশে আছেন।
আমি তাকে গল্পটি ট্যাগ করব আর তার নিজের মুখেই শুনব কি কারণে সেদিন তিনি হুজুরের উপর ক্ষেপেছিলেন।
এরপর এই হুজুরকে নিয়ে আরেকদিন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিলো। সেবার তার বাড়ীতে গিয়েছিলাম আমরা। সেই ঘটনা নাহয় আরেকদিন বলা যাবে… ; )

অদ্ভুত রাত এবং একটি সাদা পরী

ভয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *