জ্বিন কর্তৃক মানুষ অপহরণ

বর্ণনায় হযরত আবদুর রহমান বিন আবী লাইলাঃ ওঁর (বর্ণনাকারীর) স্বগোত্রীয় একটি লোক ইশার নামায পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হবার পর নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজ লোকটির স্ত্রী হযরত উমর (রাঃ) এর কাছে গিয়ে ঘটনাটি উল্লেখ করেন। হযরত উমর (রাঃ) নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রীকে (অন্যত্র বিয়ের বিষয়ে) চার বছর প্রতীক্ষা করার নির্দেশ দেন। মহিলাটি তা পালন করে। তারপর হযরত উমর (রাঃ) তাকে অন্যত্র বিবাহ করার অনুমতি দেন।

দ্বিতীয় বিয়ের কিছুদিন পর মহিলাটির প্রথম স্বামী ফিরে আসে। লোকেরা তখন তার কথা হযরত উমর (রাঃ) কে গিয়ে বলে। হযরত উমর (রাঃ) বলেন – এমন ঘটনা কি ঘটে না যে, তোমাদের মধ্যে কোন লোক বেশ কিছুকাল নিখোঁজ থাকে এবং সেই সময় তার বাড়ির লোকজন জানতে পারে না যে সে মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে? তখন সেই নিখোঁজ থাকা লোকটি বলল – আমার (নিখোঁজ থাকার) পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য কারণ ছিল। হযরত উমর (রাঃ) বলেন – কী সেই কারণ?

লোকটি বলে – আমি ইশার নামজের জন্য বের হতে জ্বিনরা আমাকে ধরে বন্দি করে। এবং তাদের সাথে দীর্ঘকাল থাকতে বাধ্য হই। পরে সেই দুষ্ট জ্বিনদের সাথে মুমিন জ্বিনরা যুদ্ধও করে। যুদ্ধে মুমিন জ্বিনরা জয় লাভও করে এবং তারা দুষ্ট জ্বিনদের দ্বারা আটক থাকা মানুষের কাছেও পৌঁছে যায়, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তারা আমাকে আমার ধর্ম জিজ্ঞাসা করলে, আমি বললাম ইসলাম। তারা বলল, তবে তো তুমি আমাদেরই দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তোমাকে বন্দি রাখা আমাদের পক্ষে হালাল বা বৈধ নয়।

এরপর তারা আমাকে ওখানে থাকার বা না থাকার এখতিয়ার দেয়। আমি ফিরে আসাকে পছন্দ করি। তারা রাতে আমার সাথে মানুষের রূপে থাকত এবং দিনে হতো ঘূর্ণি বায়ুর মতো। আমি ওদের পিছনে পিছনে চলতাম।

হযরত উমর (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন – তুমি কি খেতে? লোকটি বলল, — সে সমস্ত খাবার, যেগুলোয় আল্লাহর নাম নেওয়া হয়। হযরত উমর (রাঃ) দ্বিতীয় প্রশ্ন করেন – তুমি কি পান করতে? সে বলে – মদে পরিনত হয়নি এমন রস। তারপর হযরত উমরা (রাঃ) সেই লোকটিকে এই এখতিয়ার দেন যে, সে তার স্ত্রীকে ফের স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে পারে অথবা তালাক দিতেও পারে।

Written By

More From Author

You May Also Like

নবী জীবনের গল্প

আজকের আসরে আমরা এমন এক মহামানবের কথা বলব- তাঁর চেয়ে উত্তম কোনো সন্তান আজ পর্যন্ত…

লোভী পিঁপড়া

‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’ কিংবা ‘লোভের ফল ভাল নয়’-এই প্রবাদ দু’টি সবাই জানে। এ প্রবাদ…

হৃদয়ের ব্যাধি সারানোর উপায় !

এক ব্যক্তি এসে সুফয়ান আস- সাওরীকে জিজ্ঞেস করলোঃ “আমি হৃদয়ের ব্যাধিতে ভুগছি, আমাকে কোনো প্রতিষেধক…

জ্বিন কর্তৃক মানুষ অপহরণ

বর্ণনায় হযরত আবদুর রহমান বিন আবী লাইলাঃ ওঁর (বর্ণনাকারীর) স্বগোত্রীয় একটি লোক ইশার নামায পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হবার পর নিখোঁজ হয়ে যায়। নিখোঁজ লোকটির স্ত্রী হযরত উমর (রাঃ) এর কাছে গিয়ে ঘটনাটি উল্লেখ করেন। হযরত উমর (রাঃ) নিখোঁজ ব্যক্তির স্ত্রীকে (অন্যত্র বিয়ের বিষয়ে) চার বছর প্রতীক্ষা করার নির্দেশ দেন। মহিলাটি তা পালন করে। তারপর হযরত উমর (রাঃ) তাকে অন্যত্র বিবাহ করার অনুমতি দেন।

দ্বিতীয় বিয়ের কিছুদিন পর মহিলাটির প্রথম স্বামী ফিরে আসে। লোকেরা তখন তার কথা হযরত উমর (রাঃ) কে গিয়ে বলে। হযরত উমর (রাঃ) বলেন – এমন ঘটনা কি ঘটে না যে, তোমাদের মধ্যে কোন লোক বেশ কিছুকাল নিখোঁজ থাকে এবং সেই সময় তার বাড়ির লোকজন জানতে পারে না যে সে মারা গেছে নাকি বেঁচে আছে? তখন সেই নিখোঁজ থাকা লোকটি বলল – আমার (নিখোঁজ থাকার) পক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য কারণ ছিল। হযরত উমর (রাঃ) বলেন – কী সেই কারণ?

লোকটি বলে – আমি ইশার নামজের জন্য বের হতে জ্বিনরা আমাকে ধরে বন্দি করে। এবং তাদের সাথে দীর্ঘকাল থাকতে বাধ্য হই। পরে সেই দুষ্ট জ্বিনদের সাথে মুমিন জ্বিনরা যুদ্ধও করে। যুদ্ধে মুমিন জ্বিনরা জয় লাভও করে এবং তারা দুষ্ট জ্বিনদের দ্বারা আটক থাকা মানুষের কাছেও পৌঁছে যায়, তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তারা আমাকে আমার ধর্ম জিজ্ঞাসা করলে, আমি বললাম ইসলাম। তারা বলল, তবে তো তুমি আমাদেরই দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তোমাকে বন্দি রাখা আমাদের পক্ষে হালাল বা বৈধ নয়।

এরপর তারা আমাকে ওখানে থাকার বা না থাকার এখতিয়ার দেয়। আমি ফিরে আসাকে পছন্দ করি। তারা রাতে আমার সাথে মানুষের রূপে থাকত এবং দিনে হতো ঘূর্ণি বায়ুর মতো। আমি ওদের পিছনে পিছনে চলতাম।

হযরত উমর (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন – তুমি কি খেতে? লোকটি বলল, — সে সমস্ত খাবার, যেগুলোয় আল্লাহর নাম নেওয়া হয়। হযরত উমর (রাঃ) দ্বিতীয় প্রশ্ন করেন – তুমি কি পান করতে? সে বলে – মদে পরিনত হয়নি এমন রস। তারপর হযরত উমরা (রাঃ) সেই লোকটিকে এই এখতিয়ার দেন যে, সে তার স্ত্রীকে ফের স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে পারে অথবা তালাক দিতেও পারে।

Written By

More From Author