জেল হাজতে এক বুজুর্গ
হযরত আবুল হারেস আওলাসা (রহঃ) বলেন, একবার আমি কয়েদীদেরকে মুক্ত করার সময় জেলখানার গেটে এসে হাজির হলাম। আমি লক্ষ্য করলাম, মুক্তিপ্রাপ্ত সকলকেই কিছু কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করা হচ্ছে। আমি বললাম, আল্লাহর কসম, এদের কেউই তো সরকারী টাকা হতে নিজেকে রক্ষা করতে পারছে না। কিছু দিন পর এক আল্লাহ ওয়ালা বুজুর্গকে মুক্তি দেয়া হল। সেই সময় আমিও জেল খানার গেটে উপস্থিত ছিলাম। মুক্তির সময় তার সামনেও সরকারী টাকা রাজকীয় পোশাক এবং উপাদেয় খাদ্যদ্রব্য এনে হাজির করা হল কিন্তু বুজুর্গ ঐ সকল দ্রব্যের কিছুই গ্রহণ করলেন না। তিনি জেলখানা ত্যাগ করে পথে বের হলে আমি তার পেছনে পেছনে চললাম।
কিছুদুর যাবার পর আমি হালাল উপায়ে অর্জিত কিছু অর্থ তার নিকট পেশ করে বললাম, আল্লাহ পাকের শুকর যে, এখনো তিনি পৃথিবীকে তার নেক বান্দা ও ওলী বুজুর্গ হতে মাহ্রুম করেননি। কিন্তু বুজুর্গ আমার অর্থ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এক মুঠি বালি হাতে নিলেন। সাথে সাথে বালি লাল-সবুজ ইয়াকুত পাথরে পরিণত হয়ে গেল। অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, আল্লাহ পাকের সাথে যে ব্যক্তির এমন সম্পর্ক সে তোমার অর্থের বা টাকার মুখাপেক্ষী নয়।
এবার আমি আরজ করলাম, হে আল্লাহর ওলী! এমন আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হওয়া সত্বেও আপনি রোম শহরের কারাগারে কি করছিলেন? তিনি বললেন, আল্লাহ পাকের সাথে সম্পাদিত কোন ওয়াদার ব্যাপারে আমি আল্লাহর সাথে কিছু বেয়াদবী করেছিলাম। রোমের কারাগারে এতদিন তারই শাস্তি ভোগ করে এলাম। পরে আমি তওবা করলে আল্লাহ পাক আমাকে ক্ষমা করে দিলেন। কিন্তু রোমের কারাগারে মুসলমানদেরকে ফেলে আমি একা চলে আসতে আমার লজ্জাবোধ হচ্ছিল। এ কারণেই আমি সকলের মুক্তি হওয়া পর্যন্ত বিলম্ব করছিলাম।