
ব্যাপারটা ঘটেছিল ২ বছর আগে। আমাদের দেশের বাড়িতে। তখন এস, এস, সি এক্সামের পর ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম।
আমাদের গ্রাম বাংলাদেশের পশ্চিম দিকে। রাজশাহী, নওয়াবগঞ্জ জেলার ভেতর। দুর্গাপুরের পাশের গ্রাম। নাম বালিয়াদাঙ্গা।
পাশ দিয়ে মহানন্দা নদী। নদির এই পারে আমাদের গ্রাম, অন্য পারে ইন্ডিয়ার বর্ডার। আমি আগে এসব জিনিস অনেক ভয় পেতাম।
কারন ছোটবেলায় একটা অস্বাভাবিক জিনিস দেখেছিলাম নানু বাড়ির ছাদে। সন্ধ্যার দিকে। তখন থেকেই গ্রামে গেলে রাতের বেলা অনেক ভয় লাগত।
কিন্তু সেবার ভেবেছিলাম সাহস করে অনেক রাতে নদীর ধাঁরে যাবো। একা একা হাঁটাহাঁটি করবো। অনেক্ষন বসে থাকবো।
এই ভেবে রাত একটার দিকে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিল, তখন বের হয়েছিলাম। ঐদিন চাঁদটা অনেক বড় আর উজ্জ্বল ছিল।
সম্ভবত পূর্ণিমা। ক্যালেন্ডার দেখিনি তাই বলতে পারবোনা। সাথে ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। পাছে যদি কিছু দেখি তবে ছবি তুলবো।
রাতে গ্রামের দিকে সব কটা লাইটই বন্ধ থাকে। এতো রাতে কেউ বাইরেও থাকে না। অন্ধকার রাস্তায় একাই হাঁটছিলাম।
নদীর ধাঁরে যেতে প্রায় ২০ মিনিট হাঁটা লাগে। রাস্তার দুই পাশেই বড় বড় গাছ আর নদীর ধাঁরে অনেক ঘন বাঁশবন।
আমার অন্ধকারে এই গাছ আর বাঁশবন অনেক ভয় লাগে। আমার সাথে একটা পাওয়ারফুল টর্চ ছিল।
রাস্তায় আলো ফেলতে ফেলতে যাচ্ছিলাম। নদীর প্রায় কাছে চলে এসেছি, এমন সময় মনে হল কেউ যেনও হেসে উঠলো।
আমি নিশ্চিত নই তা হাসি কিনা কিন্তু আওয়াজ শুনে অনেকটা তেমনই লাগছিল। আমি চমকে গেলাম। এদিক সেদিক টর্চ মারলাম।
হটাত খেয়াল করলাম আক্তা বাঁশ গাছের পাতার ফাঁক থেকে জোড়া পায়ের মত কিছু একটা নেমে আসছে। আমি ঐ দিকে টর্চ মারতেই “সেটা” পাতার ফাঁকে লুকিয়ে গেলো। আমি টর্চ নামিয়ে ফেললাম।
ওটা আবার পাতার ফাঁক দিয়ে উকি দিল। আমি কখনো পেত্নী দেখিনি। কিন্তু ওটা দেখে মনে হচ্ছিল একেই বোধহয় পেত্নী বলে। লম্বা লম্বা এলোমেলো চুল।
অন্ধকার চোখের কোঠর। লম্বা লম্বা হাত পা। ভয়ঙ্কর চেহারা। আমার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে আর নাকি সুরে হাসছে।
আমি প্রচণ্ড ভয় পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, “কে ওখানে??” ঐ জিনিসটা আবার হেসে আমার নকল কর বলল, “কে ওখানে??” আমি আবার ভয়ে জিজ্ঞেস করি, “কে তুই??” ঐটা বলে, “কে তুই??” আমার মাঝে ভয় কাজ করছিলো।
মনে হচ্ছিল, আমি যদি দৌড় দেই তাহলে হয়তো সেটাও আমার পেছনে দৌড় দিবে। তাই কিছুক্ষণ ভেবে বললাম, “হামি এই গাঁয়ের লোক। তোকে লিয়া যাইতে আসছি।” এটা বলার সময় অনেক ভয় লাগছিল।
পাছে, সেটা আমাকে কিছু করে। কিন্তু ঐটা উত্তর দিল, “হামি যাবো না। তুই চইলে যা।” এটা বলার পর আমার দিকে হাত থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারে।
আমি দ্রুত সরে যাই এবং সাথে সাথে ঐ দিকে টর্চ মারি। ঐটার গায়ে টর্চ পড়তেই তা এক লাফে বাঁশগাছ থেকে নেমে পড়ে, তবে আমার সৌভাগ্য যে আমার দিকে না। উল্টো দিকে।
নেমেই দৌড় মেরে নদীর দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর নদীতে কিছু একটা ঝাঁপিয়ে পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি তখন আমার পাশে টর্চ মেরে দেখি যে ঐটা কি ছুঁড়ে মেরেছিল।
দেখলাম ছুঁড়ে মারা জিনিসটা একটা আধা খাওয়া মাছ। ঐটার একটা ছবি তুলে নিয়ে দোয়া পড়তে পড়তে বাসার দিকে রওনা দেই।
ঘড়িতে দেখি রাত প্রায় ২টা। রাতে ঘুম হয়নি। ভোরে আযান দেয়ার পর মসজিদে যাই। সেখানে গ্রামের কিছু মুরব্বী চাচা ছিলেন, আমার পূর্বপরিচিত।
উনাদের এই ঘটনাটা খুলে বলি। উনারা বলেন, উনাদের মাঝে কেউ কেউ নাকি ঐ জিনিস দেখেছেন।
কিন্তু কারো সাথেই নাকি কোনরূপ কথা হয়নি। উনারা বলেন, আমি অনেক বড় বাচা বেঁচে গেছি।
কারন অনেক রাতে নাকি একবার এক মহিলা এমন নদীর পারে একা গিয়েছিলো কিন্তু আর ফিরে আসেনি।
এমনকি, পরবর্তীতে ঐ মহিলার কোনও খোঁজও পাওয়া যায়নি। উনারা আমাকে অনেক দোয়া দরুদ পড়ে দেন এবং বলেন এই ঘটনা যেনও আমি কাউকে না বলি।
বললে নাকি আমার ক্ষতি হবে। কিন্তু আমি আর ভয় পাইনি। এরপরও অনেকবার একা গিয়েছিলাম, কিন্তু কখনও কোনও কিছু দেখিনি আর। ক্যামেরাটা ডিজিটাল না। ফিল্ম সিস্টেমের।
পড়ে পুরো ফিল্মটা ওয়াস করিয়েছিলাম। সব ছবি এসেছিলো। শুধু ঐ ছবিটা বাদে।
আমাদের গ্রাম বাংলাদেশের পশ্চিম দিকে। রাজশাহী, নওয়াবগঞ্জ জেলার ভেতর। দুর্গাপুরের পাশের গ্রাম। নাম বালিয়াদাঙ্গা।
পাশ দিয়ে মহানন্দা নদী। নদির এই পারে আমাদের গ্রাম, অন্য পারে ইন্ডিয়ার বর্ডার। আমি আগে এসব জিনিস অনেক ভয় পেতাম।
কারন ছোটবেলায় একটা অস্বাভাবিক জিনিস দেখেছিলাম নানু বাড়ির ছাদে। সন্ধ্যার দিকে। তখন থেকেই গ্রামে গেলে রাতের বেলা অনেক ভয় লাগত।
কিন্তু সেবার ভেবেছিলাম সাহস করে অনেক রাতে নদীর ধাঁরে যাবো। একা একা হাঁটাহাঁটি করবো। অনেক্ষন বসে থাকবো।
এই ভেবে রাত একটার দিকে যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিল, তখন বের হয়েছিলাম। ঐদিন চাঁদটা অনেক বড় আর উজ্জ্বল ছিল।
সম্ভবত পূর্ণিমা। ক্যালেন্ডার দেখিনি তাই বলতে পারবোনা। সাথে ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলাম। পাছে যদি কিছু দেখি তবে ছবি তুলবো।
রাতে গ্রামের দিকে সব কটা লাইটই বন্ধ থাকে। এতো রাতে কেউ বাইরেও থাকে না। অন্ধকার রাস্তায় একাই হাঁটছিলাম।
নদীর ধাঁরে যেতে প্রায় ২০ মিনিট হাঁটা লাগে। রাস্তার দুই পাশেই বড় বড় গাছ আর নদীর ধাঁরে অনেক ঘন বাঁশবন।
আমার অন্ধকারে এই গাছ আর বাঁশবন অনেক ভয় লাগে। আমার সাথে একটা পাওয়ারফুল টর্চ ছিল।
রাস্তায় আলো ফেলতে ফেলতে যাচ্ছিলাম। নদীর প্রায় কাছে চলে এসেছি, এমন সময় মনে হল কেউ যেনও হেসে উঠলো।
আমি নিশ্চিত নই তা হাসি কিনা কিন্তু আওয়াজ শুনে অনেকটা তেমনই লাগছিল। আমি চমকে গেলাম। এদিক সেদিক টর্চ মারলাম।
হটাত খেয়াল করলাম আক্তা বাঁশ গাছের পাতার ফাঁক থেকে জোড়া পায়ের মত কিছু একটা নেমে আসছে। আমি ঐ দিকে টর্চ মারতেই “সেটা” পাতার ফাঁকে লুকিয়ে গেলো। আমি টর্চ নামিয়ে ফেললাম।
ওটা আবার পাতার ফাঁক দিয়ে উকি দিল। আমি কখনো পেত্নী দেখিনি। কিন্তু ওটা দেখে মনে হচ্ছিল একেই বোধহয় পেত্নী বলে। লম্বা লম্বা এলোমেলো চুল।
অন্ধকার চোখের কোঠর। লম্বা লম্বা হাত পা। ভয়ঙ্কর চেহারা। আমার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে আর নাকি সুরে হাসছে।
আমি প্রচণ্ড ভয় পেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, “কে ওখানে??” ঐ জিনিসটা আবার হেসে আমার নকল কর বলল, “কে ওখানে??” আমি আবার ভয়ে জিজ্ঞেস করি, “কে তুই??” ঐটা বলে, “কে তুই??” আমার মাঝে ভয় কাজ করছিলো।
মনে হচ্ছিল, আমি যদি দৌড় দেই তাহলে হয়তো সেটাও আমার পেছনে দৌড় দিবে। তাই কিছুক্ষণ ভেবে বললাম, “হামি এই গাঁয়ের লোক। তোকে লিয়া যাইতে আসছি।” এটা বলার সময় অনেক ভয় লাগছিল।
পাছে, সেটা আমাকে কিছু করে। কিন্তু ঐটা উত্তর দিল, “হামি যাবো না। তুই চইলে যা।” এটা বলার পর আমার দিকে হাত থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারে।
আমি দ্রুত সরে যাই এবং সাথে সাথে ঐ দিকে টর্চ মারি। ঐটার গায়ে টর্চ পড়তেই তা এক লাফে বাঁশগাছ থেকে নেমে পড়ে, তবে আমার সৌভাগ্য যে আমার দিকে না। উল্টো দিকে।
নেমেই দৌড় মেরে নদীর দিকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর নদীতে কিছু একটা ঝাঁপিয়ে পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি তখন আমার পাশে টর্চ মেরে দেখি যে ঐটা কি ছুঁড়ে মেরেছিল।
দেখলাম ছুঁড়ে মারা জিনিসটা একটা আধা খাওয়া মাছ। ঐটার একটা ছবি তুলে নিয়ে দোয়া পড়তে পড়তে বাসার দিকে রওনা দেই।
ঘড়িতে দেখি রাত প্রায় ২টা। রাতে ঘুম হয়নি। ভোরে আযান দেয়ার পর মসজিদে যাই। সেখানে গ্রামের কিছু মুরব্বী চাচা ছিলেন, আমার পূর্বপরিচিত।
উনাদের এই ঘটনাটা খুলে বলি। উনারা বলেন, উনাদের মাঝে কেউ কেউ নাকি ঐ জিনিস দেখেছেন।
কিন্তু কারো সাথেই নাকি কোনরূপ কথা হয়নি। উনারা বলেন, আমি অনেক বড় বাচা বেঁচে গেছি।
কারন অনেক রাতে নাকি একবার এক মহিলা এমন নদীর পারে একা গিয়েছিলো কিন্তু আর ফিরে আসেনি।
এমনকি, পরবর্তীতে ঐ মহিলার কোনও খোঁজও পাওয়া যায়নি। উনারা আমাকে অনেক দোয়া দরুদ পড়ে দেন এবং বলেন এই ঘটনা যেনও আমি কাউকে না বলি।
বললে নাকি আমার ক্ষতি হবে। কিন্তু আমি আর ভয় পাইনি। এরপরও অনেকবার একা গিয়েছিলাম, কিন্তু কখনও কোনও কিছু দেখিনি আর। ক্যামেরাটা ডিজিটাল না। ফিল্ম সিস্টেমের।
পড়ে পুরো ফিল্মটা ওয়াস করিয়েছিলাম। সব ছবি এসেছিলো। শুধু ঐ ছবিটা বাদে।