ক্ষমা ও উদারতা
হযরত আবূ আব্দুল্লাহ খাইয়াত পেশায় ছিলেন একজন দরজী। দোকানে বসে মানুষের কাপড় সেলাই করতেন। জনৈক বিধর্মী হযরত আব্দুল্লাহকে অচল দেরহাম দিয়ে চলে যেত। হযরত আব্দুল্লাহ ঐ অচল দেরহাম গ্রহন করতেন এবং এ বিষয়ে তাকে কিছুই বলতেন না।
একদিন তিনি কারিগরকে দোকানে বসিয়ে কোন কাজের জন্য বাইরে গেলেন। এসময় সে বিধর্মী এসে সেলাই মুজুরী দিয়ে তার কাপড় চাইল। কিন্তু কারিগর অচল দেরহাম দেখে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তাকে ফিরিয়ে দিল। হযরত আব্দুল্লাহ ফিরে আসার পর কারিগরের নিকট ঘটনা শুনে তিনি বললেন, কাজটি তুমি ভাল করনি। আজ এক বছর যাবৎ সে আমার সাথে এমন আচরণ করছে এবং আমিও তার এ অচল দেরহাম গ্রহণ করে একটি কুপের ভেতর ফেলে দিচ্ছি। যেন তা দ্বারা অন্য কোন মুসলমান প্রতারিত না হয়।
হযরত আহনাফ বিন কায়েসকে জিজ্ঞেস করা হল যে, আপনি এ উদারতা কার নিকট শিখেছেন? তিনি বললেন, হযরত কায়েস বিন আসিমের নিকট। লোকেরা বলল- কায়েস বিন আসিমের উদারতা সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন। আহরত আহনাফ বলেন, একদা হযরত কায়েস বিন আসিম নিজের ঘরে বসা ছিলেন। এ সময় তাঁর দাসী গরম তরকারীর পেয়ালা হাতে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করছিল। এ সময় দুর্ঘটনাক্রমে দাসীর হাত থেকে ঐ গরম তরকারী কায়েস বিন আসিমের শিশু সন্তানের গায়ে পড়ে গেল।
সাথে সাথে শিশুটির শরীরের চামড়া ঝলসে গিয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটল। এ আকস্মিক ঘটনায় দাসীটিও ভয়ে থর থর করে কাঁপতে লাগল। কিন্তু হযরত কায়েস বিন আসিম দাসীকে অভয় দিয়ে বললেন, ভয়ের কোন কারণ নেই, তুমি তো আর ইচ্ছে করে তাকে হত্যা করনি। কিন্তু তবুও তোমার কারণেই যেহেতু আমার সন্তানটি মারা গেছে তাই আমার সামনে আসতে তোমার কিছুটা সংকোচবোধ হওয়ারই কথা। সুতরাং এ মুহুর্তে আমি তোমাকে আজাদ করে দিলাম। অতঃপর পর্যাপ্ত পাথেয় দিয়ে তিনি দাসীকে বিদায় করে দিলেন।