
যুক্তিহীন ভ্রান্ত ধারণা বা গোঁড়ামির অপর নাম কুসংস্কার। বাংলার আনাচে কানাচে এখনো প্রচলিত আছে অনেক কুসংস্কার যার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুগের পর যুগ। আমাদের দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে এধরনের বহু কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। যা প্রতিনিয়ত মানুষ কথায় ও কাজে ব্যবহার করে থাকে। শুধু পশ্চাৎপদ জনতা নয় দেশের সর্বস্তরেই এ কুসংস্কার আসন গেড়ে আছে।কিছু কিছু সাধারণ বিবেক বিরোধী এবং রীতিমত হাস্যকরও বটে। তাই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরী। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সমাজে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য কুসংস্কার থেকে এখানে ১০০ টি কুসংস্কার মূলক কথা উল্লেখ করা হয়েছে……………… নোটঃ কুসংস্কার একটি যুক্তিহীন বিশ্বাস, তারপরেও কুসংস্কার বিশ্বাসের কারণ হচ্ছে সম্পূর্ণ মানসিক ব্যাপার, সেই সাথে কিছুটা আধ্যাতিকতাও থাকা জরুরি তানা হলে সেই কুসংস্কার সত্য রূপে ধরা দিবে না । এগুলো আসলে মানুষ তার নিজের ধারণা বা বিশ্বাসকে আরো বেশি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতেই নানারকম ঘটনার সাথে তুলনা করে নেয় , আবার বলা যায় মানসিক শান্তনা বা আশ্রয়ের জন্য পরিস্থিতি অন্যের বা অন্যকিছুর উপর চাপিয়ে দিয়ে নিজেকে বাচানোর একটা প্রয়াস মাত্র , যুগে যুগে আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ যেমন, নানা নানী দাদা দাদী এদের থেকে নানাভাবে এই ব্যাপারগুলো দেখে আসছি বা শুনে আসছি তাই অবচেতন মনেই আমরা সুযোগ পেলেই এইসমস্ত বিশ্বাস বা কুসংস্কার প্রকাশ করে ফেলি , অনেকটা মজ্জাগতও বলা যেতে পারে, আমরা শিক্ষিত জেনেও বা এগুলো যে আসলে কুসংস্কার সেটা জেনেও মনের অজান্তে আমরা ভুল করে বসি , অনেকে বিশ্বাস করেন না কিন্তু মানেন… দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা এসব কুসংস্কারে আমরা অভ্ভেস্ত হয়ে গেছি..শুধুমাত্র অভ্যাসের খাতিরে ব্যাপারগুলো মনের অজান্তে মেনে চলি … কিন্তু এটাও সত্যি, বিশ্বাসে মেলায় বস্তু এই কথাটাকে যারা অন্ধ মানেন তাদের কথা আবার আলাদা ! কারো বিশ্বাসের উপর আঘাত আসলে তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থি … আমি স্রেফ এই কথা গুলো সংকলন করেছি … ১. ভাঙা আয়না দিয়ে চেহারা দেখা যাবে না, তাতে অমঙ্গল হয়, চেহারার ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়। ২. পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পূর্বে ডিম খাওয়া যাবে না। তাহলে পরীক্ষায় ডিম (গোল্লা) পাবে। ৩. দোকানের প্রথম কাস্টমার ফেরত দিতে নাই। ৪. নতুন বউকে শ্বশুর বাড়ীতে নরম স্থানে বসতে দিলে বউয়ের মেজাজ নরম থাকে। ৫. বিড়াল মারলে আড়াই কেজি লবণ ‘সদকা’ করতে হয়। ৬. ওষুধ খাওয়ার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বললে রোগ বেড়ে যায়। ৭. জোড়া কলা খেলে জমজ সন্তান জন্ম নেয়। ৮. রাতে নখ, চুল, দাঁড়ি-গোফ ইত্যাদি কাটতে নেই। ৯. প্রথম সন্তান মারা গেলে পরের সন্তানের কান ফুটো করে দিতে হয়, তাতে সে দীর্ঘ হায়াত পায়। ১০. ভাই-বোন মিলে মুরগি জবাই করা যায় না। ১১. ঘরের ময়লা পানি রাতে ঘরের বাইরে ফেলতে হয় না, তাতে সংসারে অমঙ্গল হয়। ১২. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে ডাক দিলে তার যাত্রা অশুভ হয়। ১৩. ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হয়। ১৪. কোরআন শরীফ হাত থেকে পড়ে গেলে আড়াই কেজি চাল ‘সদকা’ করতে হয়, না হলে মাথার চুল উঠে যায়। ১৫. ছোট বাচ্চাদের দাঁত পড়লে তা ইঁদুরের গর্তে ফেলতে হয়, না হলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়। ১৬. মুরগির মাথা খেলে মা-বাবার মৃত্যুর সময় কাছে থাকার সুযোগ হয় না। ১৭. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় পেছন দিকে ফিরে তাকানো নিষেধ; তাতে যাত্রা ভঙ্গ হয় বা যাত্রা অশুভ হয়। ১৮. ঘরের প্রবেশকৃত রোদে অর্ধেক শরীর রেখে বসা নিষেধ। তাহলে জ্বরে আক্রান্ত হতে হয়। ১৯. রাতে বাঁশ কাটা যাবে না। ২০. রাতে গাছের পাতা ছিঁড়া ও ফল তোলা নিষেধ। ২১. ঘর থেকে বের হয়ে বিধবা নারী চোখে পড়লে যাত্রা অশুভ হয়। ২২. ঘরের চৌকাঠে বসা, দারিদ্রতার লক্ষণ। ২৩. মহিলাদের বিশেষ দিনে সবুজ কাপড়ের কিছু একটা পড়তে হয় এবং তাদের হাতের কিছু খাওয়া যায় না। ২৪. বিধবা নারীকে অবশ্য অবশ্যই সাদা কাপড় পরিধান করতে হবে। ২৫. নতুন বউকে কোলে করে ঘরে আনতে হবে, আর কোলে নিবেন দুলা ভাই। ২৬. ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসে, আর বাম হাতের তালু চুলকালে বিপদ আসে। ২৭. নতুন কাপড় পরিধান করার আগে তা আগুনে ছ্যাঁকা দিতে হয়। ২৮. নতুন কাপড় পরিধান করার পর পিছনে তাকাতে নাই। ২৯. ভাগিনাকে মারলে মৃত্যুর সময় মামার হাত কাঁপে। ৩০. আশ্বিন মাসে কোনো নারী বিধবা হলে তার আর কোনো দিন বিয়ে হয় না। ৩১. সোমবারের দিন কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া নিষেধ। ৩২. রাতের কাউকে সুঁই-সূতা দিতে নেই। ৩৩. গেঞ্জি ও গামছা ছিঁড়ে গেলে তা সেলাই করে ব্যবহার করতে মানা। ৩৪. খালি ঘরে সন্ধ্যায় বাতি দিতে হয়, না হলে বিপদ অনিবার্য। ৩৬. গর্ভবতী মহিলার জন্য কোনো কিছু কাটা-কাটি কিংবা জবাই করা নিষিদ্ধ, তাতে বাচ্চা ঠোঁট কাটা জন্ম নেয়। ৩৭. পাতিলের মধ্যে খানা থাকা অবস্থায় তা খেলে পেট বড় হয়। ৩৮. বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সামনে দিয়ে খালি কলস নিয়ে কেউ গেলে বা খালি কলস পড়লে যাত্রা অশুভ হয়। ৩৯. ছোট বাচ্চাদের শরীরে লোহা জাতীয় কিছু বেঁধে দিতে হয়, তাতে সে দুষ্টু জ্বীন-শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা পায়। ৪০. রুমাল, ছাতা, হাতঘড়ি ইত্যাদি কাউকে ধার দিতে হয় না। ৪১. হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে ভাগ্যে দুর্ভোগ আছে মনে করা হয়। ৪২. হাত থেকে প্লেট পড়ে গেলে মেহমান আসবে বলে মনে করা। ৪৩. নতুন বউ কোনো ভালো কাজ করলে তা শুভ লক্ষণ বলে মনে করা। ৪৪. ইষ্টি কুটুম পাখি ডাকলে বলা হয় আত্মীয় আসবে। ৪৫. কাঁচামরিচ হাতে দিতে নেই। ৪৬. তিন রাস্তার মোড়ে বসতে মানা, তাতে বংশ উজাড় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ৪৭. খাওয়ার সময় ঢেঁকুর আসলে অথবা খাবার আটকে গেলে কেউ তাকে স্মরণ করছে বা গালি দিচ্ছে মনে করা। ৪৮. কাকের ডাক বিপদের পূর্বাভাস মনে করা। ৪৯. শকূন ডাকলে বা দেখলে কেউ মারা যাবে, এটা মনে করা। ৫০. অনুরূপভাবে পেঁচার ডাককেও বিপদের কারণ মনে করা। ৫১. তিনজনের একসঙ্গে পথ চলা অকল্যাণজনক মনে করা। ৫২. দু’জনের কথার ফাঁকে টিকটিকির আওয়াজকে কথার সত্যায়ন মনে করা। ৫৩. কারো মাথায় টোকা খেলে দ্বিতীয় বার টোকা দেওয়া আবশ্যক মনে করা, না হলে মাথায় রোগ হয় ভাবা। ৫৪. ভাত প্লেটে নেওয়ার সময় একবার নিতে হয় না। ৫৫. নতুন জামাই বাজার না করা পর্যন্ত এক পদ দিয়ে খাওয়ানো। ৫৬. নতুন বউকে শ্বশুরালয়ে কমপক্ষে আড়াই দিন অবস্থান করতে হয়। ৫৭. পাতিলে ভাত খেলে মেয়ে সন্তান জন্ম নেয়। ৫৮. পোড়া ভাত ইত্যাদি খেলে পানিতে ডুবার আশঙ্কা থাকে। ৫৯. পিঁপড়া বা জল পোকা খেলে ফেললে শরীরে ঘা হয়। ৬০. দাঁত উঠতে বিলম্ব হলে সাত বাড়ি থেকে চাল উঠিয়ে তা রান্না করে কাককে খাওয়ানো ও নিজেও খাওয়া। ৬১. সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়ার জন্য কাউকে কোনো কিছু দেওয়া নিষেধ। ৬২. রাতে কোনো কিছুর লেন-দেন করা ভালো নয়। ৬৩. সকালে দোকান খোলে নগদ বিক্রি না করা পর্যন্ত কাউকে বাকি দেওয়া নিষেধ, তাহলে সারাদিন শুধু বাকিই বিক্রি করতে হয়। ৬৪. দাঁড়িপাল্লা কিংবা মাপার জিনিস পায়ে লাগলে বা হাত থেকে নিচে পড়ে গেলে সেটাকে সালাম করতে হয়, না হলে ঘরের লক্ষ্মী চলে যায়। ৬৫. শূকরের নাম মুখে নিলে ৪০ দিন পর্যন্ত মুখ নাপাক থাকে। ৬৬. রাতে কাউকে চুন দিতে হলে তখন চুনকে চুন না বলে দই বলতে হয়। ৬৭. রাস্তায় চলা সময় হোঁচট খেলে পিছিয়ে পুনরায় চলা শুরু করতে হয়। ৬৮. ফলবান বৃক্ষ বা বাগানে মানুষের বদ নজর এড়াতে মাটির পাতিলে সাদা-কালো রং মেখে তা ঝুলিয়ে রাখতে হয়। ৬৯. বিনা ওযুতে বড়পীর আবদুল কাদের জিলানীর নাম নিলে শরীরের পশম পড়ে যায়। ৭০. সূর্যগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা কিছু কাটলে গর্ভের সন্তান নাক-কান বা ঠোঁট কাটা অবস্থায় জন্ম নেয়। ৭২. মহিলাদের হাতে বালা বা চুড়ি না পড়লে স্বামীর অমঙ্গল হয়। ৭৩. স্ত্রীর নাকে নাক ফুল পরিধান স্বামীর জন্য মঙ্গলজনক মনে করা। ৭৪. দা, কাঁচি বা ছুরি ডিঙ্গিয়ে গেলে তা সেলাম করা। না হলে ক্ষতির আশঙ্কা আছে মনে করা। ৭৫. গলায় মাছের কাঁটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাফ চাইতে হয়। ৭৬. বেচা-কেনা বা লেনদেনের সময় জোর সংখ্যা রাখা যাবে না। যেমন, এক লাখ টাকা হলে সেখানে এক লাখ এক টাকা দিতে হয়। ৭৭. নতুন ঘরের উল্টর-পশ্চিম পার্শ্বের খুটিঁতে লাল ফিতা বেঁধে রাখা। ৭৮. হঠাৎ বাম চোখ কাঁপলে দুঃখ আসবে মনে করা। ৭৯. কোরবানির ঈদের দিন দু’পা বিশিষ্ট প্রাণী (হাঁস, মুরগী) ইত্যাদি জবাই করা নিষেধ। ৮০. স্বামীর নাম মুখে বলা যাবে না এতে স্বামীর অমঙ্গল হয়। ৮১. গরুর বাছুরের গলায় জুতার টুকরা ঝুলিয়ে দিলে সেটা মানুষের কু- দৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকে। ৮২. নতুন বউকে বাপের বাড়ি থেকে ধান এনে স্বামীর বাড়ির গোলায় রাখা। ৮৩. পর পর কয়েক সন্তান মারা যাওয়ার পর ছেলে হলে বড়শি পুরে তার কপালে দাগ দেওয়া। ৮৪. মৃতের বাড়িতে ৩ দিন পযর্ন্ত মাছ-গোশত না খাওয়া, বাধ্যতামূলক নিরামিশ খাওয়া। ৮৫. কবরের খোদাইয়ের সময় প্রথম কোপের মাটি রেখে দেওয়া। ৮৬. ঢেকির ওপর বসে আহার করলে বউ মারা যায় বলে মনে করা। ৮৭. জুতা পরিধান করে মাচায় না উঠা, কিংবা গোলা ঘরে না যাওয়া। ৮৮. গর্ভবতী গাভী মেহেদি গাছের পাতা খেলে বা মেহেদি পাতায় পা দিলে গরুর গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়। ৮৯. আঙ্গুলের ইশারায় কবর দেখালে সেই আঙ্গুল পঁচে যায়। ৯০. যে নারীর নাসিকাগ্র ঘামে সে স্বামীকে অধিক ভালোবাসে। ৯১. ভাঙ্গা কুলায় লাথি মারলে জমির ফসল কমে যায়। ৯২. পুরুষের বুকে লোম থাকা স্ত্রীকে ভালোবাসার পরিচয়াক মনে করা। ৯৩. কুকুরকে পা দিয়ে বাড়িতে গর্ত করতে দখেলে কারো মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে, এটা মনে করা। ৯৪. মাটিতে আঁকাআঁকি করলে বা কিছু লেখলে মেধা কমে যায়। ৯৫. গর্ভবর্তী মহিলাকে এক কাতে শয়ন করতে নেই। এতে বাচ্চা প্রতিবন্ধী হয়। ৯৬. আনারস আর দুধ এক সাথে খাওয়া যায় না ৯৭. চিনি খেলে কৃমি হয় ৯৮. লবণ ভেজে খেলে প্রেসার বাড়ে না ৯৯. টক খেলে কাটা সারে না ১০০. আটকুড়ের (নি:সন্তান) মুখ দেখে কোন কাজে গেলে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয় ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত