
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে থেকে শুরু হবে আমাদের নিউ সেশন,”স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।’স্বাস্থ্য বিষয়ক খুঁটিনাটি,ডায়েট, এক্সারসাইজ বিষয়ক সকল আপডেট এখন থেকে এই সেশনে পাবেন।সুস্থ্য থাকুন,সঙ্গেই থাকুন।🤎
আজকে কথা বলবো ওজন নিয়ে।বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সাধারণ,অসাধারণ,গরীব,বড়লোক-সবারই একটি সাধারণ সমস্যা হলো অতিরিক্ত ওজন,যাকে ওবেসিটি বলা যেতে পারে।একসময় প্রবাদের প্রচলিত ছিল,খেটেখাওয়া দিনমজুর মানুষ মোটা হয়না।কিন্তু আজকাল শুনতে অবাক শোনালেও এটাই সত্যি যে,খেটেখাওয়া মানুষও আজকাল মোটা হয় সঠিক খাদ্যাভাস,পরিমিত ঘুম এবং আরো অন্য সব অভ্যাসগুলো না থাকার কারণে। আজকে আলোচনার মূখ্য বিষয় তাই থাকবে,ওজন কমাবেন কিভাবে।
সঠিক খাদ্যাভাস :
ওজনের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলে থাকে এই খাদ্য অথবা ডায়েট।পরিমিত খাবার যেমন আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম, সেভাবেই নিয়মের অতিরিক্ত খাবার আপনার শরীরকে অক্ষম করে দিতে পুরোপুরি সক্ষম। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে, আড্ডায়,গল্পে আপনার প্রিয় গরম গরম দুধ চাও আপনার শরীরের বাড়তি ওজনের জন্য দায়ী। 😭😭 যেটা আমাদের অনেকের জন্যই দুঃস্বপ্নের মতো ঘটনা।
শরীরকে সুস্থ রাখতে পরিমিত ব্যালেন্সড ডায়েটের তুলনা নেই।এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে খাদ্যের সঠিক অভ্যাস গড়ে তুলবেন? নিচে থাকলো কয়েকটি প্রো টিপ্স:
রাজার মতো ব্রেকফাস্ট বা সকালের নাস্তা:
রাজার মতো বলছি কেন? শুনুন তাহলে।ঘুম থেকে উঠেই সব বয়সের মানুষকে তৈরি হতে হয় ব্যস্ততম একটি দিনের জন্য।ছোট,বড়, মাঝারি সব বয়সের মানুষের জন্যই তাই সাস্থ্যসম্মত ব্রেকফাস্ট বা সকালের নাস্তার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু জমিদার বাঙ্গালী আমরা,সকালের খাবার ভাবতেই তেলতেলে লুচি,পরোটা,অথবা ঝোল ঝোল নেহারী 🤤 বুঝি,এক্ষেত্রে কিন্তু তা করলে চলবে না।এগুলো হেল্দি ব্রেকফাস্ট তো নয়ই,বরং এগুলো শরীরকে আরো ভারী করে তুলবে,হজমের সমস্যা করবে। পুষ্টিকর এবং সারাদিনের জন্য শরীরের রসদ জোগাবে এমন খাবারের মধ্যে ডিম,কলা,পিনাট বাটার অন্যতম।কাজেই সকালে ১/২টি ডিম সিদ্ধ খান।তেলেভাজা খাবার সকালে যত পারুন এড়িয়ে চলুন।পাতলা করে সেঁকা ১/২টি আটার রুটি,সাথে সবজি,ডিম, কলা-চাইলে এগুলো দিয়েও করতে পারেন সহজ সকালের নাস্তা।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ৯টার মধ্যেই ব্রেকফাস্ট শেষ করুন।চা-কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা খান কিন্তু অবশ্যই দুধ চিনি ছাড়া।🥲
মধ্যবিত্ত মধ্যাহ্নভোজন:
সকালে তো খাবেন রাজার মতো,দুপুরে কি করবেন? দুপুরেও খাবেন তবে সেটা সীমিত। দুপুরে খেতে পারেন ভাত।আমরা অনেকেই ভাবি ভাত বাদ দিয়ে ডায়েট কন্ট্রোল করার কথা।কিন্তু সেটা ঠিক না।কারণ আমরা বাঙালি এবং ভাত আমাদের প্রধান খাবার।ভাত খেয়ে আমরা অভ্যস্ত।আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজের শক্তি যোগায় শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার।আমাদের জন্য ভাত হলো সেটার মূল উৎস।কাজেই ভাত না খেলে আমরা দূর্বল হয়ে যেতে পারি।কিন্তু ভাত খাবেন বলে যে ২/৩প্লেট অনায়াসে খাবেন,তা কিম্তু হবেনা।পরিমিত ১/১.৫কাপ ভাত খেতে পারেন।সাথে একবাটি ডাল,একবাটি সবজি,এবং একবাটি সালাদ হবে আপনার জন্য উপাদেয়। ডাল খুবই ভালো একটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন যেটি মাছ মাংসের পরিপূরক।দুপুরের মেন্যুতে মাছ অথবা মাংস রাখতে পারেন।তবে রেড মিট এড়িয়ে চলা যেতে পারে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য।
ফকিরি ডিনার:
শুনে হাসি পেলেও এটাই সত্যি যে,ফকিরের মতো যদি ডিনার না করেছেন তাহলেই ভুগেছেন।আমরা মনে করি, ডিনার বা রাতের খাবার মানেই জমকালো আয়োজন😂।কিন্তু নাহ,এই ডিনারের উপরই সত্যি বলতে আপনার ওজনের নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে নির্ভর করে।সন্ধ্যা ৭/৮ টার মধ্যে রাতের খাবার শেষ করে ফেলার চেষ্টা করুন।রাত যত গভীর হবে,আপনার পেটের চর্বি তত উঁচু 😏 হবে।কাজেই রাতের খাবার আগেই সেরে ফেলার চেষ্টা করবেন।রাতের খাবারে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।কারণ রাত আপনার বিশ্রামের সময়,ক্যালরী বার্নের সময় নয়।রাতে খেয়ে ফেলতে পারেন একবাটি সালাদ,এক কাপ দুধ।যদি সম্ভব না হয় তাহলে মুরগির মাংসের স্ট্যু উইথ সর্টে ভেজিটেবল।আর এগুলো যদি একটাও সম্ভব না হয় তাহলে খুবই পাতলা একটি রুটির সাথে একবাটি সবজি খেয়ে সেরে ফেলতে পারেন রাতের খাবার। খেয়েই কিন্তু সাথে সাথে শুয়ে পড়া যাবেনা। মিনিমাম ঘুমানোর ২ঘন্টা আগে রাতের খাবার সেরে ফেলবেন।
এই হলো সুস্থ্য খাদ্যাভ্যাসের একটু নমুনা।পরবর্তী ব্লগে এক্সারসাইজ এবং ঘুমের শিডিউল নিয়ে আলোচনা করবো।আপনারা আপনাদের প্রশ্ন এবং জিজ্ঞাসা লিখে আমাদেরকে কমেন্ট করুন।আমাদের এক্সপার্ট টিম যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের রেস্পন্ড করবে ইনশাআল্লাহ।
সুস্থ থাকুন,আলোর পথের সাথেই থাকুন,আল্লাহ হাফেজ।🤎