এশিয়ান হাইওয়ে ও একটি দৈত্যের গল্প।

এক জঙ্গলে তিন মানব (একজন চাইনিজ একজন নিগ্রো অপরজন বাঙ্গালী) একটি চেরাগের সন্ধান পায় । চেরাগ ঘসতেই দৈত্য বেড়িয়ে বলে আমি তোমাদের একটি করে ইচ্ছা পুরন করে দিতে পারি বল তোমরা কে কি চাও ? চাইনিজ ভদ্রলোক বলল : আমাদেরতো নাক বোচা দেখতে বিশ্রী লাগে আর লোকে আমাদের নাক দেখেই বলে আমরা চাইনিজ। তাই আমি চাই আমার নাকটা অন্যদের মত স্বাভাবিক হোক। দৈত্য : ঠিক আছে হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে তার নাক বাঁশিরমত হয়ে গেল। এবার নিগ্রোর পালা । নিগ্রো : দেখ দৈত্য আমার শরিরের রং কালো বলে সবাই আমাদের নিম্ন শ্রেনীর বিবেচনা করে তাই আমি চাই আমার গায়ের রং ফর্সা করে দাও। সঙ্গে সঙ্গে নিগ্রোর গায়ের রং ফর্সা হয়ে গেল। এবার আসল বাঙ্গালীর পালা।
বাঙ্গালী : আমার আসলে নিজের জন্য কিছু চাই না । আমি চাই ওরা দুজন আগে যেমন ছিল অর্থাৎ চাইনিজের নাক বোচা আর নিগ্রোর গায়ের রং কালো । ওদেরকে আবার সেই রকম করে দাও। এই গল্পটি বলার কারন প্রায়সই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের চরিত্রে এই উপসর্গটি পরিলক্ষিত হয়। আমরা নিজেদের নিয়ে চিন্তা না করে অন্যের বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাই বেশী । মূল প্রসঙ্গে কথা বলি । বর্তমানে অন্য অনেক বিতর্কিত ইসুর মধ্যে আরও একিট জনপ্রিয় বিষয় হচ্ছে এশিয়ান হাইওয়ে। এটা বর্তমান বিশ্বর উন্নয়নের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হয়ে দাড়িয়েছে। পুরো ইউরোপ মহাদেশ স্থল পথে বিশাল যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করে ফেলেছে। তার দেখাদেখি এশিয়াও অনুরূপ নেটওয়ার্ক স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশও সঙ্গত কারনেই যুক্ত হতে যাচ্ছে সেই নেটওয়ার্কে। প্রশ্ন এসেছে রাস্তা পছন্দ করা নিয়ে । বর্তমান সরকার তিনটি রাস্তা অনুমোদন করেছে ।
তার আবার দিটোই ভারত থেকে এসে ভারতেই গিয়ে প্রবেশ করবে। একদল রাজনীতিবীদ পরিস্কার বললে বিএনপি ও এর সমমনা দল গুলো এতে ঘোরতর আপত্তি জানাচ্ছে । তাদের যুক্তির মধ্যেই গল্পের সারমর্ম। তারা বলতে চাচ্ছে এতে ভারত অনেক বেশী উপকৃত হবে । অবশ্যই তাই ভারত বেশী উপকৃত হবে। কিন্তু আমরা কি ভারত কতটুকি উপকৃত হবে তা নিয়ে আলোচনা করব নাকি বাংলাদেশ কতটুকু উপকৃত হবে তা নিয়ে আলোচনা করব ? তারা একবারও বলছে না এশিয়ান হাইওয়ে ভারত থেকে এসে ভারতে প্রবেশ করলে বাংলাদেশের কি ক্ষতি হবে। সার্বভৌমত্ব আর জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে যে প্রশ্নটি তোলা হয় তাতো নিতান্তই হাইপোথেটিকাল। ইউরোপের উন্নয়নশীল বা কম উন্নত দেশ বা যাদের অস্ত্র সমৃদ্ধ নয় তাদেরকি সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন হয়েছে ? এর আগেও বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলে তথ্য পাচার হবে এই নির্বুদ্ধিতায় বিনা পয়সায় যুক্ত না হয়ে পরে নিজের খরচে তা করতে হয়েছে। এবার এশিয়ান হাইওয়ের ব্যাপরেই একই হতে যাচ্ছে সম্ভবত। আমাদের অনেকটা চারদিকেই যেহেতু ভারত তাই রাস্তা ভারত থেকে এসে ভারতে যাবে এটাইতো স্বাভাবিক।
আমরা যদি ভারতের মধ্য দিয়ে অন্য দেশে যেতে পারি তাহলে সেই রাস্তা কিভাবে আমাদের ক্ষতি করবে ? আসলে আমাদের মানষিকতা বদলাতে হবে । ঐ গল্পের বাঙ্গালীর মত অন্যের ক্ষতি করে খুশি না থেকে নিজের লাভ চিনতে হবে। সার কথা : চাইনিজের নাক সুন্দর হোক নুগ্রোর গায়ের রং ফর্সা হোক তাতে আপত্তি না করে নিজের লাভটা আসুন খুঁজি।

উল্টো দৈত্যের গল্প

মহুয়ার সুন্দর দৈত্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *