এক বুযুর্গ ব্যক্তির অবস্থা ও তার মায়ের ব্যস্ততা
জনৈক আবেদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যুবক বয়সে তোমার নাফরমানি করেছি এবং বার্ধক্যে এসে তোমার আনুগত্য করেছি। আমি যখন মোটাতাজা ছিলাম তখন তোমাকে ক্রোধান্বিত করেছি। আর যখন হালকা পাতলা হলাম তখন তোমার ইবাদাত শুরু করলাম। আমার মনে হচ্ছে হয়ত তুমি আমাকে আমার ভয়ভীতি সহকারে কবূল করেছ কিংবা আমার শরীর আমানত হিসাবে রেখে দিয়েছ।
বুযুর্গ লোকটি বলেন, অতঃপর তার উপর ক্ষোভ প্রতিভাত হল এবং ভূতলে পতিত হলে তার কপাল ফেটে যায়। অতঃপর তার মা তার দিকে ছুটে এসে উভয় চোখের মাঝখানে চুমো খেয়ে কপাল মুছে দিয়ে ক্রন্দন করতে করতে বলতে থাকে, দুনিয়াতে আমার নয়নশীতলকারী পরকালে আমার হৃদয়ের ফল তোমার বৃদ্ধা মায়ের সাথে কথা বল এবং চিন্তিত মায়ের জবাব দাও। বুযুর্গ বলেন, যুবকটির জ্ঞান ফিরে আসে।
তখন তার হাত ছিল কলিজার উপর তার দেহে আত্না আনচান করছিল। তার গন্ডদেশ বেয়ে অবিরাম অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছিল। তখন সে তার বৃদ্ধা মাকে বলে হে আমার আম্মা। এই তো সেদিন যার ব্যাপারে আমাকে সতর্ক করেছিলেন, এটি সে ভয়াল ময়দান এবং বোঝা নামানোর স্থান অতীত জীবনের জন্য আফসোস! দীর্ঘ জীবনের জন্য আফসোস! যেগুলো আমি হেলায় পেছনে ফেলে এসেছি। হে আমার মা!
আম্মা আমি যা বলব তাই করে দেবে। মা বললেন, প্রিয় বতস আমার, প্রাণ তোমার জন্য কি উতসর্গ চাও?
সে বলে, আমার গন্ডদেশ মাটিতে রেখে দাও। এবং তোমার পা দ্বারা একে পদদলিত করে দাও এতে দুনিয়াতেই এর ফলাফল ভোগ করতে পারবো এবং পরম প্রভূর স্বাদ অনুভব করতে পারব। আশা করি তিনি আমার প্রতি করুণা করবেন এবং শিখায়িত অগ্নি থেকে আমাকে নাজাত দেবেন।
তার মা বলেন, আমি তখন উঠে গিয়ে তার গন্ডদেশ মাটি থেকে উঠিয়ে দিলাম। এ সময় তার চোখ অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে। আমি আমার পা দ্বারা তার গন্ডদেশ পদাঘাত করলে সে ক্ষীণ আওয়াজে বলতে লাগল যে গুনাহ করে এবং নাফরমান হয়ে যায় তার এই শাস্তি। যে অপরাধ করে এবং নিকৃষ্ট কাজ করে তার এই সাজা যে তার প্রভূর দরজায় আসে না। তার এই সাজা যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে উপস্থিত হয় না।
বর্ণনাকারী বুযুর্গ লোকটি বলেন, অতঃপর যুবকটি সেখানেই ইন্তেকাল করেন। পরবর্তীতে তার মা তাকে স্বপ্নে দেখেন যে, সে চাঁদের টুকরা হয়ে মেঘ থেকে বের হয়ে এসেছে। তখন তার মা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, প্রিয় বতস! তোমার মাওলা তোমার সাথে কি আচরণ করেছেন? সে বলে, আল্লাহ তা’আলা আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিয়েছেন এবং নবী করিম (সাঃ) এর নৈকট্য দান করেছেন।
মা তখন বলেন বতস মৃত্যুর সময় আমি যে কথাগুলো তোমার মুখ থেকে শুনেছিলাম সেগুলো কি ছিল? সে বলল, হে মা! এক ঘোষক ডেকে ডেকে আমাকে বলছিল হে ইমরান আল্লাহ তা’আলার দূতের নিকট চলে আস আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম এবং আমার পরম প্রভুর সম্মুখে “আমি হাজির” এ কথা বলেছিলাম।