ইতিহাসের টুকরো কাহিনী-ইসলামিক

নববী আদর্শের বাস্তব প্রতিচ্ছবিহিন্দুস্থানে মাওলানা মুজাফফর হুসাইন নামক এক বুযুর্গ ছিলেন। ইবাদত বন্দেগীতে তিনি কঠোর নীতি অনুসরণ করতেন। কোনদিন তার তাহাজ্জুদের নামায পর্যন্ত কাযা হয়নি, এমনকি সফরেও না। সেই মহান বুযুর্গ একবার কোথাও যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এক বৃদ্বকে দেখতে পেলেন, ভারী এক বোঝা মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছেন। চেহারায় তার ক্লান্তির রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বৃদ্বের এই করুণ  অবস্থা দেখে তিনি বোঝাটা নিজের মাথয় তুলে নিলেন। অথচ  ঐ সময় তিনিও বার্ধক্যের কোঠায় পা দিয়েছিলেন।

যাই হোক তারা দুজনে গল্প করতে করতে গ্রামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। আলোচনার ফাঁকে বৃদ্বটি একবার বললেন মৌলভী মুজাফ্ফর হুসাইন সাহেবের সাথে সাক্ষাত করার আমার একান্ত ইচ্ছা। ইদানিং তিনি নাকি এদিকে আসা যাওয়া করেন। মুজাফ্ফর হুসাইন সাহেব বললেন, আপনি চিন্তা করবেন না, আমি আপনাকে তার সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিব। গন্তব্যে পৌঁছে সে আবার অনুনয়ের সুুরে বলল, আপনি কিন্তু অবশ্যই আমাকে মুজাফ্ফর হুসাইনের সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দেবেন। তখন তিনি বললেন, আমিই সেই মুজাফ্ফর হুসাইন। তার কথা শুনে লোকটি লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে গেলো এবং ঝাঁপ দিয়ে তার পায়ে পড়ার উপক্রম হলো। তিনি তাকে বাঁধা দিয়ে বললেন, ভাই এক মুসলমানের একটু কাজ করে দিয়েছি এতে কিইবা আর হয়েছে? সেই বুযর্গের আরেকটি ঘটনা একবার তিনি কোন এক বিশেষ কারণে বিড়–লী নামক অঞ্চলে গেলেন। সেখানে পৌঁছে রাত যাপনের উদ্দেশ্যে এক সারাইখানায় উঠলেন। সারাইখনায় ছেলেসহ আরেকজন বড় ব্যবসায়ীও উঠেছিল। ছেলেটির হাতে ছিল একটি স্বর্ণের ব্যাগ আলাপচারিতার মাধ্যমে তারা একে অপরের পরিচয় ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জেনে নিলেন। শেষ রাতে তিনি তাহাজ্জুদের নামায পড়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলেন।

এদিকে বণিক ঘুম থেকে জেগে দেখল ছেলের হাতের সেই স্বর্ণের ব্যাগ নেই। মুজাফফর রহ. খুবই সাধারণ জীবন যাপন করেতন, দারিদ্রের চিহ্ন লেগে থাকত তার দেহ পোশাকে। তাই ছেলের হাত শুন্য দেখার সাথে সাথে তার সন্দেহ হলো রাতের সেই দরিদ্র লোকটিই হয়ত এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। এই ভেবে সে দ্রুত তার পিছু নিলো। কিছুদূর যেতেই সে তাকে দেখতে পেল এবং কর্কশ আওয়াজে ডাক দিলো; কিন্তু তিনি তাকে বিনম্রভাবে জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে ভাই? প্রতিউত্তরে লোকটি বড়সড়ো এক ঘুষি বসিয়ে দিয়ে বলল, স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে ভেগেছ আর এখন বলজচ কী হয়েছে? জলদি থানায় চলো। তিনি তার কোনরুপ প্রতিবাদ না করে বললেন চলো ভাই থানায়ই চলো। থানার ওসি ছিল হযরতের রীতিমত ভক্ত। দূর থেকে তাকে দেখেই সে দাঁড়িয়ে গেলো। ওসি সাহেবের এই কাণ্ড দেখে বণিক লোকটি একেবারে ভড়কে গেলো এবং বুঝে ফেলল যাকে সে ধরে এনেছে তিনি সাধারণ কোন লোক নন। বুযুর্গ তাকে অভয় দিয়ে বললেন, ভয় পেওনা আমি তোমার কোন ক্ষতি হতে দিবনা। ঘটনার বিবরণ শুনে ওসি সাহেব তো রেগে আগুন। কিন্তু তিনি তাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, তাকে এখন কিছু বললে আমি খুব কষ্ট পাব; বরং আপনি তাকে ছেড়ে দিন।

[পছন্দীদা ওয়াকেয়াত, পৃ ৮৯-৯১ ] একনিষ্ঠতার অনুপম দৃষ্টান্ত শায়খ আবুল হাসান নূরী রহ. এর সময়কার ঘটনা। একবার জাহাজের বহরে তৎকালীন বাদশার জন্য বিশ মশক মদ আসছিল। ঘটনাক্রমে আবুল হাসান নূরী রহ. ও সেই সমুদ্রের পাড় ধরে হাটছিলেন। জাহাজটি যখন তীরে নোঙ্গর করল তখন তিনি নাবিককে জিজ্ঞাসা করলেন এতে কী আছে? সে বললো এতে বাদশার উদ্দেশ্যে প্রেরিত বিশ মশক মদ আছে। নাবিকের কথা শুনে তিনি ভেতরে গিয়ে মদের মটকাগুলো ভাঙ্গতে শুরু করলেন। উনিশটি মশক ভাঙ্গা শেষ হলে হঠাৎ তিনি থেমে গেলেন এবং বিশতম মশকটি রেখেই চলে গেলেন। বাদশার নির্দেশে তাকে রাজদরবারে উপস্থিত করা হলো। বাদশা তাকে এরকম রুঃসাহসিকতা প্রদর্শেনের হেতু জিজ্ঞাসা করলেন? উত্তরে তিনি বললেন, আল্লাহ তা’লা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। এমর্মে তিনি এরশাদ করেছেন। হে নবী আপনি মানুষদেরকে সৎ কাজের আদেশ করুন এবং অসৎ কাজ থেকে বাধা প্রদান করুন। এবং এ কাজে আপতিত বিপদে ধৈর্য ধারণ করুন।আল্লাহ তাআলার সেই আদেশ পালনার্থেই আমি এমনটি করেছি। তখন বাদশা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তাহলে একটা আবার রেখে দিয়েছ কেন? তিনি বললেন, উনিশতম মশকটা ভাঙ্গার পর আমার মনে এই ধারণার উদ্রেক হলো যে, তুমি অনেক বড় পূন্যের কাজ করে ফেলেছো। অন্যায় কাজে বাধা দিতে বাদশাকে পর্যন্ত পরওয়া করোনি। গর্বে আমার বুকটা তখন ফুলে উঠেছিল। তাই বিশতম মশকটা রেখেই আমি চলে আসি।

কারণ ঐ মুহুর্তে আল্লাহর সন্তুষ্টির বিষয়টি আমার অন্তরে অনুপস্থিত ছিল। বাদশা তার এই একনিষ্ঠতায় এতটাই মুগ্ধ হলেন যে, শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে তার একনিষ্ঠ ভক্তে পরিণত হয়ে গেলেন। এবং তাকে পুলিশ অফিসার পদে নিয়োগ করে দিলেন। [পছন্দীদা ওয়াকেয়াত, পৃ ৫৩-৫৪] নববী আদর্শের বাস্তব প্রতিচ্ছবি হিন্দুস্থানে মাও. মুজাফফর হুসাইন নামক এক বুযুর্গ ছিলেন। ইবাদত বন্দেগীতে তিনি কঠোর নীতি অনুসরণ করতেন। কোনদিন তার তাহাজজুদের নামাজ পর্যন্ত কাযা হয়নি এমনকি সফরেও না। সেই মহান বুযুর্গ একবার কোথাও যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এক বৃদ্বকে দেখতে পেলেন, ভরী এক বোঝা মাথয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। চেহারায় তার ক্লান্তির রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বৃদ্বের এই করুন  অবস্থা দেখে তিনি বোঝাটা নিজের মাথয় তুলে নিলেন। অথচ  ঐ সময় তিনিও বার্ধক্যের কোঠায় পা দিয়েছিলেন। যাই হোক তারা দুজনে গল্প করতে করতে গ্রামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। আলোচনার ফাঁকে বৃদ্ধটি একবার বললেন মৌলভী মুজাফফর হুসাইন সাহেবের সাতে সাক্ষাত করার আমার একান্ত ইচ্ছা। ইদানিং তিনি নাকি এদিকে আসা যাওয়া করেন। মুজাফফর হুসাইন সাহেব বললেন আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আপনাকে তার সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিব। গন্তব্যে পৌছে সে আবার অনুনয়ের সুুরে বলল, আপনি কিন্তু অবশ্যই আমাকে মুজাফফর হুসাইনের সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দেবেন।

তখন তিনি বললেন, বললেন আমিই সেই মুজাফফর হুসাইন। তার কথা শুনে লোকটি  লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে গেলো এবং ঝাপ দিয়ে তার পায়ে পড়ার উপক্রম হলো। তিনি তাকে বাধা দিয়ে বললেন, ভাই এক মুসলমানের একটু কাজ করে দিয়েছি এতে কিইবা আর হয়েছে? সেই বুযর্গের আরেকটি ঘটনা : একবার তিনি কোন এক বিশেষ কারণে বিড়–লী নামক অঞ্চলে গেলেন। সেখানে পৌছে রাত যাপনের উদ্দেশ্যে এক সারাইখানায় উঠলেন। সারাইখনায় ছেলেসহ আরেকজন বড় ব্যবসায়ীও উঠেছিল। ছেলেটির হাতে ছিল একটি স্বর্ণের ব্যাগ  আলাপচারিতার মাধ্যমে তারা একে অপরের পরিচয় ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জেনে নিলেন। শেষ রাতে তিনি তাহাজজুদের নামাজ পড়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়না হয়ে গেলেন। এদিকে বণিক ঘুম থেকে জেগে দেখল ছেলের হাতের সেই স্বর্ণের ব্যাগ নেই। মুজাফফর রহ. খুবই সাধারন জীবন যাপন করেতন দারিদ্রের চিহ্ন লেগে থাকত তার দেহ পোশাকে। তাই ছেলের হাত শুন্য দেখার সাথে সাথে তার সন্দেহ হলো রাতের সেই দরিদ্র লোকটিই হয়ত এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

এই ভেবে সে দ্রুত তার পিছু নিলো। কিছুদূর যেতেই সে তাকে দেখতে পেল এবং কর্কশ আওয়াজে ডাক দিলো কিন্তু তিনি তাকে বিনম্রভাবে জিজ্ঞাসা করলেন, কি হয়েছে ভাই ? প্রতিউক্করে লোকটি বড়সড়ো এক ঘুষি বসিয়ে দিয়ে বলল স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে ভেগেছ আে এখন বলজচ কী হয়েছে  ? জলদি থানায় চলো। তিনি তার কোনরুপ প্রতিবাদ না করে বললেন চলো ভঅই থানায়ই চলো।
থানার ওসি ছিল হযরতের রীতিমত ভক্ত। দূর থেকে তাকে দেখেই সে দাড়িয়ে গেলো। ওসি সাহেবের এই কাণ্ড দেখে বণিক লোকটি একেবারে ভড়কে গেলো, এবং বুঝে ফেলো যাকে সে ধরে এনেঝে তিনি সাধারণ কোন লোক নন। বুযুর্গ তাকে অভয় দিয়ে বললেন, ভয় পেওনা আমি তোমার কোন ক্ষতি হতে দিবনা। ঘটনার বিবরন শুনে ওসি সাহেব তো রেগে আগুন। কিন্তু তিনি তেিক থামিয়ে দিয়ে বললেন, তাকে এখন কিছু বললে আমি খুব কষ্ট পাব। আপনি তাকে ওকে ছেড়ে দিন। ( পছন্দীদা ওয়াকেয়াত, পৃ ৮৯-৯১ )

কাক ও পেঁচার দ্বন্দ্ব

হরিণ শিকারী,নেকড়ে এবং বুনো শূকর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *