হযরত জিবরাঈল (আঃ) নবী করীম (সাঃ)-এর কাছে এসে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন—
এক ব্যক্তি পাহাড়ের উচ্চ চূড়ায় পাঁচশ বছর ধরে আল্লাহ পাকের ইবাদতে মশগুল ছিলেন। সেই পাহাড়ের চারদিক লবণাক্ত পানি দ্বারা বেষ্টিত ছিল। আল্লাহ তা’আলা তার জন্য পাহাড়ের অভ্যন্তরে সুপেয় পানির ঝর্ণা এবং একটি আনার গাছের সৃষ্টি করেন। প্রতিদিন সেই ব্যক্তি আনার ফল খেতেন এবং পানি পান করতেন। আর সেই পানি দিয়ে ওযু করতেন।
সে ব্যক্তি আল্লাহ তা’আলার কাছে এই দোয়া করলেন—
“হে আল্লাহ! আমার দেহ থেকে রূহ যেন সেজদারত অবস্থায় কবয করার ব্যবস্থা করা হয়।”
আল্লাহ তা’আলা তার এই দোয়া কবুল করলেন।
হযরত জিবরাঈল (আঃ) বলেন— “আমি আসমানে আসা-যাওয়ার সময় তাকে সেজদারত দেখতাম।”
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার সম্পর্কে বলবেন—
“আমার এই বান্দাকে আমার রহমতে জান্নাতে প্রবেশ করাও।”
কিন্তু ঐ ব্যক্তি বলবে—
“না, বরং আমার আমলের বরকতে।”
তখন নির্দেশ আসবে—
“আমার নিয়ামতের বিপরীতে তার কৃত আমল পরিমাপ করো।”
পরিমাপ করে দেখা যাবে, পাঁচশ বছরের ইবাদাত শেষ হয়ে গেছে শুধু একটি চোখের নিয়ামতের বিনিময়ে!
তখন আল্লাহ তা’আলা নির্দেশ দেবেন—
“আমার বান্দাকে জাহান্নামে নিয়ে যাও।”
ফেরেশতারা তখন তাকে নিয়ে রওয়ানা হবে। কিছু দূর যাওয়ার পর ঐ ব্যক্তি আরজ করবে—
“হে আল্লাহ! আমাকে তোমার রহমতে জান্নাতে প্রবেশ করাও।”
তখন নির্দেশ আসবে—
“তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আস।”
আল্লাহ তা’আলার নিকট ফিরিয়ে আনার পর তাকে নিচের প্রশ্নগুলো করা হবে—
🔹 তোমাকে কে সৃষ্টি করেছেন?
🔸 আল্লাহ, আপনি।
🔹 এই কাজটা তোমার আমল না আমার রহমতের বরকতে হয়েছে?
🔸 আপনার রহমতে।
🔹 তোমাকে পাঁচশ বছর ইবাদত করার শক্তি ও তাওফীক কে দিয়েছে?
🔸 হে আল্লাহ! আপনি।
🔹 সমুদ্রের মাঝে পাহাড়ের উপর তোমাকে কে পৌঁছিয়েছে? লবণাক্ত পানির মাঝে সুপেয় পানির ব্যবস্থা কে করেছে? আনার গাছ কে সৃষ্টি করেছে? তোমার দরখাস্ত মুতাবেক সেজদার মাঝে কে তোমার রূহ কবয করার ব্যবস্থা করেছে?
🔸 হে পরওয়ারদিগার! আপনি।
তখন ইরশাদ হবে—
“এই সব কিছু আমার রহমতে হয়েছে এবং আমার রহমতেই তোমাকে জান্নাতে দাখিল করছি।”
(রিয়াদুস সালেহীনঃ ২/৫৩, ৫৪)
