আল্লাহ ওয়ালাদের রিযিক
হযরত হাবীব আজমী (রহঃ) এর স্ত্রী ছিলেন বড় রুক্ষ স্বভাবের মানুষ। একদিন তিনি স্বামীকে বললেন, আল্লাহ পাক যদি তোমাকে কিছু দান না করেন, তবে এমন কোন মানুষের মজদুরী ক যিনি তোমাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। হযরত আজমী (রহঃ)এর স্ত্রীর কথার কোন উত্তর না দিয়ে নীরবে এক জঙ্গলে চলে গেলেন। সারাদিন সেখানে ইবাদত বন্দেগী করে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে এলেন। স্ত্রী কর্কশ স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, মুজরী কোথায়? তিনি বললেন, আমি যে মনিবের কাজ করি তিনি বড় দাতা ও দয়ালু। তাঁর নিকট পারিশশ্রমিক চাইতে আমার লজ্জাবোধ হয়।
এভাবে কয়েকদিন কেটে গেল। প্রতিদিনই তিনি স্ত্রীকে একই উত্তর দিতেন। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর স্ত্রী অতিষ্ঠ হয়ে একদিন বললেন, আজ তুমি কাজের বিনিময় নিয়ে ঘরে ফিরবে। অন্যথায় ঐ মনিব ত্যাগ করে এমন কোন মনিবের কাজ করবে যিনি নিয়মিত শ্রমের বিনিময়ে দেবেন। সুতরাং তিনি ওয়াদা করলেন যে, আজ অবশ্যই বিনিময় নিয়ে আসবেন। কিন্তু আজও জঙ্গলে সারাদিন ইবাদত করে সন্ধ্যায় খালি হাতে ঘরে ফিরতে লাগলেন। পথে ভাবতে লাগলেন, স্ত্রী যখন দেখবেন, আজও শূন্য হাতে ঘরে ফিরেছি, বিনিময় কিছুই পাওয়া যায়নি। তখন তাকে কি উত্তর দিব, কি বলে তাকে সান্ত্বনা দেব, মনে মনে এসব চিন্তা করে অস্থির হয়ে পড়লেন।
অবশেষে কম্পমান বক্ষে যখন বাসার নিকটে এসে পৌঁছলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন, রান্নাঘর হতে ধুয়া বের হচ্ছে, ঘরে আসন পেতে দস্তরখান বিছানো হয়েছে এবং স্ত্রী খুশিমনে এঘর ওঘর ছুটোছুটি করছে। স্বামীকে দেখামাত্র তিনি বলে উঠলেন, আসলে তোমার মনিব কৃপণ নয়। তিনি মন খুলেই তোমার পারিশ্রমিক পাঠিয়েছেন। তোমার মনিবের সেই লোক আমাকে বলে গেছেন যে, হাবীবকে বলবে যেন সে বেশী বেশী ইবাদত করতে থাকে।
তাঁর মনিব বিনিময় দিতে কখনো বিলম্ব বা কৃপণতা করেন না। অতঃপর স্ত্রী তাকে কয়েকটি টাকার বান্ডিল দেখিয়ে বললেন, এরি টাকার বান্ডিল সে তোমার জন্য রেখে গেছেন। এটা দেখে হযরত হাবীব আজমী বলে উঠলেন, যেই মহান জাতের কুদরতী হাতে গোটা আসমান ও জমিনের ধনভাণ্ডার তিনিই এ বিনিময় পাঠিয়েছেন। একথা শুনে তাঁর স্ত্রী ও অতীত অপরাধের জন্য তওবা করে বললেন আর কখনো আমি আপনাকে তাকার জন্য বিরক্ত করব না।