আম্বিয়ায়ে কেরামের বরযখী জিন্দেগী

আম্বিয়ায়ে কেরাম (আঃ) দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার পরও আলমে বরযখে আছেন। যদিও শহীদগণ সম্পর্কে কুরআন মাজিদে এসেছে যে, তাদেরকে মৃত বল না। কিন্তু আম্বিয়ায়ে কেরাম সম্পর্কে বিভিন্ন রেওয়াত দ্বারা প্রমাণিত যে, তারা এ জগত ত্যাগ করার পরও জীবিত। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা বায়হাকী (র.) এবং প্রখ্যাত গ্রন্থকার আল্লামা সুয়ুতী (র.) এ বিষয়ের উপর পৃথক পৃথক রচনা করেছেন এবং নবীগণের হায়াত প্রমাণিত করেছেন। আল্লামা (র.) স্বীয় ফতোওয়ায় লিখেছেন, রাসূল আকরাম (সাঃ) এবং অন্যান্য আম্বিয়া কেরাম কবরে জীবিত হওয়ার বিষয়টি দলীলসহ অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এ সম্পর্কে বর্ণিত হাদিসসমূহ তাওয়াতুরের অকাট্য স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

হযরত আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন, আম্বিয়া (আঃ) জীবিত এবং নিজ নিজ কবরে নামাজ পড়েন। (আবু ইয়ালা) এ নামাজ বাধ্যতামূলক নয়, বরং তৃপ্তির জন্য।

হযরত আবু দারদা কর্তৃক বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন জুমার দিন আমার প্রতি বেশী বেশী দুরুদ পাঠ করবে, কেননা এ দিনটা মাশহুদ। এর অর্থ ফেরেশতাগণের এ দিনে অধিক মাত্রায় সমাগম ঘটে। তারপর তিনি বলেন, তোমাদের যে কেউ আমার উপর দুরুদ পাঠ করে, তা আমার নিকট তৎক্ষণাৎ পেশ হয় যতক্ষণ সে এতে লিপ্ত থাকে। উত্তর দিলেন, ইন্তেকালের পরও আমার নিকট দুরুদ পেশ করা যেতে পারে; কেননা আল্লাহর রাসূলগণ পরজগতে গিয়েও জীবিত থাকেন। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা জমিনের জন্য নবীগণের শরীর ভক্ষণ করা হারাম সাব্যস্ত করেছেন। সুতরাং আল্লাহর নবীগণ জীবিত থাকেন এবং তাদেরকে রিযিক দেওয়া হয়। (ইবনে মাজাহ)

উক্ত হাদিস শরীফ দ্বারা জানা গেল যে, আম্বিয়ায়ে কেরাম (আঃ) ইহজগত ত্যাগ করে জীবিত আছেন এবং রিযিকও প্রাপ্ত হন। এই রিযিক ঐ জগতেই উপযোগী। শহীদগণ সম্পর্কেও রিযিক প্রাপ্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু আম্বিয়ায়ে কেরাম এর জীবন এবং রিযিকপ্রাপ্তি শহীদগণের চেয়ে পরিপূর্ণ। হযরত শাহ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (র.) আশিআতুল লামআত শরহে মেশকাত গ্রন্থে লিখেছেন, হযরত আম্বিয়ায়ে কেরামের হায়াতের বিষয়টি সর্বসম্মত। এতে কারো দ্বিমত নেই।

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।