আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ১

বিবি আছিয়ার রাজমহলে আগমন অবধি ফেরাউনের সাথে তাঁর দাম্পত্য জীবন বেশ সুখেই চলতেছিল। যুগল স্বামী স্ত্রীর কোন দিক দিয়ে পারিবারিক অশান্তি ছিল না।

বিবি আছিয়ার আগমন ঘটেছে বহুদিন হয়। এতদিনে তিনি সাতটি সন্তানের জননী হয়েছেন। তাঁর ধর্ম কর্ম এবং দৈনন্দিন উপাসনা অর্চনা ঠিকমতই চলতেছে।

অবশ্য এ কাজগুলো তিনি গোপনে করেন। কারণ তাঁর স্বামী ধর্মকর্ম নিজে তো করতেনই না; এগুলো তাঁর পত্নী করুক এটাও তিনি পছন্দ করতেন না। সুতরাং অযথা স্বামীর সাথে ঝগড়া না বাঁধিয়ে তিনি ব্যক্তিগত ধর্ম-আচার এমন অবস্থায় সম্পন্ন করতেন যাতে তাঁর স্বামী ফেরাউন এটা কোনরূপে জানতে না পারে।

কিন্তু যখন ফেরাউন তার সাহসের সীমা অসম্ভবরূপে বাড়িয়ে ফেলে নিজেকে স্বয়ং খোদা বলে ঘোষণা করল, তখন আছিয়া তাঁর মনের স্বস্তি হারিয়ে ফেলে অস্থির হয়ে পড়লেন। তাঁর হৃদয়-মধ্যে হায় হায় করে উঠল; স্বামী একি করলেন!

তিনি যে অচিরেই আল্লাহ তায়ালার ভীষণ গজবে পতিত হয়ে নিজেতো ধবংস হবেনই; সাথে সাথে মিশরের এ অসংখ্য নির্বোধ লোকগুলোরও ধ্বংস সাধন করবেন।

দুঃখে চিন্তায় আছিয়া ভাবতে ভাবতে স্থির করলেন যে, না! নীরব হয়ে বসে থাকলে চলবে না। যে কোন উপায় কেঁদে কেঁদে অনুরোধ দ্বারা কিংবা তাঁকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এ ভয়ঙ্কর ধবংসের পথ হতে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবেন। স্বামীর মৃত্যু চিন্তা সহ্য করা যায় না। তাঁকে ধ্বংসের পথে চলতে দেখে নিশ্চুপ থাকা চলে না।

একদা আছিয়া নিজের শয়ন কক্ষে বসে এ বিষয়ই চিন্তামগ্ন ছিলেন। সহসা সেখানে মিশরাধিপতি ফেরাউন বলল, আছিয়া! তোমার সুন্দর বদনখানায় এমন মলিন চিহ্ন কেন ফুটছে বল তো? তুমি কি জান না আমার এ বিশাল রাজ্য, অতুল ঐশ্বর্য, অফুরন্ত যশ গৌরব একদিকে আর তোমার ঐ অনুপম সৌন্দর্যমণ্ডিত বদনখানার স্নিগ্ধ হাস্য রেখাটুকি আর একদিকে।

আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

Written By

More From Author

You May Also Like

একটি নদীর গল্প

শুধুমাত্র হরিরামপুর না, অত্র এলাকাতেই সোবহান মণ্ডলের বেশ নাম-ডাক ছিল। আমি যে বছর প্রাইমারি স্কুলে…

জিলাপী— মুহাম্মদ আরকানুল ইসলাম

যেন কোনদিন খায়নি, দেখেনি-ঠিক এরকম অবস্থা। কার আগে কে নেবে- এ এক হুলস্থুল অবস্থা। অবশ্য…

নিয়তি —- সোহেল রানা বীর

জীবনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে নির্মম ঘটনার কথা মনে পড়তেই হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে খোকন। কী…

আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ১

বিবি আছিয়ার রাজমহলে আগমন অবধি ফেরাউনের সাথে তাঁর দাম্পত্য জীবন বেশ সুখেই চলতেছিল। যুগল স্বামী স্ত্রীর কোন দিক দিয়ে পারিবারিক অশান্তি ছিল না।

বিবি আছিয়ার আগমন ঘটেছে বহুদিন হয়। এতদিনে তিনি সাতটি সন্তানের জননী হয়েছেন। তাঁর ধর্ম কর্ম এবং দৈনন্দিন উপাসনা অর্চনা ঠিকমতই চলতেছে।

অবশ্য এ কাজগুলো তিনি গোপনে করেন। কারণ তাঁর স্বামী ধর্মকর্ম নিজে তো করতেনই না; এগুলো তাঁর পত্নী করুক এটাও তিনি পছন্দ করতেন না। সুতরাং অযথা স্বামীর সাথে ঝগড়া না বাঁধিয়ে তিনি ব্যক্তিগত ধর্ম-আচার এমন অবস্থায় সম্পন্ন করতেন যাতে তাঁর স্বামী ফেরাউন এটা কোনরূপে জানতে না পারে।

কিন্তু যখন ফেরাউন তার সাহসের সীমা অসম্ভবরূপে বাড়িয়ে ফেলে নিজেকে স্বয়ং খোদা বলে ঘোষণা করল, তখন আছিয়া তাঁর মনের স্বস্তি হারিয়ে ফেলে অস্থির হয়ে পড়লেন। তাঁর হৃদয়-মধ্যে হায় হায় করে উঠল; স্বামী একি করলেন!

তিনি যে অচিরেই আল্লাহ তায়ালার ভীষণ গজবে পতিত হয়ে নিজেতো ধবংস হবেনই; সাথে সাথে মিশরের এ অসংখ্য নির্বোধ লোকগুলোরও ধ্বংস সাধন করবেন।

দুঃখে চিন্তায় আছিয়া ভাবতে ভাবতে স্থির করলেন যে, না! নীরব হয়ে বসে থাকলে চলবে না। যে কোন উপায় কেঁদে কেঁদে অনুরোধ দ্বারা কিংবা তাঁকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এ ভয়ঙ্কর ধবংসের পথ হতে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবেন। স্বামীর মৃত্যু চিন্তা সহ্য করা যায় না। তাঁকে ধ্বংসের পথে চলতে দেখে নিশ্চুপ থাকা চলে না।

একদা আছিয়া নিজের শয়ন কক্ষে বসে এ বিষয়ই চিন্তামগ্ন ছিলেন। সহসা সেখানে মিশরাধিপতি ফেরাউন বলল, আছিয়া! তোমার সুন্দর বদনখানায় এমন মলিন চিহ্ন কেন ফুটছে বল তো? তুমি কি জান না আমার এ বিশাল রাজ্য, অতুল ঐশ্বর্য, অফুরন্ত যশ গৌরব একদিকে আর তোমার ঐ অনুপম সৌন্দর্যমণ্ডিত বদনখানার স্নিগ্ধ হাস্য রেখাটুকি আর একদিকে।

আছিয়ার মনোভাব-পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

Written By

More From Author