আকিলের প্রতি মুছা (আঃ) এর মৃত্যু দন্ড-১ম পর্ব

বনি ইসরাইল বংশের এক শক্তিশালী ও সাহসী যুবকের নাম ছিল আকিলবিন ছোলাইমান। সে খুব সচ্ছল ছিল না। অতি সাধারন জীবন যাপন করত। তার এক চাচা ছিল তার নাম ছিল আমীল। সে ছিল বিরাট ধনি ব্যক্তি। তার ছিল অনেক ধন-সম্পদ সে ভাইয়ের ছেলেকে কিছু দিত না। নিজের আরাম আয়েশ ও সম্পদ বৃদ্ধির চেষ্টায় ছিল তার জীবনের লক্ষ্য। যদিও সে বনি ইসরাইল বংশের লোক কিন্তু হজরত মুছা (আঃ) এর প্রতি তার একনিষ্ঠ আস্থা ছিল না, তবে হজরত মুছা (আঃ) বিরুদ্ধবাদীদের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক ছিল না। সে নিরিবিলি জীবন-যাপন করতে পছন্দ করত। তার কোন ছেলে মেয়ে ছিল না। তাই ভাতিজা তাকে হত্যা করে তার সমুদয় সম্পতির মালিক হওয়ার পরিকল্পনা করল।

অনেক দিন ধরে সুযোগ সন্ধানের পর একদিন তার চাচা আমীলকে হত্যা করে রাতের অন্ধকারে তার লাশ শহরের বাইরে ফেলে আসল। অতপর সে চাচার সমুদয় সম্পদের মালিক হয়ে চাচার বাড়িতে গিয়ে উঠল।  আমীলের হত্যাকান্ড যেন  অন্য মানুষের উপর বর্তায় সে জন্য সে চাচার হত্যকারি অনুসন্ধানের ভান করে প্রতিবেশি মানুষ দোষারোপ করতে লাগল। সাধারণ মানুষ তার সম্মুখে কথা বলতে সাহস পেত না। যেহেতু সে এখন অনেক সম্পদের মালিক এবং শক্তি সামর্থ বিরাট। তাই নিরবে তার অত্যাচার সহ্য করতে লাগল।  একদা এক লোক এসে হজরত মুছা (আঃ) এর নিকট আরজ করল, হুজুর আমরা আকিলের অত্যাচারে জর্জারিত। অতত্রব আপনি আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করে আমিলের হত্যাকারি বের করে দিন।

 হজরত মুছা (আঃ) দেশের মানুষের আবেদনে আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করলেন। আল্লাহ তায়ালা জিবরাঈল (আঃ) কে পাঠিয়ে  জানিয়ে দিলেন যে, ভাল করে একটি গরু কুরবানি করে তার জিহ্বা দ্বারা মৃত্যু ব্যক্তিকে আঘাত করলে সে জীবিত হয়ে তার হত্যকারির নাম বলে দিবে। হজরত মুছা (আঃ) জিবরাঈল নিকট এই সংবাদ পেলেন। বনি ইসরাইল বলল, তুমি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করে গরু কুরবানির কথা বল, গরু কুরবানির সাথে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের কি সম্পর্ক থাকতে পারে? হজরত মুছা (আঃ) বললেন, আল্লাহ আমাকে ঠাট্টা বিদ্রুপের ন্যায় গহিত কাজ থেকে রক্ষা করুন। তখন বনি ইসররাইলরা বলল, তবে তোমার প্রভুর নিকট জেনে নাও, গরুটি কি বয়সের হতে হবে। তার রং কি রকম। এটা কোন কাজে খাটান কি না।  হজরত মুছা (আঃ)  আল্লাহ তায়ালার নিকট জেনে নিয়ে বললেন, কুরবানির  গরুটি বাচ্চা নয়, বৃদ্ধ নয় এমন বয়েসের হতে হবে। রং লাল ধরনের, মনোরম, দর্শক যেন দেখে তৃপ্তি লাভ করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া গরু টি দিয়ে কোন রকম চাষাবাদ বা কোন ক্ষেতে পানি সেচের কাজ হয়নি।  বনি ইসরাইল রা বলল, এবার ভাল ভাবে বুঝতে পরেছি। আমরা এ ধরনের গরু সংগ্রহ করতে পারব এবং অতি দ্রুত  এটাকে কুরবানি করে দিব। এর পর তারা বিভিন্ন এলাকায় গরু সন্ধান করতে লাগল। বেশ কিছু দিন তারা হন্নে হয়ে গরু খোজা শুরু করল। কিন্তু উক্ত গুনসম্পন্ন  গরু তারা সংগ্রহ করতে সক্ষম হল না।

সূত্রঃ কুরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনী

 আকিলের প্রতি মুছা (আঃ) এর মৃত্যু দন্ড-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।