
ধুর !!! মশার জালায় আর কিছু করা গেল না…
ঃ ওস্তাদ, মশা তো জালায়া মারল আমার মনে হচ্ছে আমি ওকে এই অপারেশন এ এনেই ভুল করেছি…
ঃ ওই গেদু চুপ করবি??
গেদু ধমক খেয়ে চুপ হয়ে গেল। আমি বললাম
ঃ প্ল্যান্ টা আবার শোন
ঃ বলুন ওস্তাদ।
ঃ এখন শুধু গিয়ে ওই দোকান থেকে টাকা গুলো আনবি। পিস্তল টা নিতে ভুলবি না।
ঃ জে বস
ঃ তারপর রাস্তায় আমার কাছে দৌড়ে আসবি। আমরা পরে কোনো গাড়ি থামিয়ে উঠে পালিয়ে যাব।
ঃ তারপর ওস্তাদ অই গাড়িওয়ালাকে মেরে আবার কিছু হাতাব।
ঃ সেটা পরের বিষয়, আগে এই কাজ শেষ করে নে।
ঃ ইয়েস বস।
তারপর গেদু দৌড়ে গেল দোকানে। দোকানে জিনিস দেখতে দেখতে হটাৎ কি মনে পরে গেছে এমন অভিনয় করে ব্যাগ থেকে পিস্তল টা বের করল। দোকানের উজ্জল আলোতে সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। গেদুও সব কাজ ঠিক মত করছে। প্ল্যান মত সে দৌড়ে এসে বলল
ঃ অপারেশন খতম বস !
ঃ শাবাস গেদু কা বাচ্চা ! এখন জলদি পালা!
রাস্তার মধ্যে এসে আর দাড়াতে হল না। সাথে সাথেই একটা গাড়ি এসে থামল আমার সামনে।
আমি পিস্তল দেখিয়ে তাড়াতাড়ি করে উঠে বসলাম।
ঃ চল
ঃ আপনারা কারা?
ঃ কথা কম ! চল !
গাড়ি চলতে লাগল। গেদু বলল,
ঃ বস, আরও কিছু হাতামু?
ঃ তোর লোভ তো দিন দিন বাড়তাছে রে গেদু !! যাহ ! আরও কিছু হাতা এই লোকের কাছ থেইকা… পাহাড়ি এলাকা। তাই রাস্তা আকা বাকা। আর নিচেই খাদ ! পড়লেই শেষ।
গেদু বললঃ গাড়ি থামা শালা ! লোকটা থামাল।
ঃ যা কিছু আছে সব দে !!
ঃ এই যে নেন। আমাকে মারবেন না প্লিজ !!
ঃ তর আংটীটা বাদ রাখলি কেন? দে!!
ঃ এটা আমার বাবার স্মৃতি । এটা আমি আমার জীবন গেলেও দেব না।
আমি পিস্তল টা তার দিকে তাক করলাম
ঃ জীবন গেলে ঠিকই দিবি !!
ঃ না না না !!!! ঠাসসস!!! একটা ছোট শব্দ। তারপর বেচারার জীবন শেষ।
গেদু আংটিটা খুলে নিজের হাতে পড়ল। গাড়ির সিট রক্তে ভেজা। গেদুকে বললাম
ঃ এই গাড়ি রাস্তার মাঝে ফেলে রাখলে তো ভীড় হবে, তখন তো ওই দোকানের (যেটা থেকে ডাকাতি করলাম) সব লোক আমাদের কথা বলবে। তখন আমাদের খোজ বেড়ে যাবে না?
ঃ ঠিক বলসেন বস।
ঃ তাইলে আর কি? গাড়িটারে দেই খাদে ফালাইয়া ! তারপর আরেকটা গাড়িতে উঠমু। এবার কিন্তু আর ডাকাতি করবি না।
ঃ আইচ্ছা বস
আমরা দুজন মিলে ঠেলতে লাগলাম। তারপর… দুম !! গাড়ীটা নিচে পড়ে গেল। আমরা দাঁড়িয়ে আরেকটা গাড়ী পেলাম। এবার বেশ ভদ্রভাবে সাধারন মানুষ হিসেবেই গাড়িটাতে উঠলাম। গাড়ী চলতে শুরু করলো। গেদুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তার মুখ সাদা হয়ে গেছে। যেনো কিছু দেখে ভয় পেয়েছে
ঃ কি হয়সেরে গেদু?
ঃ ও…ও…ওওসস্তাআআদ ! এই গা আড়িটা না আ আমরা নি নি চে ফালাইয়া দিসি ??
আমি বুঝতে পারলাম , গেদুর কথাই ঠিক ! ড্রাইভারের সিটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম… সেই লোকটা !!!!! যার লাশ আমরা গাড়ির সাথে নিচে ফেলে দিয়েছি !!!! আমাদের দিকে তাকিয়ে লোকটা মুচকি হাসলো .. তার হাতের আংটিটা জ্বলজ্বল করছিলো !!! আর গাড়িটা দ্রুত গতিতে এগোতে থাকে সেই খাদের দিকে… যেখানে আমরা একে ফেলে দিয়েছিলাম !!!!
তার পরদিন সকালে… খবরের কাগজের প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনামঃ
রহস্যজনক দুর্ঘটনা ! গতকাল রাতে পুলিশ এর একটি উদ্ধারকারী দল খবর পেয়ে ৪০০ ফিট গভীর একটি পাহাড়ী খাদ থেকে একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করেছেন। সেই গাড়ির ভিতর বদি ও গেদু নামের দুজন কুখ্যাত ডাকাত এর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই গাড়ির লাইসেন্স নাম্বার দেখে শনাক্ত করা গেছে যে গাড়িটি ধনী ব্যবসায়ী আশরাফ মিরজার। কিন্তু গাড়ীতে তাকে পাওয়া যায়নি। এবং তিনি গত রাত থেকে নিখোজ। তার কোনো খোজ পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে এই ডাকাত দুজন তার গাড়ী ছিনতাই করে পালাবার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে রহস্যজনক ভাবে গাড়িটি অক্ষত রয়েছে। (এবং আরেকটি কথা , আংটিটা তাদের দুজনের থলিতে পাওয়া যায় নি।)