অভিশপ্ত মমির ভয়ানক কাহিনী !

মমির রহস্যময় অভিশাপ: কিছু অবিশ্বাস্য ঘটনা

পৃথিবীতে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা বিশ্বাস করা সত্যিই কঠিন। তেমনই কিছু রহস্যজনক ঘটনা জড়িয়ে আছে মমি ও সমাধি সৌধের সঙ্গে।

প্রাচীন মিশরের রাজা-রানীরা বিশ্বাস করতেন, মৃত্যুর পর আত্মা পুনর্জীবিত হয়ে পুনরায় দেহে ফিরে আসে। এই বিশ্বাসের কারণে তাদের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য মমি তৈরি করা হতো এবং মূল্যবান ধনরত্নসহ কফিনে রাখা হতো। এভাবেই গড়ে ওঠে মিশরের বিস্ময়কর পিরামিডগুলো। তবে মমিকে ঘিরে যুগে যুগে বহু রহস্যময় ও ভয়ংকর কাকতালীয় ঘটনা ঘটেছে। আসুন, এমন কিছু বিস্ময়কর ঘটনা সম্পর্কে জানা যাক।

তুতেনখামেনের সমাধির অভিশাপ

মিশরের অন্যতম বিখ্যাত ফারাও ছিলেন তুতেনখামেন, যিনি খুব অল্প বয়সেই মারা যান। মৃত্যুর পর তার দেহ সোনার কফিনে মুড়ে মমি করে সমাধিস্থ করা হয়।

১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর, প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার ও তার অর্থায়নকারী লর্ড কার্নারভান মমিটি আবিষ্কার করেন। এটি ছিল এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তবে এর পর থেকেই একের পর এক রহস্যময় ঘটনা ঘটতে শুরু করে—

  • ৫ মাসের মধ্যে কার্নারভানের রহস্যময় মৃত্যু ঘটে। ডাক্তাররা তার মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করতে পারেননি।
  • ঠিক সেই মুহূর্তে কায়রোর সমস্ত আলো নিভে যায়।
  • একই সময়ে লন্ডনে তার পোষা কুকুরটি ছটফট করতে করতে মারা যায়।
  • বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, কার্নারভানের শরীরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র হয়েছিল, যা তুতেনখামেনের মমিতেও দেখা গিয়েছিল।

তবে আশ্চর্যের বিষয়, এই সমাধির প্রধান আবিষ্কারক হাওয়ার্ড কার্টার ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিকভাবে মারা যান।

রাজকুমারী আমেনরার মমির অভিশাপ

খ্রিস্টপূর্ব একাদশ শতকে মিশরে এক রাজকুমারী আমেনরা মারা যান। যথাযথ নিয়মে তার দেহ মমি করে সমাধিস্থ করা হয়।

উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে, চারজন ইংরেজ রাজকুমারীর মমি কিনতে মিশরে যান। এরপর থেকে একের পর এক দুর্ভাগ্য তাদের জীবনকে গ্রাস করে—

  • মমি নিয়ে ফেরার সময় মরুভূমির ঝড়ে একজন মারা যান।
  • ইংল্যান্ডে ফিরে একজন দেখেন তার সমস্ত সম্পত্তি আত্মসাৎ হয়ে গেছে।
  • আরেকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন ও চাকরি হারান।

ব্রিটিশ মিউজিয়ামে অভিশাপ

পরবর্তীতে মমিটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আনা হয়, কিন্তু তখন থেকেই ভয়ংকর ঘটনা ঘটতে থাকে—

  • যে কেউ মমিটিকে স্পর্শ করেছে, সে কোনো না কোনো দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।
  • এক দর্শনার্থী কাপড় দিয়ে মমিটির মুখ পরিষ্কার করেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তার ছেলে মারা যায়।
  • এক ফটোসাংবাদিক মমিটির ছবি তোলার পর দেখেন, ছবিতে রাজকুমারীর মুখ বিকৃত হয়ে গেছে। সে রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন।

টাইটানিকের সঙ্গে মমির যোগসূত্র!

মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মমিটি সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এক আমেরিকান পর্যটক এটি কিনে নেন এবং নিউইয়র্কগামী টাইটানিক জাহাজে ওঠেন।

বিশ্ববিখ্যাত টাইটানিক তার প্রথম ও শেষ যাত্রায় ডুবে যায়! ফলে, বিশ্বাস করা হয় যে, রাজকুমারী আমেনরার মমির অভিশাপের কারণেই জাহাজটি ধ্বংস হয়েছিল।

শেষ কথা

মমির সঙ্গে যুক্ত এইসব রহস্যময় ঘটনা কাকতালীয় নাকি বাস্তব, তা আজও বিতর্কের বিষয়। কেউ মনে করেন, এগুলো শুধুই অতিরঞ্জিত কাহিনি, আবার কেউ বিশ্বাস করেন মমির অভিশাপ সত্যিই ভয়ংকর।

তুমি কী মনে করো—মমির অভিশাপ সত্যি, নাকি শুধুই রহস্যময় কাকতালীয় ঘটনা?

খলিফা হারুনুর রশিদ ও বহলুল

ঐক্যের গুরুত্ব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *