অবশেষে জুলুমের অবসান
এক রাতে হযরত আহমদ রেফায়ী এক খেজুর বাগানে অযূ করতে গেলেন। নদীতে একটি নৌকা উজানের দিকে যাচ্ছে। ঐ নৌকায় শহরের কোতোয়াল ও কয়েকজন সিপাহী একদল বেকার মানুষ নিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা হযরত সৈয়দ আহমদকে খেজুর বাগানে বসে থাকতে দেখে তাকেও ধরে নিয়ে গেল। তারা হযরত শায়েখকেও বেকারদের দলভুক্ত করে নিল।
সারা রাত নৌকা চলার পর সকাল বেলা তারা এক গ্রামের নিকট পৌঁছল। ঐ গ্রামের এক দরবেশ হযরত সৈয়দ আহমদকে চিনতে পেরে চিৎকার করে তার আগমন বার্তা প্রচার করতে লাগলেন। দেখতে দেখতে আশেপাশের সকল বুজুর্গ দরবেশ ও সাধারণ মানুষের ভীড় জমে উঠল এবার নৌকার লোকেরা যখন টের পেল যে, তারা প্রখ্যাত বুজুর্গ শায়েখ সৈয়দ আহমদকেই ধরে নিয়ে এসেছে, তখন তারা লজ্জা অনুশোচনা ও ভয়ে একেবারে জড়সড় হয়ে হযরতের নিকট এসে, ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগল।
হযরত সৈয়দ আহমদ বলেন, ভাইসব! যা হয়েছে ভালই হয়েছে। আমার দ্বারা তোমাদেরও কাজ উদ্ধার হয়েছে এবং আমারও নেকী অর্জন হয়েছে। অথচ আমার কোন ক্ষতি হয়নি। আর আমি তো সারাদিন অবসরই বসা থাকি। তোমরা অনর্থক দুর্বল এবং কাজের লোকদের ধরে এনে জরপূর্বক তাদের দ্বারা কাজ করিয়ে অযথা গুনার কাজ করছ। এখন থেকে তোমাদের যে কোন কাজের প্রয়োজন দেখা দেবে তখন আমাকে সংবাদ দেবে। যতক্ষণ আমার দেহে শক্তি থাকবে ততক্ষণ আমি তোমাদের কাজ করে দেব।
সৈয়দ আহমদের এ কথা শুনে লজ্জায় তারা একেবারে মাটির সাথে মিশে যেতে লাগল। পরে তারা বিনীত ভাবে আরজ করল, হযরত! আপনি তো সবাইকে ক্ষমা করে দিলেন কিন্তু যেই হতভাগা সবচেয়ে বেশি অপরাধী তাঁর কি উপায় হবে। হযরত সৈয়দ আহমদ বলেন, আল্লাহ পাক তোমাদের ক্ষমা করুন। সিপাহী বলল, হযরত আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে তওবা করায়ে দিন।
শায়েখ তাকে তওবা করায়ে বললেন, হায় আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক, এ ব্যক্তিকে আমি দুনিয়া এবং আখারাতের ভাই হিসাবে গ্রহণ করলাম। এ ঘটনার পর হতে সেই সিপাহি সরকারী চাকুরী ত্যাগ করে হযরত শায়েখ এর অনুসরনের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার এবাদতে মশগুল হয়ে গেল। পরবর্তীতে সে সিপাহী বড় আল্লাহ ওয়ালা বুজুর্গ হয়েছিলেন।