কাবুসের চরম অধঃপতন

কাবুস এতদিনে কৈশর অতিক্রম করতঃ যৌবনে পদার্পণ করেছে। অসৎ

বন্ধ-বান্ধব তার পূর্বাপেক্ষাও বুদ্ধি পেয়েছে। পরিবারে তার ক্ষমতাও বেড়ে

গিয়েছে। বৃদ্ধ যুবক পুত্রের সাথে এখন আর তেমন জোর খাটাতে পারছে না। অতএব কাবুসের হাতে আরও বেশী অর্থাগমের সুযোগ জুটছে।

এ অর্থের দ্বারা-বান্ধব নিয়ে সে যা ইচ্ছে তাই করছে। মদ্যপান ও ব্যভিচার এখন তার নিত্যকার পেশা হয়ে পড়ছে। দেশের জনসাধারনের প্রতি কাবুসের পিতার দুর্জন্য প্রভাব; সুতরাং তার পুত্রের এ যথেচ্ছাচারের প্রতিবাদ করবে এমন কেউই নেই। দরিদ্র ও দুর্বল নাগরিকগণ মাতা, ভগ্নি ও স্ত্রীগণকে নিয়ে কাবুসের ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। কোনদিন কার গৃহে অসৎ অঙ্গিগণসহ হানা দিয়ে সে কার সর্বনাশ ঘটাবে তার ইয়াত্তা নেই।

বিশেষতঃ যাদের গৃহে সুন্দরী নারী বিদ্যমান তাদের আর ভাবনার শেষ নেই। কারণ ইতমধ্যেই সে দেশের অসংখ্য সুন্দরী যুবতীর সতীত্ব নাশ করেছে। তাকে কেউই বাধা দিতে পারে নেই যেহেতু দেশের সকল গুণ্ডা বদমায়েশগণকে অর্থের দ্বারা দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। তাদেরকে সকলেই মনে প্রাণে ভয় করে। তারা না ঘটাতে পারে এমন কিছুই নেই।

পুত্রের এহেন স্বভাবের ফলে পিতারও কিছুটা সঙ্কট দেখা দিল। সে লোকটি তেমন মন্দ ছিল না। স্বভাব চরিত্র ভালই ছিল। তাছাড়া নিজের বিপুল অর্থ সম্পদ দ্বারা বিভিন্ন প্রকারে লোকের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে নিয়েছিল। কিন্তু তার পুত্রের এরূপ হীন আচরণে ক্রমে ক্রমে লোকগণ তার সাথে সংশ্রব কমিয়ে দিল।

তাদের ধারণা ছিল যে, পিতার কঠিন শাসন থাকলে কিছুতেই পুত্র এরূপ দুরাচার হয় না। শাসন না করে পিতাই তাকে এরূপ বানিয়েছে। অতএব তার পিতাও মোটেই ভাল লোক নয়।

ক্রমে ক্রমে লোকগণ তার নিকট গমনাগমন বন্ধ করে দিল। যারা তার নিকট হতে অর্থ নিয়ে ব্যবসা করতেছিল তাদের কেউ কেউ অর্থ উঠিয়ে দিল। অর্থ এবং যশ লোভী কাবুস জনক এ অবস্থায় প্রমাদ গুনলো এবং তার অন্তরঙ্গ সুহৃদগণকে ডেকে নিয়ে এ সমস্যার প্রতিকারের পরামর্শ চাইল।

আরো পড়তে পারেন...

বাদল বরিষনে-কাজী নজরুল ইসলাম-দ্বিতীয় অংশ

[চির-জনমের ছাড়াছাড়ি] তার পর-বছরের কথা। কাজরিয়ার সঙ্গে আবার আমার দেখা হল মির্জাপুরের পাহাড়ের বুকে বিরহী…

বাদল বরিষনে-কাজী নজরুল ইসলাম-প্রথম অংশ

[এক নিমেষের চেনা] বৃষ্টির ঝম-ঝমানি শুনতে শুনতে সহসা আমার মনে হল, আমার বেদনা এই বর্ষার…

হেনা-কাজী নজরুল ইসলাম

ভার্দুন ট্রেঞ্চ, ফ্রান্স ওঃ! কী আগুন-বৃষ্টি! আর কী তার ভয়ানক শব্দ! – গুড়ুম – দ্রুম…

কাবুসের চরম অধঃপতন

কাবুস এতদিনে কৈশর অতিক্রম করতঃ যৌবনে পদার্পণ করেছে। অসৎ

বন্ধ-বান্ধব তার পূর্বাপেক্ষাও বুদ্ধি পেয়েছে। পরিবারে তার ক্ষমতাও বেড়ে

গিয়েছে। বৃদ্ধ যুবক পুত্রের সাথে এখন আর তেমন জোর খাটাতে পারছে না। অতএব কাবুসের হাতে আরও বেশী অর্থাগমের সুযোগ জুটছে।

এ অর্থের দ্বারা-বান্ধব নিয়ে সে যা ইচ্ছে তাই করছে। মদ্যপান ও ব্যভিচার এখন তার নিত্যকার পেশা হয়ে পড়ছে। দেশের জনসাধারনের প্রতি কাবুসের পিতার দুর্জন্য প্রভাব; সুতরাং তার পুত্রের এ যথেচ্ছাচারের প্রতিবাদ করবে এমন কেউই নেই। দরিদ্র ও দুর্বল নাগরিকগণ মাতা, ভগ্নি ও স্ত্রীগণকে নিয়ে কাবুসের ভয়ে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। কোনদিন কার গৃহে অসৎ অঙ্গিগণসহ হানা দিয়ে সে কার সর্বনাশ ঘটাবে তার ইয়াত্তা নেই।

বিশেষতঃ যাদের গৃহে সুন্দরী নারী বিদ্যমান তাদের আর ভাবনার শেষ নেই। কারণ ইতমধ্যেই সে দেশের অসংখ্য সুন্দরী যুবতীর সতীত্ব নাশ করেছে। তাকে কেউই বাধা দিতে পারে নেই যেহেতু দেশের সকল গুণ্ডা বদমায়েশগণকে অর্থের দ্বারা দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। তাদেরকে সকলেই মনে প্রাণে ভয় করে। তারা না ঘটাতে পারে এমন কিছুই নেই।

পুত্রের এহেন স্বভাবের ফলে পিতারও কিছুটা সঙ্কট দেখা দিল। সে লোকটি তেমন মন্দ ছিল না। স্বভাব চরিত্র ভালই ছিল। তাছাড়া নিজের বিপুল অর্থ সম্পদ দ্বারা বিভিন্ন প্রকারে লোকের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে নিয়েছিল। কিন্তু তার পুত্রের এরূপ হীন আচরণে ক্রমে ক্রমে লোকগণ তার সাথে সংশ্রব কমিয়ে দিল।

তাদের ধারণা ছিল যে, পিতার কঠিন শাসন থাকলে কিছুতেই পুত্র এরূপ দুরাচার হয় না। শাসন না করে পিতাই তাকে এরূপ বানিয়েছে। অতএব তার পিতাও মোটেই ভাল লোক নয়।

ক্রমে ক্রমে লোকগণ তার নিকট গমনাগমন বন্ধ করে দিল। যারা তার নিকট হতে অর্থ নিয়ে ব্যবসা করতেছিল তাদের কেউ কেউ অর্থ উঠিয়ে দিল। অর্থ এবং যশ লোভী কাবুস জনক এ অবস্থায় প্রমাদ গুনলো এবং তার অন্তরঙ্গ সুহৃদগণকে ডেকে নিয়ে এ সমস্যার প্রতিকারের পরামর্শ চাইল।