একবার এক ব্যক্তি দারিদ্র সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করেন। প্রশ্ন শোনামাত্র তিনি বাইরে উঠে যান। তারপর কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে বললেন, আসলে আমার জামার পকেটে কিছু রূপোর টাকা ছিল সেগুলি গরীব-দুঃখীদের দিয়ে এলাম। কেননা দারিদ্র ও শূন্যতা সম্বদ্ধে কথা বলব, অথচ পকেটে থাকবে রূপোর টাকা, তা তো হয় না। সেটা বড় লজ্জার বিষয়।
মানুষ কখন ফকির নামে অভিহিত হতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, যখন তার কাছে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।
প্রশ্নঃ মানুষ কখন খাঁটি তওবাকারী হয়?
উত্তরঃ তওবার পর বিশ দিন পর্যন্ত বাম কাঁধের ফেরেশতা যার কোন পাপ লিখতে পারেন না, তখন সে-ই খাঁটি তওবাকারীর মাঝে গণ্য হয়।
পথক্লেশ সহ্য করে, মদিনায় উপস্থিত হয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) রওজা শরীফে গিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনার মেহমান এসেছি। আর তখনই তিনি ঘুমে
অচেতন হয়ে পড়েন। আর স্বপ্ন দেখলেন, রাসূলে কারীম (সাঃ) তার হাতে একখানি রুটি দিচ্ছেন। আধাখানা রুটি খেয়ে তিনি জেগে উঠলেন। দেখলেন, বাকী আধখানা তখনও রয়েছে তাঁর হাতে।
তাঁর অমূল্য বাণীঃ
(১) যিনি যথাসময়ে ফরজ কাজ আদায় করেন, তিনিই প্রকৃত আবেদ।
(২) যিনি সব কাজ আল্লাহর তরফ থেকে করা হয়েছে বলে মনে করেন তিনিই তওহীদবাদী। যিনি পৃথিবীকে নশ্বর ও নিকৃষ্ট বলে জানেন, সহজেই পৃথিবী থেকে মনকে পৃথক করতে সক্ষম হন এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন দিকে মনোনিবেশ না করেন তিনিই প্রকৃত যাহেদ।
(৩) যে দরবেশ ধর্মনিষ্ঠ নন, তিনি অবৈধ আহারী।
(৪) মারেফাতের কৃতজ্ঞতা হল আল্লাহর রহমতের আশা করা। সম্মানের কৃতজ্ঞতা হল বিনীত থাকা আর বিপদ-বিপর্যয়ের কৃতজ্ঞতা হল ধৈর্যধারণ করা।
(৬) যে ছলে-বলে-কলে- কৌশলে মান-সম্মান লাভ করে, খুব তাড়াতাড়ি তার অবনতি হয়। আর যিনি আল্লাহর গোপন ঈশারায় সম্মানপ্রাপ্ত, তাঁর সে সম্মান চিরস্থায়ী। এই মহাতাপস সহাস্যে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরও সে হাসির রেখা তাঁর মুখে ফুটে থাকে। এমনকি চিকিৎসকগণও তাঁকে জীবিত বলে মনে করেন। পরে পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
সূত্রঃ তাযকিরাতুল আউলিয়া
হযরত আবু আবদুল্লাহ জাল্লা (রঃ) – পর্ব ১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন