যোগাযোগ–২১তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  রাজা উপাধি পাওয়ার পর থেকে কলকাতায় ঘোষালবাড়ির দ্বারে নাম খোদা হয়েছে ‘মধুপ্রাসাদ’। সেই প্রাসাদের লোহার গেটের এক পাশে আজ নহবত বসেছে, আর বাগানে একটা তাঁবুতে বাজছে ব্যান্ড। গেটের মাথায় অর্ধচন্দ্রাকারে গ্যাসের টাইপে লেখা “প্রজাপতয়ে নমঃ”। সন্ধ্যাবেলায় আলোকশিখায় এই লিখনটি সমুজ্জ্বল হবে। গেট থেকে কাঁকর-দেওয়া যে পথ বাড়ি পর্যন্ত গেছে তার দুই ধারে দেবদারুপাতা ও … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২২তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মধুসূদন যখন কলকাতায় বাস করতে এল, তখন প্রথমে সে একটি পুরোনো বাড়ি কিনেছিল, সেই চকমেলানো বাড়িটাই আজ তার অন্তঃপুর-মহল। তার পরে তারই সামনে এখনকার ফ্যাশানে একটা মস্ত নতুন মহল এরই সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে, সেইটে ওর বৈঠকখানা-বাড়ি। এই দুই মহল যদিও সংলগ্ন তবুও এরা সম্পূর্ণ আলাদা দুই জাত। বাইরের মহলে সর্বত্রই মার্বলের মেজে, তার উপরে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৩ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অনেক রাত্তিরে মোতির মা এক সময়ে জেগে উঠে দেখলে কুমু বিছানায় উঠে বসে আছে, তার কোলের উপর দুই হাত জোড়া, ধ্যানাবিষ্ট চোখ দুটি যেন সামনে কাকে দেখতে পাচ্ছে। মধুসূদনকে যতই সে হৃদয়ের মধ্যে গ্রহণ করতে বাধা পায়, ততই তার দেবতাকে দিয়ে সে তার স্বামীকে আবৃত করতে চায়। স্বামীকে উপলক্ষ করে আপনাকে সে দান করছে তার … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৪ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পরের দিন সকালেই কুমু দাদার কাছ থেকে টেলিগ্রাম পেয়েছে, “ভগবান তোমাকে আশীর্বাদ করুন।” সেই টেলিগ্রামের কাগজখানি জামার মধ্যে বুকের কাছে রেখে দিলে। এই টেলিগ্রামে যেন দাদার দক্ষিণ হাতের স্পর্শ। কিন্তু দাদা নিজের শরীরের কথা কেন কিছুই লিখলে না? তবে কি অসুখ বেড়েছে? দাদার সব খবরই মুহূর্তে মুহূর্তে যার প্রত্যক্ষগোচর ছিল, আজ তার কাছে সবই … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৫ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  ইতিমধ্যে শ্যামাসুন্দরী হাঁপাতে হাঁপাতে মধুকে এসে জানালে, ‘বউ মুর্ছো গেছে।’ মধুসূদনের মনটা দপ করে জ্বলে উঠল; বললে, “কেন, তাঁর হয়েছে কী?” “তা তো বলতে পারি নে, দাদা দাদা করেই বউ হেদিয়ে গেল। তা একবার কি দেখতে যাবে?” “কী হবে! আমি তো ওর দাদা নই।” “মিছে রাগ করছ ঠাকুরপো, ওরা বড়োঘরের মেয়ে, পোষ মানতে সময় … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৬ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পরদিন ভোরে যখন কুমু বিছানায় উঠে বসেছে তখন ওর স্বামী ঘুমোচ্ছে। কুমু তার মুখের দিকে চাইলে না, পাছে মন বিগড়ে যায়। অতি সাবধানে উঠে পায়ের কাছে প্রণাম করলে, তার পরে স্নান করবার ঘরে গেল। স্নান সারা হলে পর পিছন দিকের দরজা খুলে গিয়ে বসল ছাদে, তখন কুয়াশার ভিতর দিয়ে পূর্ব-আকাশে একটা মলিন সোনার রেখা … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৮ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মোতির মা যখনই কুমুকে অকৃত্রিম ভালোবাসার সঙ্গে আদরযত্ন করতে প্রবৃত্ত হয়েছিল তখনই নবীন বুঝেছিল এটা সইবে না; বাড়ির মেয়েরা এই নিয়ে লাগালাগি করবে। নবীন ভাবলে সেই রকমের একটা কিছু ঘটেছে। কিন্তু মধুসূদনের আন্দাজি অভিযোগ সম্বন্ধে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নেই; তাতে জেদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপারটা কী হয়েছে মধুসূদন তা স্পষ্ট করে বললে না— … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৯ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  যথানিয়মে মধুসূদন বেলা একটার পরে অন্তঃপুরে খেতে এল। যথানিয়মে আত্মীয়-স্ত্রীলোকেরা তাকে ঘিরে বসে কেউ-বা পাখা দিয়ে মাছি তাড়াচ্ছে, কেউ-বা পরিবেশন করছে। পূর্বেই বলেছি, মধুসূদনের অন্তঃপুরের ব্যবস্থায় ঐশ্বর্যের আড়ম্বর ছিল না। তার আহারের আয়োজন পুরানো অভ্যাসমতই। মোটা চালের ভাত না হলে না মুখে রোচে, না পেট ভরে। কিন্তু পাত্রগুলি দামি। রুপোর থালা, রুপোর বাটি, রুপোর … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩০ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  নবীন ঘরে গিয়ে মুখ শুকনো করে মোতির মাকে বললে, “মেজোবউ, আর কেন?” “হয়েছে কী?” “এবার জিনিসপত্রগুলো বাক্সয় তোলো।” “তোমার বুদ্ধিতে যদি তুলি, তা হলে আবার কালই বের করতে হবে। কেন? তোমার দাদার মেজাজ ভালো নেই বুঝি?” “আমি তো চিনি ওঁকে। এবার বোধ হচ্ছে এখানকার বাসায় হাত পড়বে।” “তা চলোই-না। অত ভাবছ কেন? সেখানে তো … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩১ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  দুপুরবেলা আহারের পর দরজা বন্ধ করে কুমু বসে পণ করতে লাগল, মনের মধ্যে কিছুতে সে ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠতে দেবে না। কুমু বললে, ‘আজকের দিনটা লাগবে মনকে স্থির করে নিতে; ঠাকুরের আশীর্বাদ নিয়ে কাল সকাল থেকে সংসারধর্মের সত্যপথে প্রবৃত্ত হব।’ মধ্যাহ্নে আহারের পর তার কাঠের ঘরে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলল নিজের … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!