যোগাযোগ–১৮তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিপ্রদাস নিশ্চয় মনে করেছিল মধুসূদন এই কয়দিনের মধ্যে একবার এসে দেখা করে যাবে। তা যখন করলে না তখন ওর বুঝতে বাকি রইল না যে, দুই পরিবারের এই বিবাহের সম্বন্ধটাই এল পরস্পরের বিচ্ছেদের খড়গ হয়ে। রোগের নিরতিশয় ক্লান্তিতে এ কথাটাকেও সহজভাবে সে মেনে নিলে। ডাক্তারকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলে, “একটু এসরাজ বাজাতে পারি কি?” ডাক্তার বললে, … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৯তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিবাহের লঙ্কাকাণ্ডের সব-শেষ অধ্যায়টা এখনো বাকি। সকালবেলায় কুশণ্ডিকা সেরে তবে বরকনে যাত্রা করবে এই ছিল কথা। নবগোপাল তারই সমস্ত উদ্‌‍যোগ ঠিক করে রেখেছে। এমন সময় বিপ্রদাসের ঘর থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এসে রাজাবাহাদুর বলে বসল— কুশণ্ডিকা হবে বরের ওখানে, মধুপুরীতে। প্রস্তাবের ঔদ্ধত্যটা নবগোপালের কাছে অসহ্য লাগল। আর কেউ হলে আজ একটা ফৌজদারি বাধত। তবু … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২০তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রেলগাড়ি হাওড়ায় পৌঁছল, বেলা তখন চারটে হবে। ওড়নায়-চাদরে গ্রন্থিবদ্ধ হয়ে বরকনে গিয়ে বসল ব্রুহাম গাড়িতে। কলকাতার দিবালোকের অসংখ্য চক্ষু, তার সামনে কুমুর দেহমন সংকুচিত হয়ে রইল। যে-একটি অতিশয় শুচিতাবোধ এই উনিশ বছরের কুমারীজীবনে ওর অঙ্গে অঙ্গে গভীর করে ব্যাপ্ত, সেটা যে কর্ণের সহজ কবচের মতো, কেমন করে ও হঠাৎ ছিন্ন করে ফেলবে? এমন মন্ত্র আছে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২১তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  রাজা উপাধি পাওয়ার পর থেকে কলকাতায় ঘোষালবাড়ির দ্বারে নাম খোদা হয়েছে ‘মধুপ্রাসাদ’। সেই প্রাসাদের লোহার গেটের এক পাশে আজ নহবত বসেছে, আর বাগানে একটা তাঁবুতে বাজছে ব্যান্ড। গেটের মাথায় অর্ধচন্দ্রাকারে গ্যাসের টাইপে লেখা “প্রজাপতয়ে নমঃ”। সন্ধ্যাবেলায় আলোকশিখায় এই লিখনটি সমুজ্জ্বল হবে। গেট থেকে কাঁকর-দেওয়া যে পথ বাড়ি পর্যন্ত গেছে তার দুই ধারে দেবদারুপাতা ও … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২২তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মধুসূদন যখন কলকাতায় বাস করতে এল, তখন প্রথমে সে একটি পুরোনো বাড়ি কিনেছিল, সেই চকমেলানো বাড়িটাই আজ তার অন্তঃপুর-মহল। তার পরে তারই সামনে এখনকার ফ্যাশানে একটা মস্ত নতুন মহল এরই সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে, সেইটে ওর বৈঠকখানা-বাড়ি। এই দুই মহল যদিও সংলগ্ন তবুও এরা সম্পূর্ণ আলাদা দুই জাত। বাইরের মহলে সর্বত্রই মার্বলের মেজে, তার উপরে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৩ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অনেক রাত্তিরে মোতির মা এক সময়ে জেগে উঠে দেখলে কুমু বিছানায় উঠে বসে আছে, তার কোলের উপর দুই হাত জোড়া, ধ্যানাবিষ্ট চোখ দুটি যেন সামনে কাকে দেখতে পাচ্ছে। মধুসূদনকে যতই সে হৃদয়ের মধ্যে গ্রহণ করতে বাধা পায়, ততই তার দেবতাকে দিয়ে সে তার স্বামীকে আবৃত করতে চায়। স্বামীকে উপলক্ষ করে আপনাকে সে দান করছে তার … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৪ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পরের দিন সকালেই কুমু দাদার কাছ থেকে টেলিগ্রাম পেয়েছে, “ভগবান তোমাকে আশীর্বাদ করুন।” সেই টেলিগ্রামের কাগজখানি জামার মধ্যে বুকের কাছে রেখে দিলে। এই টেলিগ্রামে যেন দাদার দক্ষিণ হাতের স্পর্শ। কিন্তু দাদা নিজের শরীরের কথা কেন কিছুই লিখলে না? তবে কি অসুখ বেড়েছে? দাদার সব খবরই মুহূর্তে মুহূর্তে যার প্রত্যক্ষগোচর ছিল, আজ তার কাছে সবই … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৫ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  ইতিমধ্যে শ্যামাসুন্দরী হাঁপাতে হাঁপাতে মধুকে এসে জানালে, ‘বউ মুর্ছো গেছে।’ মধুসূদনের মনটা দপ করে জ্বলে উঠল; বললে, “কেন, তাঁর হয়েছে কী?” “তা তো বলতে পারি নে, দাদা দাদা করেই বউ হেদিয়ে গেল। তা একবার কি দেখতে যাবে?” “কী হবে! আমি তো ওর দাদা নই।” “মিছে রাগ করছ ঠাকুরপো, ওরা বড়োঘরের মেয়ে, পোষ মানতে সময় … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৬ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পরদিন ভোরে যখন কুমু বিছানায় উঠে বসেছে তখন ওর স্বামী ঘুমোচ্ছে। কুমু তার মুখের দিকে চাইলে না, পাছে মন বিগড়ে যায়। অতি সাবধানে উঠে পায়ের কাছে প্রণাম করলে, তার পরে স্নান করবার ঘরে গেল। স্নান সারা হলে পর পিছন দিকের দরজা খুলে গিয়ে বসল ছাদে, তখন কুয়াশার ভিতর দিয়ে পূর্ব-আকাশে একটা মলিন সোনার রেখা … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৮ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মোতির মা যখনই কুমুকে অকৃত্রিম ভালোবাসার সঙ্গে আদরযত্ন করতে প্রবৃত্ত হয়েছিল তখনই নবীন বুঝেছিল এটা সইবে না; বাড়ির মেয়েরা এই নিয়ে লাগালাগি করবে। নবীন ভাবলে সেই রকমের একটা কিছু ঘটেছে। কিন্তু মধুসূদনের আন্দাজি অভিযোগ সম্বন্ধে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নেই; তাতে জেদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপারটা কী হয়েছে মধুসূদন তা স্পষ্ট করে বললে না— … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!