প্রজাপতির নির্বন্ধ–তৃতীয় পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  “মুখুজ্যেমশায় !” অক্ষয় বলিলেন, “আজ্ঞে করো।” শৈল কহিল, “কুলীনের ছেলে দুটোকে কোনো ফিকিরে তাড়াতে হবে।” অক্ষয় উৎসাহপূর্বক কহিলেন, “তা তো হবেই।” বলিয়া রামপ্রসাদী সুরে গান জুড়িয়া দিলেন–                                     দেখব কে তোর কাছে আসে!                                     তুই রবি একেশ্বরী, একলা আমি রইব পাশে। শৈল হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “একেশ্বরী ?” অক্ষয় বলিলেন, “নাহয় তোমরা চার ঈশ্বরীই হলে, শাস্ত্রে আছে … বিস্তারিত পড়ুন

প্রজাপতির নির্বন্ধ–চতুর্থ পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আহারের পর শৈলবালা ডাকিল, “মুখুজ্যেমশায়।” অক্ষয় অত্যন্ত ত্রস্তভাব দেখাইয়া কহিলেন, “আবার মুখুজ্যেমশায়! এই বালখিল্য মুনিদের ধ্যানভঙ্গ-ব্যাপারের মধ্যে আমি নেই।” শৈলবালা। ধ্যানভঙ্গ আমরা করব। কেবল মুনিকুমারগুলিকে এই বাড়িতে আনা চাই। অক্ষয় চক্ষু বিস্ফারিত করিয়া কহিলেন, “সভাসুদ্ধ এইখানে উৎপাটিত করে আনতে হবে। যত দুঃসাধ্য কাজ সবই এই একটিমাত্র মুখুজ্যেমশায়কে দিয়ে ?” শৈলবালা হাসিয়া কহিল, “মহাবীর হবার ঐ … বিস্তারিত পড়ুন

প্রজাপতির নির্বন্ধ–পঞ্চম পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  অক্ষয় বলিলেন, “স্বামীই স্ত্রীর একমাত্র তীর্থ। মান কি না ?” পুরবালা। আমি কি পণ্ডিতমশায়ের কাছে শাস্ত্রের বিধান নিতে এসেছি ? আমি মার সঙ্গে আজ কাশী চলেছি এই খবরটি দিয়ে গেলুম। অক্ষয়। খবরটি সুখবর নয়– শোনবামাত্র তোমাকে শাল-দোশালা বকশিশ দিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে না। পুরবালা। ইস, হৃদয় বিদীর্ণ হচ্ছে– না ? সহ্য করতে পারছ না … বিস্তারিত পড়ুন

প্রজাপতির নির্বন্ধ–ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  শ্রীশ তাহার বাসায় দক্ষিণের বারান্দায় একখানা বড়োহাতাওআলা কেদারার দুই হাতার উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া শুক্লসন্ধ্যায় চুপচাপ বসিয়া সিগারেট ফুঁকিতেছিল। পাশে টিপায়ের উপর রেকাবিতে একটি গ্লাস বরফ দেওয়া লেমনেড ও স্তূপাকার কুন্দফুলের মালা। বিপিন পশ্চাৎ হইতে প্রবেশ করিয়া তাহার স্বাভাবিক প্রবল গম্ভীর কণ্ঠে ডাকিয়া উঠিল, “কী গো সন্ন্যাসীঠাকুর।” শ্রীশ তৎক্ষণাৎ হাতা হইতে পা নামাইয়া … বিস্তারিত পড়ুন

প্রজাপতির নির্বন্ধ–সপ্তম পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  চন্দ্রমাধববাবু যখন ডাকিলেন– “নির্মল”, তখন একটা উত্তর পাইলেন বটে “কী মামা”, কিন্তু সুরটা ঠিক বাজিল না। চন্দ্রবাবু ছাড়া আর যে-কেহ হইলে বুঝিতে পারিত সে অঞ্চলে অল্প একটুখানি গোল আছে। “নির্মল, আমার গলার বোতামটা খুঁজে পাচ্ছি নে।” “বোধ হয় ঐখানেই কোথাও আছে।” এরূপ অনাবশ্যক এবং অনির্দিষ্ট সংবাদে কাহারো কোনো উপকার নাই, বিশেষত যাহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-নিখিলেশের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পঞ্চুর স্ত্রী যক্ষ্মায় ভুগে ভুগে মরেছে। পঞ্চুকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। সমাজ হিসেব করে বলেছে, খরচ লাগবে সাড়ে তেইশ টাকা। আমি রাগ করে বললুম, নাই বা করলি প্রায়শ্চিত্ত, তোর ভয় কিসের? সে ক্লান্ত গোরুর মতো তার ধৈর্যভারপূর্ণ চোখ তুলে বললে, মেয়েটি আছে, বিয়ে দিতে হবে। আর বউয়েরও তো গতি করা চাই। আমি বলুলুম, পাপই যদি … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-সন্দীপের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  সেদিন অশ্রুজলের বাঁধ ভাঙে আর-কি। আমাকে বিমলা ডাকিয়ে আনলে, কিন্তু খানিকক্ষণ তার মুখ দিয়ে কথা বের হল না, তার দুই চোখ ঝক্‌ঝক্‌ করতে লাগল। বুঝলুম, নিখিলের কাছে কোনো ফল পায় নি। যেমন করে হোক ফল পাবে সেই অহংকার ওর মনে ছিল, কিন্তু সে আশা আমার মনে ছিল না। পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-বিমলার আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এক জন্মে যে এতটা ঘটতে পারে সে মনেও করা যায় না। আমার যেন সাত জন্ম হয়ে গেল। এই কয় মাসে হাজার বছর পার হয়ে গেছে। সময় এত জোরে চলছিল যে, চলছে বলে বুঝতেই পারি নি। সেদিন হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে বুঝতে পেরেছি। বাজার থেকে বিদেশী মাল বিদায় করবার কথা যখন স্বামীর কাছে বলতে গেলুম তখন জানতুম … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –নিখিলেশের আত্মকথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আগে কোনোদিন নিজের কথা ভাবি নি। এখন প্রায় মাঝে-মাঝে নিজেকে বাইরে থেকে দেখি। বিমল আমাকে কেমন চোখে দেখে সেইটে আমি দেখবার চেষ্টা করি। বড়ো গম্ভীর, সব জিনিসকে বড়ো বেশি গুরুতর করে দেখা আমার অভ্যাস। আর-কিছু না, জীবনটাকে কেঁদে ভাসিয়ে দেওয়ার চেয়ে হেসে উড়িয়ে দেওয়াই ভালো। তাই করেই তো চলছে। সমস্ত জগতে আজ যত দুঃখ ঘরে … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –বিমলার আত্মকথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  গোড়ায় কিছুই সন্দেহ করি নি, ভয় করি নি ; আমি জানতুম দেশের কাছে আত্মসমর্পন করছি। পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণে কী প্রচণ্ড উল্লাস! নিজের সর্বনাশ করাই নিজের সব চেয়ে আনন্দ এই কথা সেদিন প্রথম আবিষ্কার করেছিলুম। জানি নে, হয়তো এমনি করেই একটা অস্পষ্ট আবেগের ভিতর দিয়ে এই নেশাটা একদিন আপনিই কেটে যেত। কিন্তু সন্দীপবাবু যে থাকতে পারলেন … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!