যোগাযোগ–৪র্থ অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পুরোনো ধনী-ঘরে পুরাতন কাল যে দুর্গে বাস করে তার পাকা গাঁথুনি। অনেক দেউড়ি পার হয়ে তবে নতুন কালকে সেখানে ঢুকতে হয়। সেখানে যারা থাকে নতুন যুগে এসে পৌঁছোতে তাদের বিস্তর লেট হয়ে যায়। বিপ্রদাসের বাপ মুকুন্দলালও ধাবমান নতুন যুগকে ধরতে পারেন নি। দীর্ঘ তাঁর গৌরবর্ণ দেহ, বাবরি-কাটা চুল, বড়ো বড়ো টানা চোখে অপ্রতিহত প্রভুত্বের … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৩তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অঘ্রান মাসে বিয়ে। পঁচিশে আশ্বিন লক্ষ্মীপুজো হয়ে গেল। হঠাৎ সাতাশে আশ্বিনে তাঁবু ও নানাপ্রকার সাজসরঞ্জাম নিয়ে ঘোষাল-কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওভারসিয়র এসে উপস্থিত, সঙ্গে একদল পশ্চিমি মজুর। ব্যাপারখানা কী? শেয়াকুলিতে ঘোষালদিঘির ধারে তাঁবু গেড়ে বর ও বরযাত্রীরা কিছুদিন আগে থাকতেই সেখানে এসে উঠবেন। এ কী রকম কথা? বিপ্রদাস বললে, “তাঁরা যতজন খুশি আসুন, যতদিন খুশি থাকুন, … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৫তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিপ্রদাস নবগোপালকে ডেকে বললে, “নবু, আড়ম্বরে পাল্লা দেবার চেষ্টা— ওটা ইতরের কাজ।” নবগোপাল বললে, “চতুর্মুখ তাঁর পা ঝাড়া দিয়েই বেশি মানুষ গড়েছেন; চারটে মুখ কেবল বড়ো বড়ো কথা বলবার জন্যেই। সাড়ে পনেরো-আনা লোক যে ইতর, তাদের কাছে সম্মান রাখতে হলে ইতরের রাস্তাই ধরতে হয়।” বিপ্রদাস বললে, “তাতেও তুমি পেরে উঠবে না। তার চেয়ে সাত্ত্বিকভাবে … বিস্তারিত পড়ুন

দুই বোন– ঊর্মিমালা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নীরদ রিসার্চের যে কাজ নিয়েছিল সেটা সমাপ্ত হল। য়ুরোপের কোনো বৈজ্ঞানিক – সমাজে লেখাটা পাঠিয়ে দিলে। তারা প্রশংসা করলে, তার সঙ্গে সঙ্গে একটা স্কলারশিপ জুটল–স্থির করলে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি নেবার জন্যে সমুদ্রে পাড়ি দেবে। বিদায় নেবার সময় কোনো করুণ আলাপ হল না। কেবল এই কথাটাই বার বার করে বললে যে, “আমি চলে যাচ্ছি, এখন তোমার … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-৪র্থ অংশ

  বাবা বললেন, তুমি মোজাহারের ছেলে না এজাহারের ছেলে কও দেখি, তোমারে তো দুজনের মতো লাগে, আহা ঠিক যেন এজাহারের মতো হাসি, মোজাহারের মতো তাকানো। বাবার দুচোখ এতক্ষনে জলে ভরে উঠেছে। মায়ের চোখের পলকই যেন পড়ছে না, দেখছেন সিকান্দার আলিকে। সিকান্দার আলি এসেছেন বড়দল থেকে। বড়দল ছিল আমাদের পিতৃভূমি। সিকান্দারের গায়ে নীল আশমানি পাঞ্জাবি, চোখে … বিস্তারিত পড়ুন

বউ-ঠাকুরানীর হাট-একত্রিংশ পরিচ্ছেদ– – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

উদয়াদিত্যের নৌকা খাল অতিক্রম করিয়া নদীতে গিয়া পৌঁছিল, তখন সীতারাম নৌকা হইতে নামিয়া শহরে ফিরিয়া আসিল। আসিবার সময় যুবরাজের নিকট হইতে তাঁহার তলোয়ারটি চাহিয়া লইল। উদয়াদিত্যের তিনখানি পত্র একটি লোকের হাত দিয়া সীতারাম প্রাসাদে প্রেরণ করিয়াছিল বটে, কিন্তু সে চিঠি কয়খানি কাহারও হাতে দিতে তাহাকে গোপনে বিশেষরূপে নিষেধ করিয়াছিল। নৌকা হইতে প্রাসাদে ফিরিয়া আসিয়া সীতারাম … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-১ম অংশ

অনাথ বিশ্বাস বাই-লেন থেকে বেড়িয়ে বড় রাস্তায় পড়ে হাঁটাপথে গঙ্গা একটুখানি। আমাদের দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকেই ছেলেবেলায় লঞ্চের ভোঁ শুনেছি মনে পড়ে। মনে পড়ে মা তখন নিজের বাপের বাড়ির কথা বলত, কপোতাক্ষতীরে কাটিপাড়া ছিল সেই গ্রাম। সেখানেও নাকি ঘরে শুয়ে শোনা যেত শেষ রাতে ডাকা প্রথম লঞ্চের ভোঁ। কী আশ্চর্য এক নদীর কুল থেকে আর এক … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-২য় অংশ

আমার বাবা মুকুন্দ পালের বয়স এখন নব্বই-এর কাছাকাছি বোধহয়। আজ থেকে পঞ্চাশ বছরেরও আগে স্বাধীনতা-দেশভাগের ক’বছর বাদে এই পালমশাই তাঁর স্ত্রী কন্যা ও বাবা মাকে নিয়ে এই বাসাবাড়িতে মাথা গুঁজেছিলেন। আমি তখন মায়ের কোলে। আমার এখন মনে হয় আমি যেন অনাথ বিশ্বাস বাই-লেনেই জন্মেছি। অনাথ বিশ্বাস বাই-লেন ছাড়া আমার আর তো কোন স্মৃতি নেই। আমার … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-৩য় অংশ

  বাবা বললেন, তুই দ্যাখ ফ্ল্যাট, আমি এখানেই থেকে যাই। তুমি থেকে যাবে, আমি চলে যাব? না, না তা কেন, যে বিলই আসুক, আমি তো থাকতে পারবই যতদিন বেঁচে থাকব। একদিন রীনা বলল, বাবা কেন অন্য জায়গায় বাড়িঘরদোর করেননি? কথাটা মা’র কানে গেল। মা বলল, উপায় ছিল না। সবাই তো করেছে মা, ওদিকে গড়িয়া, বাঘা … বিস্তারিত পড়ুন

দুই বোন– নীরদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ব্যাঙ্কে-জমা টাকায় সওয়ার হয়ে এ পরিবারের সমৃদ্ধি যে সময়টাতে ছুটে চলেছে ছয় সংখ্যার অঙ্কের দিকে সেই সময়ে শর্মিলাকে ধরল দুর্বোধ কোন্-এক রোগে, ওঠবার শক্তি রইল না। এ নিয়ে কেন যে দুর্ভাবনা সে কথাটা বিবৃত করা দরকার। রাজারামবাবু ছিলেন শর্মিলার বাপ। বরিশাল অঞ্চলে এবং গঙ্গার মোহনার কাছে তাঁর অনেকগুলি মস্ত জমিদারি। তা ছাড়া জাহাজ-তৈরির ব্যবসায়ে তাঁর … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!