পুঁই মাচা-৪র্থ অংশ–বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর গল্প

দিন দুই-পরের কথা। সকালে উঠিয়া সহায়হরি উঠানে বাতাবিলেবু গাছের ফাক দিয়া যেটুকু নিতান্ত কচি রাঙা রৌদ্র আসিয়াছিল, তাহারই আতপে বসিয়া আপনমনে তামাক টানিতেছেন। বড়মেয়ে ক্ষেত্তি আসিয়া চুপি চুপি বলিল— বাবা, যাবে না? মা ঘাটে গেল… . সহায়হরি একবার বাড়ির পাশে ঘাটের পথের দিকে কী জানি কেন চাহিয়া দেখিলেন, পরে নিম্নস্বরে বলিলেন—যা শিগগির শাবলখানা নিয়ে আয় … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৭তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিয়ের দিন রাজার হুকুম, কনের বাড়ি যাবার পথে ধুমধাম একেবারেই বন্ধ। আলো জ্বলল না, বাজনা বাজল না, সঙ্গে কেবল নিজেদের পুরোহিত, আর দুইজন ভাট। পালকিতে করে নিঃশব্দে বিয়েবাড়িতে বর এল, লোকে হঠাৎ বুঝতেই পারলে না। ও দিকে মধুপুরীর তাঁবুতে আলো জ্বালিয়ে ব্যান্ড বাজিয়ে বিপরীত হৈ হৈ শব্দে বরযাত্রীর দল আহারে আমোদে প্রবৃত্ত। নবগোপাল বুঝলে এটা … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২২তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মধুসূদন যখন কলকাতায় বাস করতে এল, তখন প্রথমে সে একটি পুরোনো বাড়ি কিনেছিল, সেই চকমেলানো বাড়িটাই আজ তার অন্তঃপুর-মহল। তার পরে তারই সামনে এখনকার ফ্যাশানে একটা মস্ত নতুন মহল এরই সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে, সেইটে ওর বৈঠকখানা-বাড়ি। এই দুই মহল যদিও সংলগ্ন তবুও এরা সম্পূর্ণ আলাদা দুই জাত। বাইরের মহলে সর্বত্রই মার্বলের মেজে, তার উপরে … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-৬ষ্ঠ অংশ

  নার্সিং হোমে বাবাকে ভর্তি করে আমি সমস্ত রাত্রি একা একা বসে থাকলাম নীচে রিসেপশনে। ভগ্নিপতি অফিসের কাজে বাইরে, টেলিফোনে বোন ঝুমা কাঁদতে লাগল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। রাত যত বাড়তে লাগল, নার্সিং হোম চুপচাপ হয়ে গেল। ব্যস্ত পায়ে সিস্টারদের চলাফেরা দেখতে দেখতে ঝিমিয়ে পড়তে লাগলাম আমি একা। এখন এই এত রাত্তিরে যদি বাবার কিছু ঘটে যায়, … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদির স্রোত-সপ্তম অংশ।

    ঠাকুরদাস মিত্তির বলল, মুকুন্দদার মাথায় গোলমাল হয়ে গেছে, আমাকে আপনি বলবে কেন, ইংরিজি পড়তে বসে মুকুন্দদার হাতে চড়চাপড়ও খেয়েছি কম না, আমার বাহাত্তর হল। খবর দিল কে? আমি জিজ্ঞেস করেছি। দিল কে? একজন, তার সঙ্গে গোবরডাঙা ষ্টেশনে আলাপ, বিকেলবেলা, সে বাংলাদেশ থেকে আসছে। সিকান্দার আলি? হবে হয়তো, মনে পড়ছে না, খুব লম্বা, যাবে … বিস্তারিত পড়ুন

হারানো নদীর স্রোত-অষ্ঠম অংশ

আমারও যে তেমন মনে হচ্ছে না তা নয়। মনে হচ্ছে আরও অনেক কথা। রীনারও মনে হচ্ছিল অনেক কথা। আমার গলা জড়িয়ে রীনা সেইসব কথা বলে যাচ্ছিল। বলতে বলতে রীনা আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, আমার মনের ভিতরে কোন রোশোনারা আলো জ্বালিয়ে বসে আছে কিনা। আমি যে ইকবালভাইদের কথা জিজ্ঞেস করব সেই সুযোগ দিচ্ছিল না রীনা। শেষের দিকে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩য় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  এইবার কন্যাপক্ষের কথা। নুরনগরের চাটুজ্যেদের অবস্থা এখন ভালো নয়। ঐশ্বর্যের বাঁধ ভাঙছে। ছয়-আনি শরিকরা বিষয় ভাগ করে বেরিয়ে গেল, এখন তারা বাইরে থেকে লাঠি হাতে দশ-আনির সীমানা খাবলে বেড়াচ্ছে। তা ছাড়া রাধাকান্ত জীউর সেবায়তি অধিকারে দশে-ছয়ে যতই সূক্ষ্মভাবে ভাগ করবার চেষ্টা চলছে, ততই তার শস্য-অংশ স্থূলভাবে উকিল-মোক্তারের আঙিনায় নয়-ছয় হয়ে ছড়িয়ে পড়ল, আমলারাও বঞ্চিত … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৪র্থ অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পুরোনো ধনী-ঘরে পুরাতন কাল যে দুর্গে বাস করে তার পাকা গাঁথুনি। অনেক দেউড়ি পার হয়ে তবে নতুন কালকে সেখানে ঢুকতে হয়। সেখানে যারা থাকে নতুন যুগে এসে পৌঁছোতে তাদের বিস্তর লেট হয়ে যায়। বিপ্রদাসের বাপ মুকুন্দলালও ধাবমান নতুন যুগকে ধরতে পারেন নি। দীর্ঘ তাঁর গৌরবর্ণ দেহ, বাবরি-কাটা চুল, বড়ো বড়ো টানা চোখে অপ্রতিহত প্রভুত্বের … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৩তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অঘ্রান মাসে বিয়ে। পঁচিশে আশ্বিন লক্ষ্মীপুজো হয়ে গেল। হঠাৎ সাতাশে আশ্বিনে তাঁবু ও নানাপ্রকার সাজসরঞ্জাম নিয়ে ঘোষাল-কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ওভারসিয়র এসে উপস্থিত, সঙ্গে একদল পশ্চিমি মজুর। ব্যাপারখানা কী? শেয়াকুলিতে ঘোষালদিঘির ধারে তাঁবু গেড়ে বর ও বরযাত্রীরা কিছুদিন আগে থাকতেই সেখানে এসে উঠবেন। এ কী রকম কথা? বিপ্রদাস বললে, “তাঁরা যতজন খুশি আসুন, যতদিন খুশি থাকুন, … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৫তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিপ্রদাস নবগোপালকে ডেকে বললে, “নবু, আড়ম্বরে পাল্লা দেবার চেষ্টা— ওটা ইতরের কাজ।” নবগোপাল বললে, “চতুর্মুখ তাঁর পা ঝাড়া দিয়েই বেশি মানুষ গড়েছেন; চারটে মুখ কেবল বড়ো বড়ো কথা বলবার জন্যেই। সাড়ে পনেরো-আনা লোক যে ইতর, তাদের কাছে সম্মান রাখতে হলে ইতরের রাস্তাই ধরতে হয়।” বিপ্রদাস বললে, “তাতেও তুমি পেরে উঠবে না। তার চেয়ে সাত্ত্বিকভাবে … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!